রবিবার, ২৯ নভেম্বর, ২০১৫
পিকাসোর অর্ধোন্মত তুলি
ফুলে ওঠা বাঁশঝোপের ভেতর অন্ধকার এবং হৃতশূন্যতায়
চাপা বাতাসের শব্দে নারীঘটিত বেদনা ;
নৈঃশব্দের মধ্য থেকে ঝরছে ধারাবাহিক শোক
খাঁড়ি মোহনার স্তব্ধ পথ ছাড়িয়ে এসেছি
পেছনের পথে ক্ষীণ যৌন-নিঃশ্বাস ও স্রোতের কোরাসধ্বনি
কী করে বিমূর্ত ছবি আঁকব নারী ও সমুদ্রের
রক্তমাংস ও জলের স্বাদে বারংবার ফিরিয়ে নিয়েছে শান্ত ও প্রসন্ন
রমণীর ধর্মের ভেতর তার গর্ভ,অবসাদ ও সম্ভোগে
উত্তাল নিতম্বরেখা,গ্রীবা ও স্তনের স্ফীতি -
পিকাসোর অর্ধোন্মত তুলি থেমে যায়
ভোরবেলা শান্ত উপকূলে মৃত নাবিকের অস্থি'র তুলিতে
সৈকতের বালিতে কে আঁকে
ভাঙা জাহাজ,মাস্তুল,পাটাতন
যারা ভেসে গিয়েছিল ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের তোড়ে
তাদের প্রচ্ছায়া আজও তিস্তার অকিঞ্চিৎকর জলে ভাসে
দেখেছিলে,সেইসব ছবি
ভুল ভালোবাসা
আত্মপতনের বীজ থেকে যে চারাগাছের জন্ম
তার শেকড় ও মূলে কেবল ক্রোধের অগ্নিশিখা
সময় এখন তোমাদের হাতে হাতে লুকোচুরি খেলে আর
আঙুলের ফাঁক গলে গড়িয়ে পড়ছে মেয়েছেলেদের উলঙ্গ শরীর
শুধু শরীরটুকু,- প্রস্তুত সান্ধ্যপথে এক দুই তিন চার ......
ক্রমেই মিছিল ভারী হয়ে আসে
দীর্ঘ লাইন,- শুঁড়িখানায়,বেশ্যাপাড়ার বিপথে যুবকের মুখখানি মনে পড়েঃ
আজও কিসের প্রতীক্ষা
পাতার পোষাকপড়া প্রেমিকাকে ওরা চুরি করে নিয়েছিল
প্রদোষের অন্ধকার ও ছিন্ন মুহূর্তে
একদিন সমস্বরে গেয়ে ওঠেছিলঃ এ তো ভুল প্রেম,ভুল ভালোবাসা
মৃত্যুগীত
বোধবুদ্ধিহীন প্রখর রৌদ্রের নীচে দাঁড়িয়ে থাকবে - ক্রমাগত রৌদ্রের ছায়ায় মিশে থাকতে থাকতে আমিও বুঝেছি আলোছায়াময় পথ;যা ছিল মূলতঃ মেঘে ঢাকা,আণব ধোঁয়ায় পূর্ণ,কাঁটাতার এবং চোরাগর্ত - উন্মার্গের গোধূলি অথবা অপ্রাকৃত ধূলোর স্বরুপে ঢেকে যাবে? উত্থান ও পতনের সংকেতধ্বনি নক্ষত্রহীন জনপথে প্রতিভাত তবু প্রতিটি নিঃশ্বাসে দেখ যুথবদ্ধ ইউক্যালিপটাসের বন সপ্তর্ষিমন্ডল ঘিরে রাখে।
পাথুরে আহ্লাদে অসংখ্য করবীফুল ঝরে পড়ে - উদ্ভিদপ্রাণ,লোকায়তিক শ্লোক - অর্থহীন,অর্থহীন মনে হয় চরণাশ্রিত সঙ্গীত - বিভেদের মর্মজ্বালা - বিশুদ্ধ বীজের থেকে বিরুদ্ধগামী বৃক্ষের ছালে সনাতনী কাঠের ধর্ম,শবাচ্ছাদান। হিত ও অহিতে টলে ওঠে পরাশ্রিত ধর্ম আর ঐ দিকে যজ্ঞোপবীত ছিঁড়ে সম-সাময়িক অন্ধত্ব ও ভুল সমাজ বিজ্ঞানে তত্ত্ব এবং অপভাষার কূট-কাচালি ।
