Powered By Blogger

রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০১৩

কবির হৃদয়

পরান্মুখ পৃথিবীতে যখন প্রতিনিয়ত মানুষের সুপ্ত আকাঙ্খাগুলোর মৃত্যু ঘটে
আসামান্য অশ্রুপাতে অতিশয় সরল কবিতাগুলো শব্দহীন বৃথাই অপেক্ষা করে
শব্দের পর্যাপ্ত ব্যবহারে আনন্দ ও অশ্রু সম্মুখগামী জোয়ারে বহিরাগতের মতো
নিঃশব্দে ঘুরতে থাকে এবং ব্যাপক বিশ্বের শান্ত পশ্চিমা বাতাস প্রবাহিত হতে থাকে
সমুজ্জ্বল বৃষ্টি নদীর উত্তাল স্রোতে নির্বোধ নৌকার সারিগুলো পৌঁছে দেয় উপকূলে
অবোধ সন্ন্যাসে হরিণেরা সেখানে নির্ভারতায় খেলা করে আর বন থেকে ভেসে আসে
পাখিদের ঐকতানিক সঙ্গীত

কোনদিন বুঝবে না কেউ অন্ধ কবির হৃদয় কেন কবিতাতে উদ্ভাসিত

অসময়ের গান


যে সারল্য কবিতারা দিয়েছিল;
অশ্বধাবিত পাথুরে পথে তা আজ বিলীন
নিবেদিত কবিতাগুলো শূণ্যতা থেকে ঝরে পড়ে,___
স্বপ্ন,প্রেম,ক্ষুধা,নির্জনতা,আদিগন্ত শৈশবের স্মৃতি।

যে সব গানের কথা ভুলে গিয়েছিলাম সেগুলো  
নূতন সুরের ধ্বনি-প্রতিধ্বনিতে উত্তাল বেঁজে ওঠে।
এই যে শব্দের মসৃনতা নিয়ে কবিদের এতো মাতামাতি,___
আজ সবই ভুলেছি;
আমরা কেউ-ই কারো ডাক শুনতে পাই না।
নদীর ওপার থেকে হাটুঁজল ভেঙে ফিরে আসা,
দুপুরের তাপময় নির্জনতা মেখে শব্দহীন মুখোমুখি
কিংবা আশ্বাসে আশ্বাসে বেঁচে থাকা,___
যখন তোমার দেহ কালোমাটির মতোন
সকালের মিষ্টি রোদ গায়ে মেখেছিল।

যাবার সময়ে বলেছিলে,
'আমি আবার আসবো,ততদিন প্রতীক্ষায় থেকো।'

প্রতীক্ষায় প্রতীক্ষায় দিন ক্ষয়ে গেল।
শেফালীগুচ্ছের গন্ধ মেখে দূরচক্রবাল থেকে মন হেসে ওঠে বলে---
প্রেমিক কবির মৃত্যু নেই, কখনও।

জন্মান্ধ কবির বেদনার্ত স্থবির কন্ঠের সুরে
অসময়ে রাত্রি নেমে আসে পৃথিবীতে।

শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০১৩

পলাতক পাখি

যে সব মাছেরা জাল ছিঁড়ে পালায় তারা কি আর ফিরে আসে
স্বপ্নের ভেতর এক জটিল পরাবাস্তব বোধ শুয়ে থাকে আদুরে বধূর মতো
স্বপ্ন দেখে গ্রীষ্মাবকাশের নীল আকাশ;যেখানে
ভুলে যাওয়া গানের সুরগুলো মনে পড়ে

শেষ যে চিঠিটা লেখা হয়েছিল
তার জবাব আজও এসে পৌঁছায় নি

পলাতক পাখিরা আকাশ খালি করে চলে গেছে

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০১৩

সপ্তর্ষির বিচ্ছুরিত আলো

অন্ধকার সরানোর দায় নেই কারো

যতদূর দু'চোখের দৃষ্টি,ততদূর অলৌকিক অন্ধকারে ছেয়ে আছে
জলের কিনার ঘেঁষে,_____ শব্দের ওপারে আমাদের শেষ কথাগুলো
মিশে আছে অন্তর্গত আকাশের পথে আর
সপ্তর্ষির বিচ্ছুরিত আলো বেঁকে আসে গতদিনের গোধূলি কালে

বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০১৩

কবিতার খাতা

সংকেতময় দেহের ভৌগলিক চড়াই-উৎরাই পরিমাপ করো শকুনের চোখে
অথচ বোঝার দায় নেই সূর্যমুখী ফুলের কোরকে
পরাগযুক্ত কেশরে স্বেদহীন ভালোবাসা পালিত রেখেছি

বৃষ্টিকে দিয়েছি জল,যতটুকু মুছে ফেলে স্মৃতি
তবু স্বপ্নের ভেতর থেকে উঠে আসে মুঠো মুঠো যুঁই ফুল

বসন্তের প্রথম প্রহরে তুমি হারিয়ে ফেলেছ কবিতার খাতা

স্রোতঃপ্লাবী

উচ্ছ্বসিত বর্ষার প্লাবনে
পয়ারের মাঠে জন্মান্ধ, কৃষক কবি স্বরবৃত্ত ছন্দে
অবজ্ঞাত কার উদ্দেশ্যে বিষাদময় গীতি শব্দের চৌহদ্দি মেঘান্তরে মেঘান্তরে
মেলে দ্যায়;রৌদ্র,আলো,ছায়া,মেঘ,বৃষ্টি একে একে ধ্বণি তোলে মল্ল আষাঢ়ের সুর

পৃথিবীর সমস্ত নিয়ম ভেঙে চুরে কোন প্রোষিতভর্তৃকা 'বৃষ্টিতে,ভিজবে,এসো,'
বলে ডাক দেয় লজ্জাতুর যৌবনকে

স্রোতঃপ্লাবী মন ভেসে যায় দূরচক্রাবালে

মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০১৩

কালপুরুষের পায়ের ছায়া

সমুদ্রের নীল জলে চন্দ্রাহত আষাঢ়ে পূর্ণিমা
জল কেটে,জল কেটে,___উত্তরাষাঢ়ানক্ষত্র থেকে
কৃত্তিকানক্ষত্র অঞ্চলের শেষে ঔদাসীন্যে থেমে যাবার প্রাক্কালে
অবিশ্বাসী দুই চোখ ফাটে স্বপ্নাচ্ছন্ন নিদ্রাহীনতায়

এখনো জাগিনি,ঠান্ডা ঘুমের কফিতে আরো দু'চামচ
ঘুম মেশানো হলেও কবিতার আগ্রহতিশয্যে কখনো কখনো
কুয়াশামাখা সকালে দুগ্ধফেনায়িত কফির পেয়ালা
কাঁপে কালপুরুষের পায়ের ছায়ায়

সৃষ্টি

আমার পথের দুই পাশে নক্ষত্রগুলো ছড়ানো ছিল
অতি দূরের গ্যালাক্সিদল স্থির হয়ে ছিল মাথার ওপর আর
মহাবিশ্ব সম্প্রসারণের পরিবর্তে ক্রমেই জমাট বাঁধছিল বুকের ভেতর
উন্মাদ অন্ধকারের মধ্যে অলৌকিক আকাশের শেষে পৌরাণিক বিধাতারা
তাদের দেবদূতেরা রহস্যের বেড়াজালে মুগ্ধ করছিল পূরাণাচ্ছন্ন পৃথিবী
কিন্তু তবুও ভোরের রোদে এতো বেশী সোনা,___
এতো বেশী আলো
এতো বেশী বর্ণালী রঙ

