Powered By Blogger

রবিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০১৪

প্রেতের বিদীর্ণ কন্ঠ

শরীর ভিজছে আষাঢ়ের প্রথম বৃষ্টির জলে
আবছা নদীর বালুচরে আমাদের মিলিত শরীরে
কম্পন;দু'জোড়া রক্ত ঠোঁটের বিদ্যুৎ
সোঁদা মাটির আঘ্রাণ নিতে নিতে
স্ফটিক সময় হাতে জেনেছি রহস্য,---শরীরের,প্রকৃতির
পাথরের ভাস্বরতা,কালের আহত কালে
স্থির সমস্ত দিনের অস্থিরতা,ইতিহাস,ভাঙা স্থাপত্য ও
ঝাড়লন্ঠনের নীচে বিস্তারলেখার চির জাগরুকবোধে

দূরাগত শব্দহীনতার ভেতর পাতালগান
আমার শরীর ভরে নক্ষত্রের ছায়া নেমে আসে
নদীর জলজ ভাষা,কবরের ফেঁপে ওঠা বালিতে আমার শুভনাম
পাটল প্রবাহে হৃদয়ের মধ্যে জাগছে যে টিলা
নীরব মুহূর্তে স্তব ও সামগানের পাশাপাশি
প্রেতের বিদীর্ণ কন্ঠে ভেঙে পড়ে প্রান্তরের বটগাছ

উত্তরাধুনিক কবিতা

আদুল মুখের ছায়া পড়ে জলে
সহজ স্রোতের অনুকূল ভাষা কখনো বোঝ নি
যে ভাষা আত্মভাষিক এবং নিরপেক্ষ
অনুভব ও বোধ প্রকাশে উন্মুখর---
তার প্রান্ত ছুঁয়ে আছি
শোকাভাসিত প্রান্তর,নৈসর্গিক জনপদে
প্রাকৃতজনের অহংবোধ সজলে থুবড়ে পড়ে
তবু স্তবিরতার ভেতর মরমীয়া মন
অশ্রুজল ভেজা মাটি থেকে উত্তরাধুনিক সুষমায়
তুলে আনছে কবিতা

অবদমিত কামনা

অবিমৃশ্য অন্ধকারের ভেতর ঢোল,করতাল,মৃদঙ্গের সমতুল হামাগুড়ি
তোমার ছায়ায় অধোমুখ রহস্যের ধ্বনিতে অংশত
অন্তহীন রাতের বিরহ
গভীর সন্দেহে হাত ছুঁতে গিয়ে আগুন,পাথর ভেঙে ভেঙে
বিষণ্ণ প্রতিভাকণা নিয়ে একদিন পূর্ণিমার রাতে
লিখেছিলাম গান্ধর্ব কবিতার পঙতিমালা

আত্মহনন বা সদুপোদেশের গান---
অতৃপ্ত শবের কোষ এবং স্নায়ু বেয়ে নেমে আসে

আর গ্রহণের অন্ধকারে জ্বলে ওঠে অবদমিত কামনা

শনিবার, ২৬ এপ্রিল, ২০১৪

তমোহীন

সারাদিন নিমগ্ন কাজের ফাঁকে
পূর্বজন্ম থেকে অঘোর চৈতন্যোদয়
যে গহ্বর জলহীন
ক্রমাবনতির অক্ষরে নামছে ঘড়া ও কলস

গ্রীষ্মের অতীতে কাঁপে ঝাউবন
ছায়া ও শেকড়ে টান
বালির উত্থানে এতো অবিশ্বাস
উন্মীলিতা রাতে দেয়ালে ঝুলছে আলো আর অন্ধকার


পুঁতে রাখা ধ্বংসবীজে এ মোহশরীর
তমোহীনতায় গলে গলে পড়ছে সৈকতে
নদী এবং সেতুর আড়ালে

বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল, ২০১৪

শিল্পকর্ম

রিরংসায় জাগ্রত দুপুরবেলা
আমি কেঁপে উঠি তোমার নিঃশ্বাসে
ত্রিকোণাকৃতির ভূমি,যুগল পাহাড়
উরুসন্ধির সুড়ং ঘেঁষে আকিঞ্চন বন

