Powered By Blogger

বুধবার, ৩১ জুলাই, ২০১৩

শান্ত অগ্নি

জলের ভাবানুষঙ্গে
দ্বাপর যুগের স্রোতে ভেসে রয়েছি;মুছতে পারো
সুলেখ্য কবিতা,চান্দ্রগীতি।

অবিন্যস্ত সিঁথি,অশ্বমেধ যজ্ঞ,
মিলনবেলায় আমার অস্পষ্ট বাকরীতি ,---
উপক্রমণিকা হাতে ছুটে পালিয়েছ।

উত্তর রৈখিক শব্দাবলী---চর্যাপদের বাগান,
নেবে?
আমি বোঝাতেই পারি না ভাষার সন্দর্শন,
ছন্দবিভাগ,খান্ডবদাহ।শান্ত অগ্নি।

মঙ্গলবার, ৩০ জুলাই, ২০১৩

শেষ বিকেলের বোঝাপড়া

ধ্বংশের প্রতিমা বানিয়েছি---পূজো দেবো আজ রাতে।তারপর।
বিসর্জনের বিষাদ।অর্থহীন শব্দে ভরে যাবে সাদা পাতা।

ঠোঁট থেকে গড়িয়ে পড়ছে লুব্ধ লালা,
আসমুদ্র পাপেভরা লবণজল শরীর---চিতা জ্বলে বুকের ভেতর।
সকালের শিশিরজলে এ পাপ মুছে যাবে?
চারিদিকে মূঢ় ধ্বংশ আর বিনাশ;ফসফরাসে এতো আলো?

আমাদের সব সত্য অবলীন শেষ বিকেলের বোঝাপড়ার ভেতর।

অডিসি

কোথায় ইথাকা?
কোথায় অডিসিউস?
অসম্পূর্ণ আয়োজন।ছায়া বিবর্জিত ট্রোজান,গোধূলি রঙে সজ্জিত ট্রয়নগরী।
স্বদেশ প্রত্যাবর্ত্নে পথভ্রষ্ট।টেলেগোনাসের তরবারী
রক্তে লাল।হায়!ইথাকা নগরী ভেসে যায়।

স্বপ্ন বিসর্জন

স্বপ্নের ভেতর এলোকেশী!

আমার অস্পষ্ট হাতে রুপোঝরা বলয়িত সূর্য
কাদামাখা পায়ের তলায় আঁকা বাঁকা নীলচে জলের স্রোত
একবীজপত্রী উদ্ভিদ,ক্ষেতজাঙাল----গোলাপের গন্ধ নিতে ইচ্ছে করে
তোমাদের ফুলের বাগানে বেড়া কই

আমাদের স্বপ্নেরা কখন মৃত হয়ে যায়
শীতল দৃষ্টির নির্নিমেষ কোন অনিবার্যতা সুস্পষ্ট
আনত জলের বিভাজনে আমি উঠে আসব অর্ধসম্পূর্ণ স্নান থেকে
আমাদের বিস্ময়গুলো যখন স্থির হয়ে যায়,---
হিজলের ছায়ায়,বিরহ সঙ্গীতের সুরে নৌকা ভাসাব;সমূহ স্বপ্ন বিসর্জনে

শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০১৩

খেলার পুতুল

সুগত দু'চোখে নিমগ্নতা।সমন্বয়ী ব্রতে অরব আনন্দ।কোথা থেকে আসে এতো আলো?