সবকিছু ছাপিয়ে খেলাঘরের মতো মনে হয়
(খেলা শেষে খেলাঘর মুখ থুবড়ে পথের বাঁকে পড়ে থাকে)

জীবন বলয়ে শূণ্য দৃশ্যপট ভরে আসে
নগ্ন নারী-পুরুষের সম্মিলিত উন্মুল মিছিলে
ওদের দেহভঙ্গিমা,রুপ-লাবণ্যে ঠিকরে পড়ছিল অনন্ত যৌবন
ওদের অঙ্গবিভঙ্গে শুধু জন্মের কথাই ঘুরে ফিরে আসছিল
আবেগ তন্মন পুলক ও শিহরণে ফুটে ওঠে
স্বেদহীন ভালোবাসা

দৃশ্যপটে  পালটে আর এক দৃশ্যপটে ফুটে ওঠেঃ
প্রবল সূর্যের নীচে দীর্ঘে সৈকতে একাকী
নিমগ্ন সূর্যের স্তবে আদিম রমণী
স্তনচূড়া রক্তিম,রহস্যময় যোনী আর দূর্বাঘাসে ঢাকা উরুসন্ধি
বোঝা যায় জন্মের প্রতীক্ষাতেই নীল জল ঘেঁষে এ প্রার্থনা

অফুরান জন্ম ছেয়ে যাবে দিনরাতের এ পৃথিবীতে

রবিবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৩

জেরুজালেম শহরে

জেরুজালেমের প্রাচীন দেয়াল ঘেঁষে আমি এক কাল থেকে
আরেককালে হাঁটছিলাম স্মৃতিশক্তিহীন প্রদর্শকের হাত ধরে;
নবীগণ যেখানে পবিত্র ইতিহাস ভাগাভাগি করে নিয়েছিল
স্বর্গারোহণ ও আত্মবিশ্বাস কিছুমাত্র ফেরানোর বিষন্ন অবতরণে
কেননা পবিত্র প্রেম এবং শান্তি ফিরে আসে শহরেই।

আমি হাঁটছিলাম একটি নীচু ঢাল বেয়ে এবং ভাবছিলামঃকিভাবে
একজন কথক পাথর সম্পর্কে আলোর বক্তব্যে দ্বিমত পোষণ করে ?
যুদ্ধের বিস্তারণ ঘটে কি সম্ভবতঃএকটি পাথর থেকেই?

আমি আমার ঘুমের মধ্যে পায়চারি করি
আমি আমার ঘুমের মধ্যেই স্থিত দৃষ্টিতে দেখি
আমি দেখি আমার পেছনে কেউ নেই
আমি দেখি আমার সামনে কেউ নেই
আর সমষ্টিবদ্ধ আলোর কিরণ আমার জন্যেই নির্ধারিত
আমি পায়চারি করি এবং ক্রমেই নির্ভার হতে থাকি
আমি উড়ে চলি আর
ার নির্ভার উড্ডয়ন শেষে আমি  অন্য এক আমি-তে রুপান্তরিত হই
যেমন শব্দেরা নবজন্ম নেয় ঘাসের মতোন ঈশা মসীহর বাণীর মত--

''যদি তুমি অবিশ্বাসী হও তবে তুমি নিরাপদ নও''

আমি পায়চারি করি যেন আমি অন্য কেউ
এবং আমার ক্ষত বাইবেলে বর্ণিত সাদা গোলাপ
এবং আমার হাত দু'টি যেন ক্রুশবিদ্ধ যীশুর উপর ভাসমান দু'টি পায়রা;
যাদের ঠোঁটে তুলে নেয়া ক্রুশবিদ্ধ যীশুর রক্তভেজা স্থানের পবিত্র মৃত্তিকা

আমি পদব্রজে হাঁটতে চাই না
আমি উড়ে উড়ে অন্য এক আমি-তে রুপান্তরিত হতে চাই
যেখানে সময় এবং স্থানের কোন অস্তিত্ব নেই
তাই প্রশ্ন করি,আমি কে?
আমি সেই আমি নই,এক উত্থিত বর্তমান

কিন্তু আমি একান্তেই ভাবি,
পবিত্র ঈস্টার ডে-র উপস্থিতিতে একাকী নবী মুহম্মদ
বিশুদ্ধ আরবী ভাষায় বলেছিলেন,'এবং তারপর কি'

তারপর কি? চেঁচিয়ে ওঠেন একজন মহিলা সৈনিক;
পূনর্বার কেন আপনি এখানে
আমি কি আপনাকে হত্যা করিনি?
আমি বলি,অবশ্যই আপনি আমাকে হত্যা করেছেন
এবং মৃত্যুর মতোন আমিও আপনাকে ভুলে গেছি।

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০১৩

ঐকতানিক

বন পার হবার আগেই
গোধূলি বেলায় এসে পড়লাম
যদিও এখনো দোয়েলের ডাক থেমে যায়নি,সূর্যের শেষ রশ্মি
পশ্চিম আকাশে মিশে গেলে
তা আবার ফিরে আসে
সমতানের ঐকতানিক গান হয়ে

ভাটা

সশব্দে মিলিত হাত-পায়ের জটিল গ্রন্থি খুলে
ক্ষত-বিক্ষত রক্তাক্ত পিঠ থেকে নেমে গেল
দীঘল আঙুল
স্ফীত রক্তের প্রপাত থামে রক্তোচ্চার গানে
হৃৎস্পন্দন,অস্থিমজ্জা ভস্ম করে
বাইরে গর্জায় অন্ধকার রাত

বুধবার, ১৭ এপ্রিল, ২০১৩

বেঁচে থাকা

বেশ অনেকদিন বেঁচেছিলাম।পৃথিবীর সাথে সাথে অন্ততঃপক্ষে চল্লিশবার
প্রদক্ষিন করেছি সূর্য্যকে।খুব একটা খারাপ,_এটা বলছি না।'বাসযোগ্য নয়',
বলে কাউকে কাউকে বড় বেশী অবেলায় চলে যেতে দেখেছি;আরেকজন যিনি
অক্লেশে সাদাকে সাদা অর্থাৎ কালোকে কালো বলার মতোন দুঃসাহস রাখতেন।
কি জঘন্য আর অনিয়মসারময় বলে দর্শনের এক অধ্যাপক তড়িঘড়ি
পাড়ি জমালেন।কাউকে কিছু না বলে মাঝরাতে ব্যর্থ বাবা মাত্র সাড়ে তিন হাত
জায়গা দখল হারানোর আশংকায় জামরুল গাছের তলায় আশ্রয় নিলেন।
স্বর্গের অসীম সুখের সৌন্দর্য্যে নিতান্তই ইচ্ছের বিরুদ্ধে ঈশ্বরের সান্নিধ্যে গেলেন
সৌম্যদর্শন যাজক।
যে হাসপাতালে আমি জন্মেছিলাম ফিনাইলের দম আটকানো ভারী বাতাসের মর্গে
শুয়ে শুয়ে প্রতীক্ষা করছি ছেনি,হাতুড়ী ও বাটালের ঐকতানিক সঙ্গীতের জন্যে।

