Powered By Blogger

রবিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০১১

যুগল


নদীর বিশ্রাম নেই,সমুদ্রের আমৃত্যু সঙ্গের প্রত্যাশায়
নিরিন্তর হেঁটে চলে।মিসিসিপি-নীল-আমাজান-ফোরাতের
স্বচ্ছ জল ধরে পৌঁছে দেখেছি,অতলে---
স্বতঃস্ফুর্ত অপেক্ষায় শৈবাল আবৃত মৎস্য কন্যা
সামুদ্রিক উন্মাতালে টগবগে তোমার শরীরে 
নদীর গহনচারী আত্মার মতোন ঢুকে যাই
সাঁতরে রহস্য খুঁজি,তুলে নেই মুক্তো
মিলিত শিৎকারে থামে ক্রুদ্ধ গর্জন,জোয়ার

১৯.০২.১১
পল্লবী,ঢাকা।

শনিবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১১

অনন্ত নরক

পূণরুত্থানের পরে আমি ঈশ্বরের দিকে তাকিয়ে চরম অবজ্ঞায়
চেঁচিয়ে বলেছিলাম,'ঈশ্বর আপনি বিধাতা,মানুষ নন
আর তাই মানুষের দুঃখবোধ আপনাকে আপ্লুত করে না।'
রুষ্ট ঈশ্বর আমাকে নরকে পাঠিয়ে শান্ত হন

সেইদিন হতে আমি অনন্ত নরকে

১৮.০২.১১
পল্লবী,ঢাকা।

বুধবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১১

কামুক

''নগরবাহিরি রে ডোম্বি তোহোরি কুড়িআ।
ছোই ছোই জাহ সো বাহ্মনাড়িয়া॥ ধ্রু॥''.....কাহ্নুপাদানাম্

মুহূর্তে নেতিয়ে পড়ে হেনা নিকারীর হাতে পড়া ইলিশের
অসহায়ত্বে,উল্লাস জেগে ওঠে পৌরষে।এগারো বছরের
শিশু নয়,ছিন্ন করে মানবতা ষাটোর্ধ্ব কামুক
অসভ্য পুরুষ স্তন,নিতম্ব পরখ করে লোভের ফিতেয়
অক্ষম ঈশ্বর সাদা তর্জনী উঁচিয়ে বলেন,'খামোস,নির্বীযের দল।'

ক্রীতদাসীর যোনীতে উষ্ণ বীর্যস্খলনে কোনই দোষ নেই
শাস্ত্রীয় বিধানমতে টিকিধারী ব্রাক্ষণও অধিকারী গ্রহণে যে কোন
পতিত রমণীরত্নে।ভোগ্যপণ্যে পরিণত দাস
গর্ভোধারণোক্ষম,--প্লেটোর সুদূর প্রসারী পরিকল্পনার কল্পরাষ্ট্রে

কুকুরের কামাসার্ত লালসায় সিক্ত নারী,প্রাসাদী ফুলের শুঁচিতায়
ক্ষমা করে দেয় নতজানু পুরুষকে

১৬.০২.১১
পল্লবী,ঢাকা।


শনিবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০১১

সাম্রাজ্যবাদ

শান্তির সম্ভাবনায় বোমারু বিমান পুষ্পবৃষ্টির মতোন
ক্ল্যাস্টার উগড়ে হাই তোলে 'অস্ত্রসীমিতকরণ কর্মসূচী' সফলতা
প্রমাণে প্রস্তত রুশ বহুবোমা ধারণক্ষম এস.এস.২০ ক্ষেপণাস্ত্রগুলো
ন্যাটোও প্রস্ততি নেয় পার্শিং-২ ও ক্রুজ মিসাইল স্থাপনার
পরাক্রমশীল দ্বন্দ্বে অবিরত রুশী-ঈগলের স্নায়ুযুদ্ধে মানচিত্রে
ভস্মীভূত মস্কো এবং এক সাথেই মহা শ্মশ্মাণ ইউরোপ