অন্ধকার ঘরের ভেতর আলোকিত জানালা।গোলাপভরা ফুলদানী।দুঃখময় সুরে
অভিন্ন ভালোবাসার প্রুতিশ্রুত ঋণ---ভুলে যাবে।আমাদের বিচিত্রিত কররেখা,
মুখের শীতল রেখা,পরিপাটি স্বপ্ন---ঝোড়ো বাতাসের স্মৃতি উন্মাদনায় আহত
আমাদের অশান্ত সংসার ছুঁয়ে যায় প্রথম বৃষ্টির জল,ভাঙা-চোরা সম্পর্কের সাঁকো।
ঐকান্তিক শরীরের প্রেমে দ্বিধার দেয়াল,অশ্লেষা সন্ধ্যায় আকাশের মুখোমুখি
যে বিশাল চন্দ্রাতপ বানিয়েছি;তা আজ বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে।শনির দিকে উড়ে গেছে
স্বস্তিময় সুখ।অলৌকিক অন্ধকারে এতো আয়োজন?আমাদের মাঝখানে দাঁড়িয়েছে
উদাসীন অক্ষমালা।পারস্পর্য্যহীন নদীর দু'পাড়।আমার অন্তিম অশ্রুপাত
ঝরে পড়ে অগস্ত্যের পথে।আততায়ীর উল্লাসে টাঙিহীন জেগে দেখিঃমাঙ্গলিক সূত্রে
ছেয়ে আছে চরাঞ্চল।দখলের মহোৎসবে কাটা পড়ে গেছে শরবন।

বাস্তবতার পরাজয়ের রীতি,প্রতিচ্ছায়া ভেঙে ভেঙে খেলার পুতুল হব?

শুক্রবার, ২৬ জুলাই, ২০১৩

প্রতিষ্ঠ প্রেম

উন্মীলিতা রাত,অনিঃশেষ ভালোবাসা,আধখোলা বুক,----
কূটিলতার পৃথিবী অবহিত আমার সামনে।পপি গাছের অশুভ ফুলে
ছেয়ে আছে আদিগন্ত ক্ষেত।অসহনীয় সৌন্দর্য্যে।পাতায় পাতায়
সর্বনাশের উচ্ছ্বাস।
অমিত বিশ্বাসে রৌদ্র নেমেছিল।'বিকেলে আবার দেখা হবে'
বলে যে বালিকা নদীর ওপা্রে চলে গিয়েছিল শুভ্র সমারোহে
তার জটিল পায়ের ছাপ আজো ঢেকে যায় নি,বালিতে।

আদিম রক্তগোলাপ অবিরোধী ঘনতায় বিস্তৃত,অনন্য জাগরণে
দিগন্ত প্লাবিত প্রত্যাশার প্রুতিশ্রুত সোপান,প্রতিষ্ঠ প্রেম।

অভিযোজন

মৃত্যুর অন্তর্মুখীনতার মধ্যে সর্ষে ফুলের এ মাঠ
একদিন মুছে যাবে আমাদের বিস্মৃত স্মৃতিতে
পরিপক্ক ডুমুর গাছের পাতা এবং ফল
ঝরে যায়,ঝরে যায়----সবকিছুই অনুচ্চারিত

একই রকম গ্রীষ্মকাল
স্বরলুপ্তির ঘোষণা,----সম্ভবতঃ আমরা এগিয়ে যাচ্ছি
সার্বজনীন ভাষার ব্যকরণে 
নিরাসক্ত,ছায়ালীন,স্বাভাবিক স্থিতি

সহজাত অভিযোজ্যতায় অযোগ্যতা কিংবা প্রত্যাশার প্লাবিত মন্দিরে
দেখেছি পুরোহিতের তীক্ষ্ম তিরস্কারে আর্ত অন্ধকার

বুধবার, ২৪ জুলাই, ২০১৩

বিষাদের চান্দ্রগীতি



জলস্রোতে খুঁজে নেবে গোত্র পরিচয়?
উপদ্রবহীন জামরুল বাগানের গোপণ প্রণয়ে মেরুদূরাতীত?
ভূতবিদ্যা ও জ্যোতিষশাস্ত্র থেকে যে জ্ঞান জেগেছে
অমীমাংসীত আধূনিকতা কবিতার আঁচল জড়িয়ে
উত্তর রৈখিক খাটে শুয়ে আছে দ্বিধাহীন মশার জ্বালায়।

নিরন্তর প্রস্তুতি---তাপিত ঘোষণায় নিদ্রাবিষ্ট।
কেন্দ্রাভিমূখী ক্ষমতা,স্মৃতিহীন প্রতিটি বস্তুর অবস্থিতি,
সংস্কারবিহীন নির্ভরতা---অনতিক্রমণীয়, অনুবর্তিত নদী,
সামাজিক মুদ্রাদোষহীন পাপ দুচোখে---শাসিত সমর্পণে
বেজে উঠেছে সাফল্য,প্রতিশ্রুতিময়।