সোমবার, ১৫ এপ্রিল, ২০১৩

ওক কাঠের কফিন

বিচূর্ণিত সময়ের মধ্যে
প্রেম ও ঘৃণার পাশাপাশি সহাবস্থানের যে বহির্মুখিতা
এবং বিবরগামী আত্ম-কেন্দ্রিকতার মূর্ত করুণায়
বিপরীতমুখী মানসিকতার এই দ্বন্দ্বে আধুনিক মানুষের নিষ্ফলতা
সৃজনশীলতার ভেতর জীবনের স্তবতার দিকে নয়,______
ছুটে চলে শূণ্যতাময় প্রান্তরে

যেখানে সাজানো আছে সারি সারি ওক কাঠের কফিন

শনিবার, ১৩ এপ্রিল, ২০১৩

পথভ্রষ্ট

অস্বচ্ছ ভূমিকাময় পৃথিবীতে মানবিক  বিপর্য্যয়কালীন সময়ে
আপেলের মিষ্টি স্বাদ মুখে নির্লজ্জ কবি শয়তানের পৃথিবীতে
দ্যুতি-মহিমায় সমুজ্জ্বল;প্রান্তহীন সময়ে শিকারী কুকুরের মতো
দ্বিধা-দ্বন্দ্বের সংশয়ে পায়ে ঠেলে লাল ও সবুজ এবং
মনোহীনতার নিগূঢ় শেকলে বাঁধা আত্মা ঋতুহীন নারীর স্তুতিতে
মেতে ওঠে।

শুক্রবার, ১২ এপ্রিল, ২০১৩

জলবতী

জলবতী মেয়ে
জলের ওপারে আবাস
ছেঁড়া জালের ফাঁস গলে জলজ স্বপ্নেরা
স্ফীত,স্তম্ভিত প্রদোষকালে কোথায় হারিয়ে যায়
জলের অতলে
নদীর অব্যবহৃত জলে
না কি আলেয়ার তীর ঘেঁষে
উচ্ছ্বাসে উচ্ছ্বাসে ভেসে চলে কচুরীর দাম ঠেলে
এক আধবার মাথা তোলে
সম্রাজ্ঞীর গর্বোদ্ধত অহংকারে

সূর্য আর কাঁশবন সমানুপাতিক দূরত্বে হৃদয় মেলে থাকে
পায়ের পাতায় জলস্পর্শ লেগে আছে,জলবতী মেয়ে
জলের গভীরতম প্রহেলিকা থেকে
দীর্ঘসূত্রীতায় দীর্ঘসূত্রীতায়
সান্ধ্য ঘাটে শব্দ ও স্রোতের মধ্যে
স্মৃতিও বিস্মৃতির অতলে ক্রমশঃ
ডুবে যাচ্ছে শতচ্ছিন্ন জাল আর
ডুব সাতাঁরের প্রাক্কালে তোমার অর্ধনগ্ন স্তন
ঢেকে দেয় নীলচে জলের বুদবুদ

২.
কতদিন মুখোমুখি বসিনি আমরা
অকাতরে ভেসে যেতে দিয়েছি বিমূর্ত সময়ের লগ্ন
মিথ্যের রুপালী আলো ফসফরাসের মতো জ্বলে ওঠে বুকে
ঢেকে দেয় সমস্ত শরীর-মন
বুকের মধ্যে যে ছবি আঁকা ছিল
তার নামও এখন মনে নেই

আপাদমস্তক জুড়ে কেবলই যাওয়ার পালা

ফিরে আসবো? সে পথ প্রতিধ্বনিহীন
আমাকে উগড়ে ফেলে
অস্তিময়ী চেতনাহীন গ্রামের মধ্য রাতের নিষ্ঠুর অবাস্তবতায়
এক রৌদ্রনভস্তল থেকে আরেক অমাবশ্যায়

যেন আমি অযোগ্য পথিক অবেলার সুমন্ত পথের

৩.
কতদিন ছুঁয়ে দেখিনি তোমাকে

ঘুমের সময় কত গল্প জমে থাকত;কখন
চোখ বন্ধ হয়ে আসত সুস্থির শ্বাস-প্রশ্বাসে কেউ-ই
টের পেতাম না পরাভূত অন্ধকারে
স্বপ্নের ভেতর উঠে এসেছিল সেই গান
যে গানের সুর ভুলে গিয়েছিলাম ঘেরাটোপের মধ্যে

বিচিত্র ভাষার কথকতা ঠেলে শুদ্ধ এক ধ্বনি
আমাদের টেনে নিয়েছিল প্রথম সাগরস্নানে
আসন্ন জোয়ারে দীর্ঘ বালুতট শূণ্য পড়ে ছিল
ঝাউবনের তলায় স্ফুট চলাচলে শেষ অস্থিরতা
ডুবে গিয়েছিল সমুদ্দুরের অতলে

আমাদের পূরাতন যে নাম সে নামে ডেকে যায় উত্তুরে বাতাস
পরিযায়ী পাখিরা ফিরবে বলে অপেক্ষায় ছিল হাওরের জলাভূমি
আর কিছু চোরা পাখি শিকারী,___তাদের আশা মিটে গিয়েছিল
গোধূলি বেলায় অনুপম মেঘে মেঘে ডানা ভাঙা পাখির মতোন
সময়েরর কেন্দ্রে উড়ে যাবার প্রাক্কালে
কে যেন জিজ্ঞেস করেছিল,'ক'টা বাজে?'

আমি বলতে পারিনি সময়ের প্রারম্ভে দাঁড়িয়ে
৪.
'জলবতী,তোমার অতীত নেই।'

নীল সমুদ্র যখন তার প্রমত্ত সঙ্গীতে আমাদের
বিমোহিত করে যায়
ঢেউয়ে ঢেউয়ে প্রতিচ্ছায়া ভাঙে
দুঃস্বপ্নে দুঃস্বপ্নে কাটে অবসিত রাতের প্রহর
আর আমি তোমার আঙুলে জলস্পর্শ করি,___
কারণ সুস্পষ্ট ভাবে জানিঃ
কখন দিগন্তে ডুবে যাবে চন্দ্রাহত আষাঢ়ে পূর্ণিমা

যে সব স্বপ্নেরা কাল ছুটে গিয়েছিল কুয়াশা মোড়ানো পথে
আজ তারা ফিরে এসেছে অনুবর্তিতারুপে
পরিদৃশ্যমান স্বপ্ন ছিল সৃষ্টিরও আগে
আকাশে নক্ষত্র ছিল না তবুও মৃত নক্ষত্রের আলো
আজো ঢুকে পড়ে বুকের ভেতর
হৃতশূণ্যতায় তুমি গেয়ে ওঠ বিরহীবিধুর গান