এমন নিপূণ শিল্পকর্ম

কর্মফুল

নিমগ্ন মাকড়সার জাল,ইঁদুরের বিষ্ঠা সারা ঘরে।
শেষ কবে এই ঘরে ঘুমিয়ে ছিলাম?
লোকায়ত প্রথা,শীত সকালের রোদে স্বপ্ন দিগন্তের রেখা ছুঁয়ে
উড়ে আসে সাদা হাঁস।প্রতিশ্রুতি ছিল;
প্রশ্ন ও বিচারে ভারাক্রান্ত মগজ;যে কোন দিন
আত্মউপলব্ধির ভেতর যুথবদ্ধ খামার,কমলালেবু
এবং নদী মোহনার মুখে ইলিশের ঝাঁক

শতছিদ্র জালে উঠে আসে জল।
কচুরীপানা ও রক্তক্ষয়ে এই বালুচরে
চিরদিন কালো মেঘ,ঝড়,বজ্রপাত
অনাবসান ধূলো ও গোসাপ দেহতাড়িত গাছে
কর্মফুল খুঁজছে ঐ।

আয়না

জলপোড়া দেহ ভেসে ওঠে
অপ্রাকৃত জলের ভাষায় একাকীর ভৈরব,নিভৃত স্বপ্নচারিতার গান
গেয়েছিলাম;শোন নি
জলে চাপ ছিল
শালকীর স্বচ্ছ জলের তলায় চকচকে বালি,নুড়ি ও পাথরে
লেখা অভিশাপ,---শুদ্ধতর হাজার দুয়ারি ভালোবাসা

আপন আলোয় নেমে আসি ঘর ছেড়ে,পথে
সুমন্ত আলোর মাঝখানে গহ্বর,সমস্ত পথ জুড়ে শীতের শুকনো পাতা
পথ ঘিরে শহর,দুপুরবেলা নত প্রেমিক মন্থর দিনে
ধ্যান,তপস্যা,নির্জন মন্দিরের খোলা চত্বরে আলস্য,---
হঠাৎ নিজের মুখচ্ছবি ভাসে
দুপুরের স্থিরতায় খুলে যায়
পৃথিবীর সমস্ত আয়না
চতুর্দিকে আয়না,শহর ঘিরে আয়না,আয়না ঘিরে
শহর,আমাকে ঘিরে ফেলেছে আয়না

আয়নার ঝলকানি ঘিরে ফেলেছে শহরের একমাত্র পথ

অমরত্ব

কতক্ষন শুয়ে থাকব শ্মশানে

আরো কিছু কোলাহল,আরো কিছু কান্না জমা হলে
নিরাসক্ত চিতা জ্বলে ওঠে;স্তব্ধতা ও
কোলাহলের ভেতর ফাঁপা শব্দে
নিরিবিলি বুকের পাঁজরে
অমরত্বের আনন্দ

তাকিয়ে দেখছে শ্মশান বন্ধুর দলঃ
মানুষের মৃত্যু হলে নক্ষত্রলোকের কতটা বিস্তৃতি ঘটে

শোকগ্রস্ত অশ্রু-বিসর্জন

সম্পন্ন শব্দের অগোচরে পরাবাস্তব ভাষায়
যে কবিতা লেখা হয়েছিল
প্রকৃতি ওম প্রেম
নৈসর্গিক ঝড় ও বিলীয়মান মাটি
কাছিনৌকা,পালের বিস্তার
স্তব্ধতা ও কোলাহলে

আমি লিখেছিলাম অসংখ্য শোক এবং যুদ্ধসংক্রান্ত পদাবলী
সমূহ জলের মধ্যে সহসা স্রোতের টানে
ভেসে গিয়েছিল যে সমস্ত মৃতদেহ

চোখবিহীন কোটরে মাছেদের আবাস-বারুদে পোড়া
প্রকৃত স্বপ্নের রুপে
অর্ধেক সাবান মাখা মুখচ্ছবিটির জন্যে
আদিবাসী পুরুষের শোকগ্রস্ত অশ্রু-বিসর্জন