নান্দনিক কবিতার ক্ষেতে বুনে দিয়েছি যে সব সুমন্ত গানের কলি,---
ঝরেছিল কন্ঠ থেকে।
প্রতিদিনের পূরণো সুর বেজে ওঠে সন্ধ্যেবেলা,
তমাল বনের অন্ধকারে কোন অন্ধ প্রেমিক গাইছে
বিষাদের চান্দ্রগীতি।

পরিণতিহীন শিমুল তুলো

পরিণতিহীন শিমুল তুলোর বীজ বাতাসে উড়ছে।
তুমি কোনদিকের জানালা খুলে রেখেছো?পূবের?
পশ্চিমের জানালায় আমাদের নাম লেখা ছিল।
ঝোড়ো বাতাসে তা নিশ্চয়ই মুছে গেছে
অনেকান্ত জীবনের জাহাজের যাত্রী তালিকায় কিংবা
হোটেলের অভ্যাগত তালিকায় আজ আর কোন নাম নেই।

সে দিনগুলোর কথা মনে পড়ে,
যখন নরম চাহনীতে জলদ মেঘের দিকে তাকিয়ে ছিলাম
গোটা পৃথিবী বৃষ্টির জন্যে অপেক্ষায় ছিল।
বৃষ্টির শীতল ধারা পৃথিবীকে শান্ত করে রেখেছিল
আর তোমার শরীর ধীরে ধীরে সমুদ্রের উষ্ণতায় উঠে যেত।

মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই, ২০১৩

চিতার আগুন

অরক্তিম একটি সবুজ পাতা ঝরে গিয়েছিল।গভীরতম অন্ধকারের মধ্যে।
অলোর ভেতর তার বেদনা এখনো টের পাই।
ডানায় অসুখ ছিল।পাখিদের ঘরে ফেরার সময়
নিবিড় অশ্বথগাছ প্রশ্ন তোলে।
বিতত শাপলা,দিশাহারা সরোবর,--নিরাসক্ত চিতা জ্বলে ওঠে প্রত্যন্ত শ্মশ্মাণে।

শ্মশ্মাণ বন্ধুর ম্লান চোখে বিলাপের ছাপ।

হায় রে অকাল বিধবার সুমন্ত শরীর!

কতক্ষনে নিভে যাবে চিতার আগুন।

পোষ্টকোড

প্রণত বিশ্বাস আমাদের ঘিরে রেখেছিল।অরুন্তুদ ভাগ্য বিপর্য্যয়ে
যখন আমরা সর্বশান্ত হলাম;কেউই কারো দিকে তাকাই নি।
গন্ধবহ এলাচ অথবা লৌহমরিচার মতো জলের রঙ,আরো দূরে
লাল ইটের সমৃদ্ধ বাড়ি,নির্ভুল ঠিকানা।

কিন্তু,পোষ্টকোড জানা নাই।

সোমবার, ২২ জুলাই, ২০১৩

শুদ্ধ

আমাদের দেখা হয়েছিল পাহাড়ী শহরে।অপর্যাপ্ত দিন,শান্ত বিকেল,পাথুরে নদী,--
আমরা দেখেছিলাম অগুনতি মানুষের শোভাযাত্রা।দূরে অগ্নি ও সন্ধ্যার মেঘে
ঔপনিষদিক তপোবন।প্রাচী এবং প্রতীচীর দ্ব্যর্থক মিলনে শাপগ্রস্ত রাত।
চোখের সামনে থেকে সরে যায় আদিগন্ত চা বাগান।আমরা কি পূর্বাপর ফিরে যাব?