জলবতী,তোমার অতীত আজ শূণ্যতাময় প্রান্তরে
আদিগন্ত চেনাপথগুলো সব ঢেকে আছে ঝরাপাতাদের অবিমৃশ্য চলাচলে
রোদ কুয়াশা মাখানো সকালের পথ কেবলই ধ্বসে পড়ে পায়ের তলায়
অথবা শিশির লেগে থাকে মৃত মানুষের চোখে,____এই পথেই অনন্ত যাত্রা!
কতদিন ভেবেছি সমস্ত রাত,পুরণো পাতার শব্দে অবলীন বিবশ হয়েছিলাম
এত নিগূঢ় প্রশ্নের কৌতুহলে আমি অটুট দাঁড়িয়ে থাকি জলের কিনার ঘেঁষে
একদিন জেনে নেব,'ডুবসাতাঁরে ডুবসাতাঁরে কতদূর যেতে পারে,জলবতী?'
৬.
প্রদোষকালের অন্ধকারে
জল থেকে গাঢ়তর জলে কেন ডুবে যাও, জলবতী?
জল কি তোমার সব ব্যথা শুষে নেবে?
তবে বালির পাহাড় ভেঙে
ডুবসাঁতারে ডুবসাঁতারে কতদূর যেতে চাও?
গন্তব্যহীন,ডাঙার সজীবতা কি এতোই অবসাদগ্রস্ত?

পরান্মুখ পৃথিবী যখন কেঁপে ওঠে
আমাদের যুগল শিৎকারে।
উন্মত আকাঙ্খা ধ্বসে পড়ে মিলিত দেহের নীচে;
উচ্চকিত প্রেমের আবেশে মগ্ন রাত্রি তার
নিষ্ফলতা ছুঁড়ে দেয় দূরস্খলিত তারার দিকে আর
প্রাকৃতিক দুঃখজটাজাল নিয়ে তুমি নেমে যাও জলের গভীরে
অর্ধনগ্ন শরীর তোমার ঢেকে দেয় নীলচে জলের স্তর।

ভাঙন প্রবল তীরে আমি অটুট দাঁড়িয়ে থাকি।
৭.
জলজ গুল্মেওর মতো কেনে ভেসে যাও,জলবতী
শৈবাল কি সব ব্যাথা বোঝে
ডুবসাঁতারে ডুবসাঁতারে আর কতদূর যেতে চাও
সহজিয়া ভাষা ভুলে
যখন কৃষ্ণপক্ষের অন্ধকারে সব গ্রাম মিশে এক হয়ে যায়
পাস্তুরিত জাগতিক বোধে

মাছ ধরার বড়শি হাতে ডুবিয়ে দিয়েছি নিরিবিলি,একাকী সময়
জলের গভীরে চোখ রেখে দেখেছি জলের বুদবুদ
নিখাত পাতালছায়া ঘিরে রাখে
কেউ বোঝে না নীলচে স্রোত টেনে নেয় গাঢ়তর পাপ
তোমার চোখের জ্বলজ্বলে ঘৃণা
জলের প্রচ্ছদে অবিরাম ভেসে যায়,ভেসে যায়

কিছুই বলার নেই যদি
হঠাৎ নিজের ছায়া প্রশ্ন করে
আরুঢ় পৃথিবী সূর্যমুখী ফুল ছুঁয়েও দেখে না
প্রহরে প্রহরে তবে কেন নিজের বিরুদ্ধে এত ঘৃণা

যে স্বপ্নেরা একদিন ছুঁয়ে গিয়েছিল চোখের পাতায়
স্বপ্ন ফোঁটার প্রাক্কালে আজ সেখানে নির্ঘুম রাত কাটে
আমার শরীরে লেগে থাকে লোনা জল
যে আকাশ ভরে আছে শূণ্যের ভেতর
তার মধ্য থেকে নেমে আসে ডানাভাঙা হাঁস

রোদ উঠলেই উড়ে যাবে
৮.
নীলচে জলের স্রোত ধূয়ে নেয় কত দুঃখ পাপ
শিল্পের আবেগে তর্কাতীত সকল প্রশ্নের বৃন্তে
আমার অন্যায্য প্রেম অনিবার্য পরিণামে
জলবতীর জলজ দেহ শুষে নেয়

ভূতূড়ে সন্ধ্যায় কালো চুল খুলে দিলে জলবতীর পিঠের প্রান্তে
নেমে আসে রাত্রির জরা-জটিল অন্ধকার
জলের সহজ স্তরগুলো ভেসে যায় চনমনে রক্তের মতোন
জঠরে ফুলের ছায়া---পিঙ্গল কুসুম
পাথরে পাথরে ক্ষয়ে যাওয়া---প্রতিপদের চাঁদ অপলক সব দেখে

এইসব ছবি এঁকে যাবো আজ
ধূ ধূ সৈকতের বালিতে---নদীর বুক থেকে যতোই ডাকুক,জলবতী
আমি শুয়ে থাকব জোছনা বুকে চেঁপে
৯.
যে নদীর ধারে তোমার আবাস---সে নদীর জল অবিরাম প্রশ্নপাতে জর্জরিত করে
নিঃসীম নিঃসঙ্গ শূণ্যতায় কেন কেঁপে ওঠে রাত্রির হৃদয়?তার ফেনায়িত ঢেউয়েরা
পা ভিজিয়ে প্রশ্ন করে,আমি যদি জল থেকেই পৃথক তবে কেন জরাজটিল অরণ্যে
বৃক্ষ নই?ছায়াপথের অজস্র শূণ্যতার মধ্যে খসে পড়া নক্ষত্রের মতো এতো
মূঢ় অভিমান বুকে অপ্রাপনীয়ের অতৃপ্তিতেই কি এই ডানা গুঁজে বসে থাকা?

জলবতীকে ফুলের সাজে সাজানোর জন্যে দু'হাতে ঘুমন্ত খ্রীষ্ট গাছে ফুটে থাকা
ফুলগুলো ছিঁড়েছিলাম তা এই মাতৃসমা জলে কিভাবে ভাসিয়ে দেবো?বোধনের কাল
পার হয়ে গেলে সবুজ পাতার মতো পিচ্ছিল শরীর নিয়ে যদি জলবতী ফিরে আসে
দৃষ্টি নন্দন প্রান্তবেলায়?

১০.
জলের ঘেরাটোপের মধ্য থেকে উঠে এসেছ।শরীরে মৎস্যগন্ধ।
কবিতার ভাষা আর শব্দ,বিন্যাসিত ছন্দ,---
ভেসে যেতে দিয়েছ প্রবল পরাক্রান্ত স্রোতে
চক্রাকারে ঘুরতে ঘুরতে জোয়ারের টানে দক্ষিণ,দক্ষিণ থেকে উত্তরের দিকে।

বিহিন্দিজালের পাতায় আটকে থাকে আমাদের আত্মজৈবনিক প্রেম।

১১.
জলের নৈকট্যে আর কত,জলবতী
জলে পুড়ে গেছে তোমার শীতল দেহ,
তোমার সৌন্দর্য্যবোধ,গ্রন্থ-অবমাননা---সবই জলে।
জলের ভেতর থেকে চোরা হাতছানি,----
চিৎসাঁতারে চিৎসাঁতারে একদিন নদীর ওপারে চলে যাব।