অর্থহীন যুদ্ধে লাভ নেই বুঝে গেছে এ কালের দেবতারা
গ্লোবালাইজেশন বা বিশ্বায়ন বা মুক্তবাজার
যে তত্ত্বই হাজির করুক সাম্রাজ্যবাদী চরিত্র কি তাতে বদলে যায়

১৩.০২.১১
পল্লবী,ঢাকা।

সৈনিক

অতঃপর মেঠোপথ ছেড়ে  সৈনিক পৌঁছোয়  বিরান প্রান্তরে
পায়ের তলায় যব ক্ষেতের নরোম ঝুরঝুরে মাটি এবং
মাথার ওপরে নীল আকাশ কানের কাছে গুনগুন করে
সুর ভাজল মৌমাছি বাতাস মাথার ক্যাপ ছুয়ে দিল আর
বুকের ভেতর ঢুকে গেল নৈসর্গিক নিঃসঙ্গতা
কাঁটা ঝোপে রাইফেল ঠেস দিয়ে দূরবীন চোখে
অপাপবিদ্ধ শিশুর সারি সারি পুতুলের নির্লিপ্ত দৃষ্টিতে
নিশ্চল তাকিয়ে থাকা;দিগন্তের দেয়াল পেরিয়ে
অতিকায় মাকড়সা হেঁটে চলে কাঠ পিঁপড়ের বিষদৃষ্টি
এড়িয়ে র‌্যাটল স্নেক ক্রুর চোখে প্রতীক্ষায় ব্যাঙ
বা টিকটিকির পাতা ঝরা সাইপ্রেস বৃক্ষেরও প্রয়োজন
প্রস্বেদন প্রক্রিয়ার প্রাগৈতিহাসিক দেয়াল ঘড়ির
পেন্ডুলাম হেলনে যাপিত আজ মানব জীবন

পাগল ও শিশুদের সুখে ঈর্ষান্বিত মূর্খ,অবোধ সৈনিক
উন্মাদের অহংকারে  মগ্ন নৃত্যে পুরুষ ও নারী
বাহুলগ্ন পরিতৃপ্ত ঘিরে রাখে উন্মুখর আনন্দ ফোয়ারা
প্রেমিক পুরুষ নতজানু ভিখারীর দীনতায়

সত্ত্বার পাতালে বন্দী সৈনিক নিরেট বিকেলের গুটিগুটি ছায়া ফেলে,
মাড়িয়ে নির্জন রাস্তা ধরে ফিরে চলে
দু'ধারে ব্ল্যাকবেরির ঝোপ অবোধ তাকিয়ে দ্যাখেঃ

নিঃশব্দে ষ্টেশন ছাড়ে জীবনের গাড়ি

১২.০২.১১
পল্লবী,ঢাকা।

মঙ্গলবার, ৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১১

অমেরুদন্ডী প্রাণী

রবিউল মানিক

মোমের আলোয় বুনো তিতিরের ঝলসানো রোষ্ট
শেষে বামন প্রস্তত প্রেইরীর বিস্তীর্ণ আকাশ
থেকে টুপটাপ খসে পড়া তারা হাতের মুঠোয়
পোরার ইচ্ছায় বিশ্বে খাদ্যের দুর্মূল্যে ভয়াবহ ভুখাদাঙ্গা
ঘটে যাবে---হুঁশিয়ারি সংকেত জানিয়ে রাখে ফাও
(খাদ্যের মজুদ নয় মৃত্যুর প্রতীক্ষায়ই শ্রেয়)

বামনের ঈশারায় রক্ত-বৃষ্টি ঝড়ে আপেল বাগানে

পাইনের ঝরাপাতা বুকে মিসিসিপি চলে খুঁড়িয়ে,অথচ
লিংকন ঠিকই এর তীব্র স্রোতে সূর্যাস্তের সোনালী রেখায়
ভেসেছিলেন অরলিন্সের পথে নদীরা মৃতের মুখোমুখি
উজানে গোঙায় আত্মা;ক্ষুৎ পিপাসায় কাতরায়
নাবিক,কম্পাস নেই হাল ভাঙ্গা ছিন্ন পাল ওড়ে দীর্ঘশ্বাসে
পোড়া মাঠে মহোৎসবে নামে কাক চিল আর শকুন শৃগাল