এতোদিনে নিশ্চয় জেনেছ আত্মনিষ্পেষণে সুখ নেই।এমন অঢেল দিন ছিল
যখন উপগ্রহবাহিত জল,দুঃখ,অনাসক্ত ধূলো ঘিরে রেখেছিল বিমূর্ত প্রকাশে।
গোধূলিবেলায় শাণিত বিষাদ,বাতাসে ভাসছে আমাদের প্রতিচ্ছায়া।দিগন্তের পারে
নিরভিমানী নৌকার ছবি।এতো দূরে এসে চলে যাবে বরঞ্চ পালটে দাও সূর্য্যনাম।
তোমার অমৃত চোখে সূর্য আঁকা।কি করে এড়াবে মধ্যদুপুরের তাত?জ্বলে গেছে সব,
যেটুকু জ্বলার ছিল।চরাচর জুড়ে লিলুয়া বাতাসে ছাই ওড়ে শুধু।

ঘরে ফিরে ছুঁয়ে নিও আগুন ও লোহা।

রবিবার, ২১ জুলাই, ২০১৩

নোনা

প্রসন্ন উঠোনে কস্তুরীমালার ফুল।মেঘের ভিয়ানে
সেঁকোবিষ হাতে সমূহ বৃষ্টির জলে নেমেছি। যে প্রেম
গ্রহণের যোগ্য সেটা বর্জন করেছি।পূর্ব সাগরের দিকে
ভেসে যেতে যেতে অর্পিত আকাশ,স্থির সূর্য,---
আমি এই লোকালয় ছেড়ে চলে যাব,স্পন্দিত অদেখা
অন্য কোন জনপদে।

বিস্তৃত দুপুরবেলা,পাহাড় ও অরণ্যের সমান্তরাল যে
স্বগত মন্ত্রোচ্চারণে উন্মুখর নারী তার নিজের ঘরকে
অস্বীকার করেছিল সচকিত প্রতিবাদে;সম্পন্ন জানালা বন্ধ রেখে,
শাশ্বত চিত্রের অবকাশে ভাস পাখি উড়ে গিয়েছিল।মনে হল,
সমস্ত পথের ছবি সামাজিক সহজতর স্রোতের দিকে।

পাপে মগ্ন শরীর।সমুদ্র তীর।দুর্গলিত পায়ে এসে চুমু খায়
লবণাক্ত জল।কি নির্মোহে ভেসে যাই কবিতার দিকে।

শনিবার, ২০ জুলাই, ২০১৩

প্রবহ শক্তি

ধূলোওড়া দুপুরের ঘনশ্বাস,বিষুব শূণ্যতা।খড়ের গাঁদায় শুতে দিয়েছ আমাকে?
ফলিত জ্যোতিষবিদ্যা শিখে নিয়েছ?ভূ-তত্ত্ব?জরীপের জটিল নিয়ম?বারান্দার কোণে
খ্রীষ্টগাছ।কোনো ফুল নেই।সমূহ আশায় জল ঢালি।যে বীজ অংকুর থেকে চারাগাছে
পরিণত হবে;আমি তাকে নিভৃত আশ্বাস দিই।বাণিজ্যবঞ্চিত আমাদের এ ভূমিতে
প্রত্যেকটি কবিতা লেখার আগে আমি জেনে নিইঃশব্দ এবং তার পরিভাষা।'পাপপূণ্য'
এইসব আপেক্ষিক শব্দাবলী প্রতিপন্ন।নদীর ওপারে কারা থাকে।সংকেতময় এ দেহ,-
মনে আছে আমার চোখের সান্দ্র ভাষা বুঝে নিয়েছিলে আষাঢ়ে মেঘের তলে প্রবহ শক্তিতে।

শুক্রবার, ১৯ জুলাই, ২০১৩

আধিপত্য

বর্ষাফলকে গেঁথেছ মানুষের হাড়
ভাবানুষঙ্গে করোটি,কোটিকল্প চোখে লালসার ছায়া
প্রত্যেকটি ধর্ষণের আগে জেনে নাও
জলধারা,রক্তস্রোত

মাতৃগর্ভে অনিষিক্ত ভ্রুণ জেগে ওঠে
রক্তের কল্লোলে
আত্মরতিহীন মৃত মুখে অশ্রু্র নিগূঢ় সমারোহ
আসুরিক সভ্যতায় মানুষের আধিপত্য তবে কি পতনোন্মুখ