১২.
নদীর ওপার থেকে কারা হেঁটে আসে?আমি তাদের চিনি না।
তাদের পায়ের জোড়াশব্দ মিলিয়ে যাবার পর শুকতারা উঠে আসে,ধীরপায়ে;
অধিকতর জটিল তার কেশ বিন্যাস।সার্বজনীন ভাবনার মহাকাশে
সান্দ্র সুদূরিমা।মেঘের আড়ালে ইতস্তত শস্যচ্ছবি।
সহজতর স্রোতের অনুগত নৌকা ঠেলে,জলবতী
আজো তোমার পৌঁছুতে দেরী হল।নীলচে জলের স্তরে স্তরে জোঁক ও ছত্রাক,
কন্দফুল ও শামুক,----অনুবর্তিতায় আতপ্ত নিবিড়।

আমাদের খেলা ছিল জলে।আরো দূরে জলের গভীরে স্বচ্ছতার কাচে
শীতল মুখচ্ছবির অবশেষ।চিতাভস্ম,বৈধব্য,উল্কির ছাপ ধুয়ে দেয় নদীজল।
যদি এইখানে কবিতার শেষ আর জীবনের শুরু হত,---
'তুমি কি পাগল?' বলে
জলকেলীতে মেতেছ।

আমি ভুলে যাই সমুদ্র সঙ্গীত,পূর্বজন্ম,কবিতা,দ্বিঘাত রাশিমালা।
একদিন ঠিক
জলের ঐকান্তিকতা থেকে দূরে চলে যাব।


১৩.
এক বৃষ্টির সকালে জলবতী আমাকে দেখিয়েছিল
সেই সব যুবাপুরুষ;অন্তিম সাঁতারের প্রতিযোগী
নদীর জলজ স্রোতে কচুরীপানা,ভাসছে মুখোমুখি,___
শুধু অন্যদের কথা ভেবে উঁচু আশ্রয়ের মাটি থেকে
চারিদিকে জলের প্লাবিত প্রতিরোধে
আমি হিমস্রোত কেটে এগিয়ে গেলাম

প্লাবনের জল উঠে এল ধানক্ষেতে,অন্ধকার সিঁড়ির দরজা খুলে
উঠোনের জমানো জলের বুকে নীল আলো কেঁপে ওঠে

প্লাবিত প্রান্তর,চিরদিনের স্রোতের মূর্ত ভালোবাসা
অপ্রাকৃত ভাষার অন্তরালের উন্মুখর সমাহিত উন্মোচনে
নিমগ্ন নদীর তীর,স্পন্দিত বালির ধূ ধূ আলো
সংশোধিত সকালের কত দেরী,জলবতী
চারণ খড়েরা একদিন শুনেছিলঃসমর্পিত যুগ্মধ্বনি 

১৪.
সমুদ্রের দিকে প্রবাহিত আজ সব নদীর সহজতর স্রোত,
সব সমর্পন ফেলে কোথায় দাঁড়াবে,জলবতী?
প্রবল বর্ষনে ভাঙে পাড়,ভাঙছে ভাসানের গানে।
আমাদের প্রিয় মিথ্যেগুলো মিশছে দিগন্তপাড়ে,নদীর ঢেউয়ে।
নিজেকে শালপাতায় মুড়ে অর্ঘ্য দিয়েছি,'গ্রহণ করো,দেবী।'

বলে কত রাত অব্দি দীর্ঘশ্বাস ফেলেছি।শুনেছে অন্ধ কবি ও বাউল।
একতারার করুণ সুরে শোনা যায়...।
আলোভাঙা চোখের সজল চাহনীতে বিদায়ের বিদীর্ণ প্রবাল,
তোমার ধারাল মুখ জ্বালিয়ে দিয়েছে সবটুকু সন্ধ্যাবেলা।
নিভৃত ধ্যানের তাপে বিকশিত---কোথায়,একাকী ভালোবাসা?
ঘরের ভেতর এত দীর্ঘকাল কেটে গেল,তবু অন্ধকার ভরা কররেখা,
আকাশে-মাটিতে এত রৌদ্ররশ্মি,রক্তধারা নেমে আসে মেঘ থেকে।

অতীত আসক্তি ভেঙে এতদূর চলে এসেছ,---প্রবাসী নৌকাগুলো
বালু ও পাথরে ভর্তি।আলোকিত স্বরের নৌকাগুলোর অনিঃশেষ যাত্রা।

যদি যেতে চাও তবে জলবতী,শব্দ না করেই খুলে ফেলো খিড়কি দূয়ার। 

১৫. 
ঝলসানো পাখির পালক উড়ে এসে পড়ে শরীরে,পায়ের কাছে
নদীর দু'ধারে কুঁড়ে,পাটকাঠির দেয়াল,
খড়ের ছাউনি,লাউয়ের ডগা,___
আগামী বর্ষায় ভেসে যাবে
এই স্বপ্নে ভেঙে যায় ঘুম।
অন্ধকার থেকে উঠে আসে তরলীকৃত অপমানের স্তুপ।

দূরের জানালা খোলা,আলো এসে পড়ছে,বাইরে।
তোমার দু'চোখে ঘুম লেগে আছে,ঠোঁটের দু'কোণে হাসি
আমার আহত চোখ জ্বলে ওঠে হলুদ পরাগে।
অঘোরময় আকাশে মরা মেঘ,বৃষ্টি নেই
আমরা শূণ্যের অভিবাসী।
মারী ও মড়ক ধূয়ে নেয় প্লাবনের অনিশ্চিত জলরাশি
আর আমার গলিত দেহ বারোমাসি স্রোতে ভেসে গেলে
জলহীন উপবাসে থেকো,সারাবেলা। 

১৬.
পায়ে পায়ে ধ্বংস এগিয়ে আসছে তবু ফিরে আসি
শ্মশাণের দ্বার  থেকে
জ্বলন্ত চিতায় জল ঢেলে নেমে আসি
ডোমের চিৎকার,চডালের হেতালের লাঠি
আমার পেছনে পেছনে দৌড়াতে থাকে

পালিয়ে যে যাব তেমন জায়গা নেই
'আমার দক্ষতা পালানোতে--বলেছিল জলবতী

যমুনার কালো জলে জলবতী সাঁতরায়
তার খোলা পিঠে উঠে বসে কামট,কাছিম
আঙুল হারানো হাতে আমি তুলে নেই কাঁকড়া ও কুঁচো
অন্তিম পাথর থেকে লাফ দেবার মুহূর্তে
আমার মাথার চুলে বেঁকে গিয়েছিল বাতাসে,সীমানাহীন জলে
নেমে এসেছিলাম জলবতীর মাথা কাধে নিয়ে

সেবারই পালাতে পারি নি

১৭.