বিনির্মাণ

গড়ে তুলবার কথা মনে হয় নি অথচ সমূহ বিসর্জনে
অস্পষ্ট দু'হাতে ফেটে যায় জলস্রোত
আত্মপতনের বীজ কিংবা বালির উত্থানে,---
স্বপ্নের চেয়েও মিথ্যে

নিষ্প্রাণ আঙুল,জল থেকে জেগে ওঠা
মৃত নাবিক ও সামুদ্রিক পাখি
আধোশ্বেত মাছ
শামুক ও কাঁকড়ার নিরন্তর ভেসে চলা

উত্তরদক্ষিণে বিস্তারিত ঢেউয়ের স্বচ্ছতায়
গত বর্ষাদিনে যে গহ্বরে স্মৃতিগুলো জমা ছিল

আজ তা কোথায় ভেসে গেছে

মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল, ২০১৪

দুঃখহীন

নদী আছে
জল নেই,নৌকা নেই
ভাঙা সেতু
দুই পারে দু’হাত ছড়িয়ে শুয়ে আছি
শ্রুতি নেই,দৃষ্টি নেই
সত্ত্বার ভেতর শুধু বিচ্ছুরণ
হীরামুখী সুঁই
চোখের তারায় লেগে ছিল ঘাসের সবুজ
হাতের চেটোয় ভেজা মাটি
দুঃখ ছিল না কোনও

ভুল পথের যাত্রা

অর্ধনমিত পতাকা,শোকসভা,---
কারা গেয়েছিল বিদায় সঙ্গীত
দুই মিনিটের নীরবতা....
তারপর যে যার গন্তব্যে

যাত্রা ছিল অনিশ্চিত
বালি,কাঁকর ও খানা খন্দকে ক্ষুধা ও তৃষ্ণাহীন
পথে উৎসব,স্পষ্টতঃ শোক
লোকালয় থেকে দূরে,আকাঙ্খার তীর ঘেঁষে
উড়ে আসে পাখি
ভুল পথের যাত্রায় ডেকে ওঠে

এই পথে নই,ঐ দিকে শ্মশান

উত্তরাধুনিকতা

নতমুখ বিকেলগুলোতে আধোভাঙা জীবদ্দশা
পোড়া তামাকের ছাই ওড়ে চতুর্দিকে
এ মোহশরীর ছুঁয়ে আষাঢ়ের জলোচ্ছ্বাস
প্লাবনসীমার মুখোমুখি করপুটে অশ্রুজল মেখে

পথে নেমেছ,মুক্তবাজার অর্থনীতি ভাসছে ঐ

উত্তরাধুনিকতা শেষাবধি আধুনিকতাকে হটিয়ে টিকে গেল

নিবেদন


ঘুম ছুঁয়ে আছো,আধভাঙা ঠোঁটে হাসি
মসলিন স্বপ্নভাষা,স্বরধ্বনির ওপারে
কৃষ্ণগ্রীব মেঘ।মেঘের ভেতর যত ধূলো

সব ঝরে পড়ছে উঠোন,বারান্দায়।
নিজের হৃৎপিন্ড ছিঁড়ে সাজিয়ে দিয়েছিলাম
রুপোর থালায়।

শূন্য থালা পড়ে আছে,হৃৎপিন্ড উধাও।

দুঃখস্নান

প্রতিদিন ম্লান সন্ধ্যাবেলায় জেনেছি নীরবতা
মৃত্যুর মুহূর্তে এই চোখ দেখেছিল
সুস্পষ্ট অতীত,পাপ,জলহীন উপবাসে
পূর্ণ দ্বাদশীর চাঁদ মগ্ন প্রাচীরের মতো
তার স্থিরতা,পান্ডুর আলো
দুঃখস্নানে আমার গলিত দেহ আঁকড়ে ধরেছে