অমেরুদন্ডী প্রাণীর বোধহীনে আর কতকাল


০৯.০১.১১
পল্লবী,ঢাকা।

সোমবার, ৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১১

আধাঁর

গুটি গুটি পায়ে ভোর এসে দাঁড়ায় কুয়াশাচ্ছন্ন
চেরীর বাগানে, ওক, ফার, আর পাইনের শাখা
প্রস্তত উষ্ণতা শুষে নেবার ।মৃতেরা কবরে আশ্রয় খোঁজে
কবরের প্রশস্ততা নিয়ে নির্বিকার, নির্বোধের
স্বপ্ন আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে ফিরে আসে
ক্ষুধার্তের নৌকা ভেসে চলে সময়ের টালমাটাল ঢেউয়ে
প্রাণভরে পান কর নদীর ঘোলাটে উষ্ণ জল
যে কোন মুহূর্তে পথ চেপে ধরবে পথচারীর বুক,গলা
বিলাপে কি লাভ ? তা যখন ঈশ্বরের কাছে পৌঁছুবে না,এসো
তারচে' বরণ করে নেই রাত্রি ও শয়তানের  সন্তানকে

০৭.০২.১১
পল্লবী,ঢাকা।

রবিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১১

দুষিত ভালোবাসা

ঈশ্বর অবাধ্যতার শাস্তিস্বরুপ মহাকালের ব্ল্যাকবোর্ড
থেকে সাদা তর্জনী উঁচিয়ে একে একে মুছে ফেলেন সমুদ্র
চেরির বাগান,সূর্য্য;ঠান্ডা খড়িমাটির আচঁড়ে
নিমেষেই আকেঁন কফিন সারি সারি
মৃতের শীতল অন্ধকারে ডুবে যায় উপত্যকা

সভ্যতার জরায়ু উন্মুখ ধারণে শয়তানের উষ্ণবীর্য্য
সশস্ত্র সুন্দর  আজ পরিত্যক্ত আন্ডারওয়্যার
কদর্য্যতার কাছেই নত মানবতা

রক্ত-পুঁজে ক্রমশঃ দুষিত জৈবনিক ভালোবাসা

০৬.০১.১১
পল্লবী,ঢাকা।

শনিবার, ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১১

সুউচ্চ স্বপ্ন

রবিউল মানিক

অঝোর বৃষ্টির রাতে নিজেরই ভৌতিক ছায়ায়
সহসা চমকে উঠি প্রেত অন্ধকারে তা থৈ তা থৈ
বৃষ্টির শব্দের ছন্দে মেঘ বালিকারা কানে কানে বলে,
স্বপ্নের সুউচ্চ এক বৃক্ষ আছে প্রতি পলে পলে
ডালপালা ছড়িয়ে ক্রমশঃ দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর
হয়ে পাহাড় পেরিয়ে মেঘেদের সীমানা ছাড়িয়ে
আকাশ ফুঁড়ে যা আরো ওপরে উঠতে চায়

সুমন্তের পাখি গান গায় অবিরত

মানবিক ভূ-গোলের নীচে পড়ে আছি
গড়াতে গড়াতে ক্ষয়ে গ্যাছে পৃথিবীর গোলাকার ছাঁচ
কোন একদিন নিশ্চয়ই থেমে যেতে পারে অতল গহ্বরে
প্রাণ ভরে শুষে নাও তুষারের কুসুমিত জল

বৃক্ষের শেকড় বেয়ে আমিও ক্রমশঃ উঠে যাচ্ছি
স্বপ্নের চূড়ায়,মগডালে;বৃক্ষ চায় নিসর্গের শ্যামলিমা
আকাশে রয়েছে অত্যাশ্চার্য্য শিল্পকলা
চাঁদ টুকরো টুকরো করে বৃক্ষেরা এগিয়ে যায়
চাঁদের টুকরোগুলো ফুলের মতোন ঝুলে থাকে