দরিদ্র প্রয়াসে সকালবেলায় জেগে শুনি কাকের চিৎকার
কাল রাতে স্বপ্ন দেখেছিঃজ্বলন্ত অগ্নিকুন্ড ঘিরে প্রেতের উচ্ছ্বাস,হাতে নরমুন্ড
একশিলা পাথর;সোমত্থ পুরুষের বুকে
আমরা জেনেছি---সব সমর্পন সমুদ্রের দিকে,রিক্ত নদী শুকিয়ে মরেছে
ঘাটে ঘাটে,বালুচরে আটক নৌকার সারি
ভাঙা বৈঠা শুয়ে,শরীরে রৌদ্রের ঝলসানো তাপ

জল থেকে মুখ তোলো
নীল জলে কালের শ্যাওলা---মুছে যাবে প্রতিপূরণের অহংকারে
পিচ্ছিলতা ভরা সিঁড়িগুলো জলের গভীরে নেমেছিল
গোড়ালিতে সেই সর্বনাশ এখনও লেগে আছে
জনহীন পারে ভিক্ষার অমরবাটি হাতে দাঁড়িয়েছি
ঠিক এমনই কথা ছিল
প্রবল বর্ষণ,উপসাগরের নষ্ট জল----
যতটুকু চেয়েছিলে ডাঙায় তাড়ানো জলচর
আমার চোখের দিকে তাকাও,দেখেছঃ
লবণ ও ঘাম,অজস্র শেকড়-বাকরের আঁকিবুঁকি রেখার ভেতর পথ খোঁজে

সেখানে বৃথাই ধূলি ওড়ে

১৮.

উন্মার্গের গোধূলি,শায়িত সন্ধ্যাবেলা,---
তুমি জলে নেমেছ,রাতের বুকে কর্কট,মিথুন
জল লঙ্ঘনের খেলা ভেঙে
উলঙ্গের সেই আকর্ষণ আজো ঘিরে রেখেছে তোমাকে

জল-জলান্তরে বেড়ে উঠেছে যে লতা
তুমি তার ঘ্রাণ নাও
শৈবালের সন্তান,প্রবাল দ্বীপ,---
সমুদ্রের জলে চিরদিনের ঘূর্ণির টান দূর নক্ষত্রের উন্মীলনে অগ্নির স্ফুলিঙ্গ বহৃৎসবে মেতেছে জ্যোতির্মন্ডল শেষ চুম্বনের মতো নিঃশ্বাস ফুরোলে নক্সাহীন ধূসর পাথরে আলো ফেলে হলদেটে চাঁদ ঔপনিষদিক রাত,যুথবদ্ধ ঝাউগাছ ফিরে যায় ক্লান্ত জোনাকীরা হাঁটু মুড়ে বসে আছ সৈকতের আরুঢ় বালিতে ইহলৌকিকতা ভেঙে স্মৃতি থেকে বিস্মৃতির ভেতরে ক্রমশঃ শব্দ ও স্রোতের উর্ধ্বে উঠে যাচ্ছে দ্ব্যর্থক সময় ১৯. চোখের সামনে আদিগন্ত সমুদ্র,একাকী দাঁড়িয়েছ তীরে সৌর অক্ষর শরীরে,নগ্ন দু'টি হাতে আধভঙা সূর্যকাঁচ পদ্ম বা শালুক --- কেউ জানে নি তমসাতীরে শান্ত গৃহসারির আড়ালে নৌকা আর সাতারুর ঝাঁপে শান্ত জলরাশি শুকিয়ে রক্তাভ দু'পারের বালিয়াড়ি তোমার হাতের রেখা থেকে ঝরে পড়ে জলধারা,রক্তস্রোত সূর্যাস্তের আগে কিংবা পরে উদ্বেগ - সৈকতভূমি - চোখে চোখ থেমে আছে আর অন্য সকলের উজ্ঞাতসারে আমাত পিঠে জ্বলজ্বল করে ওঠে প্রাগৈতিহাসিক দানবের পদচ্ছাপ ২০. আয়না ও আত্মপরিচয় ভেঙে স্তম্ভিত প্রেমিক বুকফাঁটা আর্তনাদে কেঁপে উঠি ভাঙা গানের কলির মতো - সারা ঘরময় রুপান্তর শিশিরের খোঁজে,অশ্রু ও রক্তের খোঁজ়ে ঝকমকে মৌরলা মাছের যে জীবন - জীবনের দীর্ঘতম ফুটপাত জুড়ে বিবর্তনবাদের আলপনা এ এক রহস্য - বোধিবৃক্ষের তলায় ধ্যানমগ্ন বুদ্ধ গৃহে ফিরে যাবে অধীত জীবন থেকে উড়ে আসে তারবার্তা নির্বাণের শোক ও লিপিতে বহুদুপুরের নিঃসঙ্গতা অন্তর্গত বৃষ্টির ভেতর ধূলো ও পরিপক্ক বেদনা রুপান্তর,বিবর্তনবাদ - অগনন নক্ষত্রের রাত্রি অজ্ঞাত সমুদ্রতীরে প্রণয় দ্বিধার দৃশ্যে অন্তঃস্নান,চুম্বন,জল ও জননের সন্ধানে অসংখ্য যুবকেরা চাঁদ-ডোবা অন্ধকারে শুদ্ধতার তীব্র অভিলাষে পথে নেমেছে - নৈশবিজ্ঞপ্তি এবং ইস্তেহারে লেখা 'ক্ষুধা।মৃত্যু।জ্বরা।শোক।দুঃসময়।রজঃস্বলা নারী।' মন্দাক্রান্তা রাগমোচনের মাত্রাজ্ঞান ও সুরে শূন্যতা রাতের আলো জ্বালে আর অনাথ নদীর বুকে জেগে ওঠে বিভ্রান্তবোধ,বুদ্বুদ - বিচ্ছুরণের মায়াবী রেখা ২১. অতঃপর নদীভর্তি জলের ভেতর ডুবে গেলে আর আমি আকাঙ্খার তীরে ধ্যানমগ্ন হলাম,আমার মাথা থেকে ধোঁয়া নিঃশ্বাসে আগুন - চরাচর ব্যাপ্ত হল দাবদাহে অন্ধকারের ছায়ায় লোকালয় ঘুমিয়ে পড়লে অনন্ত প্রহরী তালগাহের শাখায় ভেসে ওঠে চাঁদ,মেঘ পৃথিবীর জন্ম থেকে অদ্যাবধি - মেঘ ও চাঁদের প্রণয়ে যে পৌরাণিক অভিশাপ জেগেছিল তার তলায় দাঁড়িয়ে আমাদের আদি প্রেম বলেছিলঃ সম্ভোগের কোন শেষ নেই মোহের শরীর থেকে যতটুকু স্বেদবিন্দুঘাম - তুলে এনে ঠোঁটে ধরে রেখেছিলাম;সমস্ত লেখা ও কবিতা মধ্যজলের নৌকায় ফেলে এসেছি অনিষ্টকারী অপ-দেবতার স্তব সাপ,ময়ূর ও ফল হাতে গাছের পাতায় আচ্ছাদিত ঈভের পাশাপাশি ভয়ার্ত আদম উপ্যাখ্যান ক্ষুধার্ত মানবজন্ম,ছায়াপথ,রক্তের পিপাসা,যৌনস্বাদ - জলথেকে ভেসে উঠবে তোমার জলপোড়া দেহ ধ্যানমগ্ন এই আমাকে গ্রহণ করো আমার পৌরষদীপ্ত বীর্যে নিজেকে সিঞ্চিত করো,গর্ভবতী হও স্কুলঘরের খেলার মাঠ আর পথে পথে কেঁদে উঠুক আমার সন্তানেরা