আদমের জন্ম---পেশীবহুল সুদৃঢ় হাতে হাতুড়ী,শাবল
জেটিতে জমেছে ভালোবাসা,মরচেধরা অথচ
সর্দারের বেতের চাবুক কেমন ঝলসে ওঠে
সুপারী বাগানে কেঁপে ওঠে পানপাখি
রাঙানো দু'ঠোঁটে ধর্ম,দেহে যৌনব্যাধি
স্মৃতিতে ব্যভিচারের ক্ষত

বনের ভেতর কুশ পাতা,কর্কশ মন্দিরে মাকড়সাজাল,ঝুল
যারা প্রণাম করার জন্যে এসেছিল,ফিরে গিয়েছিল
চাঁদ তুলে ঘরে ঘরে
ঘুমের ভেতর খরতর স্রোতে
বসন্তের ছেঁড়া চটি ধুয়ে
ভেসে গেছে বাতাস ও জোয়ারের টানে

ধূনুচির অন্ধকার

ভাঙছে শিলা,কঠিন পাথর
ঠাকুর্মার পায়ের তলায় ডুবে যায় কৃষ্ণা দ্বাদশীর চাঁদ আর
এই ফাঁকে উড়ে আসে দারুন শীতের ভীরু হাঁস

ভূবনডাঙার মাঠে আমরা মুখোমুখি বসেছিলাম
নাড়ার আগুন পাশে
এতদিন শরীর ধূয়েছি রাতজলে

দিন ও রাতের আড়ালের সজলতাসুখে
পাথরপ্রতিমবুকে শিশিরের কণা মেখে
প্রহরে প্রহর জেগে করোটি ভরেছি ধূনুচির অন্ধকারে

মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল, ২০১৪

মৃত্যু-বিরোধিতা

কত হাজার কোকিলে বসন্তের সাজ পূর্ণ হয়?
স্বতঃস্ফুর্ত দুই হাতে অর্পিত আকাশ,সন্দেহতাড়িত চোখে
সূর্যাস্ত,গোধূলি বেলা।বস্তু পৃথিবীর জড়তা ও
সমতীত জ্ঞানে ঢেকে আছে দুপুরের উঠোন,কবিতা।
সংহত আনন্দে অন্ধকার মাঠ,টিলার ওপারে
তোমাদের সুদূরতম উৎসব।

একে একে পৃথিবীর সমস্ত উৎসব শেষ হয়ে যাবে,
নীল আত্মীয়তা,পরিস্রুত জ্যোৎস্না ও সন্ধ্যার নদী।
ঝড়ের বিরুদ্ধে নমনীয় গাছের সবুজ পাতা
প্রীত অনুচ্ছ্বাসে অকম্পন।ভেবে দেখ পরাবিদ্যা,
বহুমাত্রিক মানুষ-দুই অতীতচারিতার ভেতর
মূমূর্ষ শীত ও মৃত্যু-বিরোধিতা।

সোমবার, ১৪ এপ্রিল, ২০১৪

ব্যঞ্জনের বর্ণমালা

নিঃশব্দে ফিরেছি
পেছনে কম্পাস,জলপাই বন

শীতের পাখিরা ফেলে গেছে পালক,শুকনো পাতা
বসন্তের শূন্য আঙ্যুলের পাশাপাশি মৃতদের কোরাস সঙ্গীত
মৃত্যুভয় নিয়ে একাকী পথিক হেঁটে গেছি

নিমগ্ন ছুটির অবকাশে
একদিন ছুঁয়েছিল এ-মোহশরীর
মেহেদী রাঙানো দুই হাতে চিত্রার্পিত রেখাপাত
কব্জির উত্থান,বুকে মীনাঙ্কন
সংকেতময় দেহের ভাঁজে ভাঁজে এত নক্সা
যেন মায়ান,অজন্তা,ইলোরার গুহাচিত্র

প্রকৃতিপ্রত্যয়বোধে যা কিছু অব্যক্ত;
খনির গভীরে ধাতুমল,অস্বচ্ছ দেয়ালে
স্বরলুপ্তির ইশতেহার