সবচেয়ে উঁচু ডালে উঠে বসে পাহাড় ও নদী
আকাশ ও সমুদ্রকে একসাথে কাছে পেতে চাই

০৫.০২.১১
পল্লবী,ঢাকা।

ফেলানী



রবিউল মানিক

আকাশের খসে পড়া তারা হাতের মুঠোয় ভরে
মনের অলিন্দে ঘোরা অজেয় বাসনা নিয়ে লালচে আগুন
চিরে দেখে কতটুকু উত্তাপ ছড়ালে
দূরে যাবে অন্ধকার;সবুজ মাঠের আলপথ
ধরে হেঁটে পৌঁছে যায় নূতন বিশ্বের বদ্ধ দরোজায় নয়
কাটাঁতারের বেড়ায় ঝুলে পড়ে দূরন্ত কৈশোর
দু'টি দেশ সমস্বরে কোরাস সঙ্গীত গেয়ে ওঠে
'ধিক!মানবতা,ধিক!ধিক!মানবতা....'

কাটাঁতারের প্রতিটা কাঁটা লজ্জা আর অপমানে ম্রিয়মান
ফেলানীর পায়ের তলায় লুটোপুটি খায় বিপন্ন সভ্যতা

০৪.০১.১১
পল্লবী,ঢাকা।

http://www.bangladeshnews24x7.com/literatare/poetry/7899-2011-02-05-15-21-34.html

শুক্রবার, ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১১

টুকরো কবিতা


রবিউল মানিক

আকাশ পরিভ্রমণ শেষ করে নেমে আসল একটি পাখি
চোখের তারায় রোদ্দুরের স্বপ্ন মেখে
সপ্তাকাশ পাড়ি দিয়ে ব্যর্থ মনোরথে
ফিরেছে ও ঐশ্বরিক আস্তানা অজানা থেকে গেছে

২.
মহাকালের নিথর ব্ল্যাকবোর্ড থেকে সমকালের ডাস্টার
মুছে ফেলে জৈব স্বপ্ন ঠান্ডা খড়িমাটির আঁচড়
নিমেষেই গড়ে তোলে চাঁদ সূর্য নক্ষত্র বনানী
এক দুই তিন চার অবিরল ধারাপাত

৩.
নির্বোধ নৌকার সারি দীর্ঘ রেখা টেনে ভেসে চলে
বন্দর তাকিয়ে দ্যাখেঃমুক্ত বাজারের অসম প্রতিযোগীতা
শ্রমের অনিশ্চয়তায় ক্ষুধায় কাতর শ্রমিকের আর্তনাদ
প্রমোদতরীতে বয়ে যায় শ্যাম্পেনের স্রোত

৪.
শান্তির সম্ভাবনায় বোমারু বিমান
পুষ্পবৃষ্টির মতোন 'ক্ল্যাষ্টার' উগড়ে
ক্লান্তিতে নেতিয়ে পড়ে। বিলাপে কি লাভ
তা যখন ঈশ্বরের কানে পৌঁছুবে না

০৬.০১.১১
পল্লবী,ঢাকা।
http://www.amaderprotidin.com/index.php?view=article&catid=152%3A2010-05-04-15-09-27&id=12447%3A2011-02-06-16-19-17&option=com_content&Itemid=106

ফিনিক্সিয় শুদ্ধতা

রবিউল মানিক

চৈতী রোদে পোড়ে মাঠ শুকোয় পুকুর,নদী-নালা
মাছেদের শ্বাস জাগানিয়া শংকায় কৃষক দ্যাখেঃ
রিক্ত মাঠে ঘূর্ণির বুভুক্ষা চৈতালী খরার বুকে
বৈশাখী বাউল বাতাসের দাপুটে তান্ডব আর
সিডরে বিলীন স্বপ্ন এক লহমায়

তবুও কৃষক স্বপ্ন বোনে ফিনিক্সিয় শুদ্ধতায়

০৩.০২.১১
পল্লবী,ঢাকা।