বৃহস্পতিবার, ১১ এপ্রিল, ২০১৩

ছন্দ

অবোধ সন্ন্যাসে বাস্তবতাকে এড়িয়ে  যাওয়ার প্রবণতাটুকু বুকের প্রপাতে
ঝরে ঝরে যায়।মানুষের চিরকালীন অকৃতজ্ঞতা মুখ বুঁজে সহ্য করে যাচ্ছে
মাঠের প্রাচীন বটগাছ।বটগাছ জানে স্থবিরতার অপরিমেয় দুঃখ ও যন্ত্রণা;
ব্যর্থতার বোধে জর্জরিত মানুষেরা কাঁটাহীন গোলাপ বুকের মধ্যে পুষে নিয়ে
নির্লজ্জ ঘুমিয়ে পড়ে।
কবিতা যেমন জীবনের কথকতা বলে যায়,তেমনি বিমূর্ত গান হয়ে
নিজেই নিজের সুর খুঁজে নেয়।সেই কথকতা,সেই গান,সেই সুর,_
একসাথে জীবনের ছন্দময় পথে প্রগাঢ় আনন্দে নেচে যায়।

সোমবার, ৮ এপ্রিল, ২০১৩

পরবাসী কবিতা

সূর্য্যকরোজ্জ্বল আকাশের দিকে প্রার্থনায় বিশীর্ণ আঙুলগুলো
ক্রমশঃই মাটির অন্ধকারের দিকে নেমে আসে
আমি খোলা মাঠে দাঁড়িয়ে ছিলাম শ্রাবণের অঝোর ধারার জলে
শরীরের রোমকূপ দিয়ে বৃষ্টির প্রতিটি ধারা শুষে নেব বলে
কিন্তু পৌষের হিমেল শীত আরো বেশী জেঁকে বসে আর
কাল বৈশাখীর ঝড় আমাকে উড়িয়ে নেয় দিগন্তের দিগ্বলয়ে
আমি ঝরা পাতা হয়ে ঢেকে দেই তোমার উঠোন

তোমার সমস্ত চেতনার ওপর পৃথিবী কুয়াশায় মুড়ে থাকে

আমার ভালোবাসার কথকতা লেখা ছিল স্থির জলের ওপর
অকস্মাৎ ঘূর্ণিজলে প্রবাসী নৌকার
দীর্ঘ মাস্তুলের আর্তনাদে কেঁদে ওঠে জেলেদের গ্রাম
পাঁচসালা পরিকল্পণার ট্রাক্টরে ট্রাক্টরে ছেয়ে গেল
কবিতার অকর্ষিত জমি
হাইব্রীড গদ্যের ফসলে পরিপূর্ণ যৌথ খামারগুলো;কবিতা
নিজভূমে,পরবাসী আজ

পথের মানচিত্র

আর কিছু সময় পরেই পার হয়ে যাবে গোধূলি বেলার লগ্ন
চেনা মুখগুলোও তখন
কেমন অচেনা হয়ে যাবে ঘেরাটোপের ভেতর
সন্ধিগ্ধ দুচোখে অবিশ্বাস এবং সন্দেহের ছায়ারা চকিৎ খেলা করে যায়
রৌদ্রকরোজ্জ্বল আকাশে আশ্রয় নেওয়ার কথা ছিল
অথচ আমার ঠাঁই হল পৃথিবীর অপরিমিত অন্ধকারের মধ্যে

মন,যখন আমার দিকে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয়,
'তোমার চোখের কোণে আধভাঙা রাতের টুকরোগুলো
লেগে থাকে কেন ছায়ার মতো পিছু পিছু।'

আমি আধোলীন নিরুত্তর থাকি

বছরের পর বছর চোখের শূণ্য গহ্বরে জমেছে সহমর তৃষ্ণা
একদিন আষাঢ়ের ঢলে ভেসে যাব
দূর্মর এ আকাঙ্খায়,____আমি এবং মন
বন্ধ্যা জীবনের কাছে যৌতুক চেয়েছিলাম

মৃত্যুকে পেছনে ফেলে ধ্বংসের প্রান্তরে হিরণ্ময় ভাবনাগুলো আমার
অবিরল বৃষ্টিতে রাঙিয়ে
বাড়িয়ে ধরেছিলাম আর
রাতের প্রহর শেষে
আকাশের প্রান্তে প্রান্তে
সম্ভাবনাময়ী সকাল খুঁজে নিয়েছিলাম,নিবিড়তায়

নির্জনতার যে অধিকার সংরক্ষিত ছিল
সেটা ভাগাভাগি করে নিয়েছিলাম,স্পষ্টতঃ
আধুনিক মানুষের ব্যর্থতার বোধ
যখন পথের মানচিত্রে ঠাঁই নেয়

নষ্ট

আঁস্তাকুড় থেকে উঠে আসছে গলিতপুঞ্জ শব,পিশাচের
সমস্ত শরীর ব্যোপে দগদগে ক্ষতের ওপর
সাদা সাদা ঘিনঘিনে পোকা কিলবিল করে হাঁটে
সাপের মতোন চকচকে মসৃণ,পিচ্ছিল রাজপথ কেঁপে ওঠে
অকাতর আত্মাহুতিতে পুড়তে থাকে গাড়ী
কালো ধোঁয়ায় আকাশ অন্ধকার

প্রগাঢ় ধোঁয়ার মধ্য থেকে নেমে আসে
নির্লজ্জ,চরিত্রহীন কবি(!)
মেতে ওঠে পায়ুপথ লেহনে,শবের আর
ঋতুহীন নারী  অর্ধোত্থিত শিশ্ন মুখে পুরে নেয়
ঠিক যেন ললিপপ
(চুষে চুষে খায়)
হাভাতের ক্ষুধার্তে মুখমেহনে
চন্দন চর্চিত গাল,ঠোঁট,মুখ বেয়ে নেমে অঝোর ধারায় নেমে আসে
শবের পবিত্র বীর্য
চেটে পুটে খায় যেন স্বর্গীয় অমৃত

বিরহের প্রশান্তি

অতঃপর এক জীবনের যাত্রা শেষে পেয়ে গেলাম প্রার্থিত দয়িতাকে
এবং শেষ হয়ে এল নির্ঘুম রাতের কষ্টকর প্রহরগুলো ও
মনের আকাশ জুড়ে ভেসে বেড়াতে লাগল রঙবেরঙ প্রজাপতিরা
লজ্জায় মুষড়ে পড়ল একাকীত্ব আর  ব্যর্থতার সীমাহীন জ্বালা
অবোধ সন্ন্যাসে ম্লান হয়ে গেল
সকালের সূর্য্য,চাঁদের জোছনা
কিংবা সমুদ্দুরের সফেদ ঢেউ