কোথায় হারিয়ে গেল অন্ত্যমিল,ছন্দ
পয়ারের মাঠে শুধু ব্যঞ্জনের বর্ণমালা

নির্বোধ পতঙ্গ

ঘরের বিষাদে কতদিন ঘর ছেড়ে গেছি
মেরুদন্ড থেকে শ্বাস তুলে
সেই শ্বাসে জ্বালিয়েছি আগুন,পরিত্রাণের অন্ধকারে
সমর্পিত হতে হতে শেষাবধি শুধু প্রস্তাবনা

আমাদের মুখোমুখি বসে থাকা,বোঝাপড়া
অতঃপর আপাত সমঝোতায় সাময়িক আলোর ঝলক
এবং এর মাঝখানে
ফুসফুস,ধমনী ও শিরার ভেতর বাসা বাঁধে নির্বোধ পতঙ্গ

দ্বিতীয় নির্মাণ

জরাতৃষিত প্রান্তরে সেই গাছগুলো আর নেই
উপদ্রুবহীব ঝাউয়ের ছায়াময় বনে
মুছে যাবার যে হার্দ্য প্রবণতা
বেলাঞ্চলে আমি দেখেছি রৌদ্রের আভা
জলের ওপর থেকে সরে যেতে যেতে
প্রতিফলিত সৈকত এবং মেঘে

তরঙ্গসমান পাথর কুঁকড়ে গেছে
যে স্মৃতিতে ধরে রেখেছ দ্বিতীয় নির্মাণের পরিকল্পনা
তা-কি গ্রহণীয়
তা-কি সাংসারিক জড়বুদ্ধির সাশ্রয়ী দক্ষতার অরব কামনা

বাস্তুসাপ কুন্ডলি পাকায় উনোনের ভেতর,নিশ্চিত
আবাসনের ধ্বনিবহুল বসুধারা জ্বলে
জ্বলে রৌদ্র,পাতা ও সমাজমুখী মেঘ

শস্যবীজের প্রণয় ও সংবাহনের সঙ্গীত ছেড়ে
অন্ধ কবি,যেতে চাও দক্ষিণ সমুদ্রে

রবিবার, ১৩ এপ্রিল, ২০১৪

আয়না

জলপোড়া দেহ ভেসে ওঠে অপ্রাকৃত জলের ভাষায় একাকীর ভৈরব,নিভৃত স্বপ্নচারিতার গান গেয়েছিলাম;শোন নি জলে চাপ ছিল শালকীর স্বচ্ছ জলের তলায় চকচকে বালি,নুড়ি ও পাথরে লেখা অভিশাপ,---শুদ্ধতর হাজার দুয়ারি ভালোবাসা আপন আলোয় নেমে আসি ঘর ছেড়ে,পথে সুমন্ত আলোর মাঝখানে গহ্বর,সমস্ত পথ জুড়ে শীতের শুকনো পাতা পথ ঘিরে শহর,দুপুরবেলা নত প্রেমিক মন্থর দিনে ধ্যান,তপস্যা,নির্জন মন্দিরের খোলা চত্বরে আলস্য,--- হঠাৎ নিজের মুখচ্ছবি ভাসে দুপুরের স্থিরতায় খুলে যায় পৃথিবীর সমস্ত আয়না চতুর্দিকে আয়না,শহর ঘিরে আয়না,আয়না ঘিরে শহর,আমাকে ঘিরে ফেলেছে আয়না আয়নার ঝলকানি ঘিরে ফেলেছে শহরের একমাত্র পথ

শুক্রবার, ১১ এপ্রিল, ২০১৪

অবার্চীন প্রশ্ন

রোগাক্রান্ত ঈভ আর ন্যাংটো আদমের পাশাপাশি
আধপোড়া খড়,চিতার কালচে কাঠ নদীর পূরাণে ভাসে
চেনাহাতে চিরকাল ছুঁয়ে গেছি চেনামুখ
অথবা শুচিতা
অসামঞ্জস্যের অভিমানে কেঁপে ওঠা গৈরিক গোধূলি স্নেহে উচাটন