এখন কেবল ধ্বংসচূড়া থেকে ভেসে আসে ঝলসানো মৃত্যুগীত।
শনিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০১৫
কাঙ্খিত প্রেমিক
অধিকারহীন নূতন ভাষার গান,সম্পন্ন কবিতা এবং হলুদ সর্ষের ক্ষেত - আমাদের পারস্পরিক বোঝাপড়ার মাঝখানে হেমন্তকালীন সাদা শাড়ী,সাদা হাত আঁচড়ায় মধুমতির নীলচে জল।করুণাহত নদীর তীরে প্রকৃত স্বপ্নের রুপ - বাদাম,মাসকলাইয়ের ক্ষেত ।অন্তহীন আকাশে নীরব সূর্য। উচ্ছ্বসিত বিকেল ও সন্ধ্যারাত্রে ঠোঁটের কোণায় ঘনীভূত হাসি। নৈসর্গিক নিস্তব্ধতার ভেতর অসম্ভব শীতের ক্রমবর্ধিষ্ণু লম্বছায়া,--- যারা অন্ধকারে জল ও জলজ শ্যাওলার প্রেমে ছুটে এসেছিল নৈঃশব্দিক রাত্রি ভেদ করে ; নিমগ্ন ভালোবাসায় একেকটি নামের বিপক্ষে অগণন ঢেউ তাদের শরীর ছুঁয়েছিল।অসংখ্য জলজ শ্যাওলার শোক প্রতিটি বিরহ ঘিরে রেখেছিল।
এইভাবে প্রতিদিন নূতন নূতন প্রেম ও বিরহে শান্ত নদীর দু'কূল ভরে ওঠে। জল ও জলের কলহাস্যে আমার মেয়েও একদিন খুঁজে নেবে তার কাঙ্খিত প্রেমিক।
শুক্রবার, ২৭ নভেম্বর, ২০১৫
বর্ষার পূরাণ
আমার স্ত্রী আর মেয়ে জানেঃ
আগামী বর্ষায় ওপারের বাঁধ কেটে ফেলা হবে
এই গ্রাম,গ্রামান্তের ঘর - ঘরের জানালা - নীল পর্দা - আধখোলা চিঠি
নিখুঁত জ্যামিতি,বীজগণিতের সুতো,
নৌকা,পাটাতনে আধাঁর বনের ছায়া
সমূহ সর্বনাশের আগে জলে ডুবে যাবে
ওই নদীতীরে দেখো,সেতুর ওপর আজ মিছিল নেমেছে
অনাহারী এবং বানভাসী মানুষের
এই পতন-উন্মুখ সেতু - বহু রুঢ় অনুশাসনের
প্রযুক্তি বিজ্ঞান আর বর্ষার পূরাণে মুখোমুখি
আমি প্রস্তুত - সমস্ত গ্রাম ডুবে যাবার আগেই
নদী পার হয়ে যাব
শুক্রবার, ২০ নভেম্বর, ২০১৫
মূকাভিনয়
(আমার মেয়ে নির্ঝর কে)
আমার মেয়ের মুখ মাঝরাতে খসে পড়ে।
কেঁপে ওঠে ঘরের দেয়াল।আমি জেগে উঠি।
ঘরের দরোজা খুলে দেখিঃ
ফুলে ওঠা সামুদ্রিক ঢেউয়ের ফণায় পদ্মপাতার শুঁচিতা;আমার মেয়ে
এবং তার ছায়া - সমস্ত বিছানাজুড়ে ফোঁটা ফোঁটা কুয়াশা জমেছে আর
নৈসর্গিক আল্পনায় আঁকা আমার মেয়ের সুগত দু'চোখে
দশ দিগন্তের মেঘ বৃষ্টি হয়ে আছড়ে পড়ছে
আমি নিমগ্ন তাকিয়ে দেখি
বদ্ধ ঘরে অভিনীত মেয়ের মূকাভিনয়
এতে সদস্যতা:
পোস্টগুলি (Atom)