আহ!বিরহের প্রশান্তিতে এতো সুখ লাগে

বিভ্রান্তি

জীবন যাপন ক্রমশঃই বিভ্রান্তি ছড়িয়ে যাচ্ছে,চারিদিকে।অমোঘ মাটির মধ্যে
জ্বলজ্বলে,স্পষ্ট ফুঁটে ওঠে অভ্র,সীসা,কয়লা,লৌহের আকরিক।যাবার সময়ে
কে যেন বলল,'আজ উত্তরফাল্গুনী নক্ষত্র,হস্তার সঙ্গে চন্দ্রের মিলন হবে।
কাল যেয়ো।'শুভক্ষণ দেখে যাত্রাই উত্তম।অমৃতযোগে উন্মুল বসন্তের কালে
বনের আড়াল থেকে একটানা ডেকে গিয়েছিলাম,'কুউই।'স্তব্দ দুপুর,ফ্যাকাসে রোদ
আমাকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করেছিল শুষ্ক ফলের মতোন।

ধোঁয়া ও জ্বলন্ত আগুনের মধ্যে  স্বেদাক্ত সময়,কাক ও শকুন,নিঃশর্ত লোভের
চকচকে লালসার খানা-খন্দকের পথ পার হয়ে পরিশুদ্ধ হয়ে ফিরেছি,মানবী।
অনাবৃত বুকে আমাকে গ্রহণ করো।

শুক্রবার, ৫ এপ্রিল, ২০১৩

সমান্তরাল

আমাদের মিলন হবে না,কোনোদিন
জলে-স্থলে-অন্তরীক্ষে

পাশাপাশি সমুজ্জ্বল ক্লান্তিহীন ছুটে চলা,___
বিস্মিত,ব্যাকুল চোখে ঝরে পড়ে অমর্ত্য বাসনা
রাত শেষের জ্যোতির্মন্ডল তলে চলে বহ্ন্যুৎসব আর
অনুরাধা নক্ষত্রের উন্মীলনে খুলে ফেলি
পাথুরে মূর্তির মুখচ্ছবি
অথবা বিপথগামী শৈবালের সবুজ আস্তর

নিষেধের তরল অন্ধকারের বাঁধ ভেঙে এসো,
জীবনের প্রবল প্লাবনে মিশে যাই
নিষ্কাম প্রেমের বিচ্ছুরণে
ঈশান,নৈঋৄতে দুই হাত মেলে

প্রত্যাশাবিহীন ফেরার মুহূর্তে
আমার পথের মধ্যে ফুঁটে উঠেছিল
এপিটাফহীন সারি সারি কবর য্যানো বা
প্রার্থনারত অশীতিপর বৃদ্ধা
অসহায় বাঁশবনে বাতাসের নৈসর্গিক আক্রমনে
ঝরা পাতাদের সশস্ত্র প্রতিরোধের কালে
বেদনায় বিদীর্ণ হৃদয়ে
চোখ থেকে অনুক্ষণ ঝরে পড়েছিল ক'ফোঁটা অশ্রুর বন্যা
এবং অনন্ত বিদায় সঙ্গীতের মূর্ছনায়
আমার হৃৎপিন্ড সংকোচন ও প্রসারণের ফলে
দূর্ভাগ্য ও অপমান আমাদের বিচ্ছিন্ন করে নি

সুখত্যাগী হয়ে যাবো জীবনকে ভালোবেসে
স্বার্থক জীবন উদ্ভাবনে
সুস্থিত বিশ্বাসে জ্বলজ্বলে শব্দগুলো
সাজিয়ে তোমার জন্যে লিখে যাবো পারিজাত প্রেমের কবিতা

বুধবার, ৩ এপ্রিল, ২০১৩

ধূসর জীবনানন্দ

শূণ্যতাবোধের মধ্য থেকে, অন্ধকারের ভেতর নিমজ্জিত,স্বতন্ত্র দৃষ্টিভঙ্গির
অলৌকিক এক কবিসত্ত্বা---শত বছরের স্ব-মহিমায় ভাস্বর গোটা জীবন মননে;
আত্মমগ্নতা,নির্বিকারত্ব প্রায় আপাত নির্জনতার মধ্যে অস্থিরতার বর্ণিল
অনুষঙ্গে একাকীত্বের বেদনা ছত্রে ছত্রে,তীক্ষ্ম জীবনবোধের সমন্বিত চিন্তা,
চেতনায় ভরপুর,পরম প্রশান্তি এবং নিশ্চিতির এক আশ্রয়ভূমি নিসর্গ,---
শুধু সৌন্দর্য্যময় জগৎ নয়;সত্য উচ্চারণে স্পষ্ট থেকে স্পষ্টতর শাণিত জীবন
যে জীবন আলো জ্বালেনি এখনো।ব্যর্থতা,প্রেমের ধূসরতা উৎসারিত অপ্রাপনীয়ের
মননোজ্জ্বলতায় ও ইতিহাস সচেতনে সুস্থিত বিশ্বাসে প্রেমভাবনা নবাংকুরিত
প্রাকৃতিক অঘ্রাণ  প্রান্তর আর ঘাসের ভেতর শুয়ে থাকা হলদে পাতারা য্যানো
নিষ্প্রেম হৃদয়েরই শূণ্য অকর্ষিত ভূমি এক

অন্তহীন শূণ্যতা

রাত্রির নিঃস্বনে কিশোরীর স্পষ্টতায় কেন বারবার গুমড়ে গুমড়ে কেঁদে ওঠো

সমগ্রতা বিলিয়ে দেয়ার লগ্নে,মহালয়ার পবিত্র ক্ষণে,অজস্র মুমূর্ষা আর
শিল্পের অন্বয়ে ,শ্লথ শিথিল মুহূর্তে অন্তহীন,অন্তহীন শূণ্যতায় ভেসে যাও

সোনা রঙের শরীর থেকে শুভ্র পোষাক যখন একে একে খুলে নিই,আনমনা
প্রবল মুহূর্তে গ্রহণের অন্ধকারে ভেতর তুমি নিজেকে নিহিত ধরে রাখ
মৃতের প্রাণের মতো চেতনাহীন শীতলতায়,ক্লীবত্বের জ্বালাময় দৈন্যভারে

আপ্লুত আহ্লাদে চাঁদ বেলেল্লা জ্যোৎস্নার ভষ্মে স্বপ্নময় মসলিন ভাষার কবিতা
লেখে তোমার উঠানে,নীল স্বচ্ছতায় ডুবে থাকে চন্দ্র মল্লিকার ঝাঁড়,বাঁশবন
জেগে ওঠে ত্র্যহস্পর্শে ঝিঁ ঝিঁ,গুবড়ে পোকার দল,নিশাচর পাখিদের হাঁকডাকে
তুমি তখন জ্বলন্ত অগ্নি হাতে ফিরে যাও ঘরে বৈষয়িক মানুষের মতো

বিরহী দাঁড়ের শব্দে,আসন্ন জোয়ারে সমুদ্রের জলে নৌকাগুলো প্রবাসের পথে
অর্ধেক ডুবন্ত,আধো ঘুম,আধো জাগরণের প্রগাঢ় বিষাদের ছোঁয়ায় ছোঁয়ায়
ভেসে চলে সুদূর আলোর খোঁজে,দীর্ঘ মাস্তুলে মাস্তুলে লেখা থাকে ঝড়ের কবিতা
কল্পিত ঘুমের দেশে তুমি জেগে ওঠো কালপুরুষের পায়ের তলায় ভেঙে পড়ে
শহর,বন্দর---প্রবাসিনী রৌদ্রের আকাঙ্খা বুকে নিয়ে কেন এসেছ দরিদ্র ঘরে