বুঝি রাত হয়ে এল

ঘন অপেক্ষার ফাঁকে শীতের শুকনো পাতা উড়ে আসে
মানুষের মৃত্যু হলে এইভাবে উড়ে আসে

এই স্মৃতি ও বিস্মৃত প্রান্তে
প্রশ্নকরা অর্থহীন
অস্থাবর সম্পত্তির নিলামকালীন কিংবা জাগতিক নিয়মাবলীর কাছে
মানুষেরা ঝুলে থাকে,ঝুলে থাকে অবার্চীন প্রশ্ন

বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল, ২০১৪

সুখের ধমনী

প্রতি পলে অপমান
ঘরের ভেতর অভিনীত নাটকের পাত্র-পাত্রী,আবহ সঙ্গীত,--
যখন জীবন ছিল বুঝতে পারি নি
শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে নিশ্চিত অবসরের গান

জীবন ও মৃত্যু-ব্যথাময়,--
ধরা থাকে হাতে অস্পষ্ট অতীতে

সুখের ধমনী;যা কিছু সুখময়
বিপরীত ঢেউ এসে ভাসিয়ে নিয়েছে

সাজানো সংসার,স্মৃতি,ব্যভিচার

বুধবার, ৯ এপ্রিল, ২০১৪

আলোকগ্রস্ত জীবন

দুধে ভেজা বুক ছুঁতে ধর্মে গড়া হাত কেঁপে ওঠে

স্বপ্নের ভেতর অগ্নিকুন্ড,বাতাস শাসন করে ঢেউ
অপনয়নের দৃষ্টি ছুঁড়ে ফেলে পাতা ও শুকনো খড়

আমার পৌরষ ছিল
পেশীবহুল সুদৃঢ় হাতে আলোকগ্রস্ত জীবন
রুপালী বলয় সূর্য,পানপাত্রে নৃত্যপর রাতগুলো
সমুদ্রবাতাস ও সৈকতে নুয়ে পড়ে
অপসর হেমন্তের দিনে মুছে গেল মেঘ ও আলোর খেলা
জলপাইবনের সবুজ অন্ধকারে জ্যামিতি ও বীজগণিতের ছায়া
আফ্রিকার বাঁশি,জেরুজালেমের পাথর,কস্তুরীমালা,---

অথচ উৎসব শেষে আমার মস্তিষ্ক থেকে বের হয়ে আসে
কয়েক হাজার মরা প্রজাপতি
চারিদিকে এত উৎসব,বিসর্জনের ঢাক

একদিন ঠিক তোমার সুমন্ত বুক থেকে
সব দুধ নিঙড়ে নেব

মঙ্গলবার, ৮ এপ্রিল, ২০১৪

যৈবনিক আস্তরণ

মূর্খ অভিমান নিয়ে
কেটে গেল দুপুরের পথ
চিতায় তুলেছি শব,পরিত্রাণ
আধভাঙা ঠোঁটে গৈরিক গোধূলি কষ বেয়ে নেমে আসে

এ এক মুহূর্ত
লবণাক্ত হৃদয়,স্ফটিকজল স্মৃতি,---
সমুদ্রের দৃঢ়তটে রেখে যায় বালি
সফেদ ফেনায় অন্ধ দুই চোখ

তারপর শুধু অন্ধকার
মুছে নেয় আমাদের শরীরের যৈবনিক আস্তরণ

রবিবার, ৬ এপ্রিল, ২০১৪

ঘূর্ণিপাক

ব্যর্থ হাতে ছুঁয়েছিলাম নারীর মনন ও ঠোঁট
জপরাভব ফেলে চলে গেল
সিঁদুর,হাতের শাঁখা
বাতাসবিহীন অন্ধ ঘর

যাত্রীদল হেঁটে আসে
পথের সমস্ত ধূলো উড়িয়ে হাজার পাতাদের সাথে
অনিশ্চিত বৈদ্যুতিক জীবন শব্দেরা টেনে নেয়

চৈত্রমাসের ধূলোর ঘূর্ণিপাকে