বৃহস্পতিবার, ১৮ জুলাই, ২০১৩

শব্দের বিনির্মাণ

কিশোরীর এক চোখে শান্ত ঋতু অন্য আর এক চোখে নক্ষত্রের ছায়া
সন্দেহতাড়িত দুপুরের পথ,অন্নপূর্ণা সাজ,-মুখোমুখী কতদিন বসিনি আমরা
ফুল আর শবাচ্ছাদনে জীবন্মৃতের জন্যে নানা আয়োজন
তারবার্তা,দলিল,শেয়ার,শষ্যবীজ,ক্ষেত্রজ জাহাজ
আজ যা কিছু আমার চারপাশে
ঘূর্ণিফল গাছ,শরৎকালীন রোদ্দুর,অগ্নিময় শোক,---
প্রকৃত স্বপ্নের রুপে ফিরে যায়
অন্ধকার সিঁড়ি ফুঁসে ওঠে

আমি তুলোট কাগজে লিখে যাই জীবনের গল্প
কিশোরীর সারল্য,শব্দের বিনির্মাণে প্রথম প্রণয়ে
নেমে আসে আনন্দের শ্বেতপুষ্পক বৃষ্টির ধারা

বিষয়হীন প্রলাপ

বৃষ্টি দুপুরের মধ্যে কিশোরীর ভীরুকন্ঠ,পিঁপড়ের সারি,মারী ও মড়ক মুছে যায়,--
একাকী ধানের ক্ষেতে গভীর অনন্ত শব্দে রুপালী পোকারা কোটিকল্প চোখ তুলে
আশৈশব স্মৃতির ভাঁড়ার খুঁটে দেখে নেয় সচকিত বর্ষা।গতবারের বর্ষার ব্যাপ্তি
কতদূর ব্যাপী ছিল?সমুদ্র অবধি?চিতার কালচে কাঠ ডুবসাঁতারে কখন ক্লান্ত?

নিরাসক্ত শিমুলগাছ ঠিকরে পড়া আলোর উচ্চতা থেকে তাকিয়ে দেখছে
পরিকল্পত নগর,জনপদ।
একই ছাতার নীচে অন্ধ ভিখারী ও পরশ্রীকাতর পাগলের বিষয়হীন প্রলাপ।

বুধবার, ১৭ জুলাই, ২০১৩

স্বপ্নাচ্ছাদিত আত্মা

সামাজিক স্রোতের সহজতর মৃদ্যু প্রতিবাদ।আমাদের করতলে বিচিত্রিত রেখা।
পরিত্রাত প্রণয়ের অচঞ্চল অন্ধকারে বিনত বিশ্বাস,আশরীর মূঢ়মতি।
বেড়ে যায় উন্মাদনা।আমাদের রক্তঘাম নিম্নগামী।স্বভাবজাত যন্ত্রণামুখী।
আমরা জানতেও পারি না কখন লবণাক্ত দুঃখস্নান দাবী করে প্রতিশ্রুত ঋণ।
প্রবীণ বটগাছের শাখা সান্দ্র স্বরে একটি ছায়ার মধ্যে অবলীন।

ছুঁতে চাও এ শরীর?তবে ছিঁড়ে ফেলো শরীরের বল্কল,স্বপ্নাচ্ছাদিত আত্মা।

অন্তহীন ঢেউ

খরদ্বিপ্রহরে সৌরবাতাস থেমেছে লাটবাগানের অন্ধকারে।শালকী নদীর চরে
খুঁটে তোলে কন্দফল সন্দেহতাড়িত দ্বিমুখী অসুর।উঠোনপ্রান্তিক প্রসন্ন বাড়ির
সজনেতলায় অন্তহীন শুঁয়োপোকা নেমে আসে নিরুদ্বেগ।

মনে আছে প্রত্যাবর্তনের দিনে কিছু সুযোগসন্ধানী ফল ডুবে গিয়েছিল জলে
সাথে শুভবুদ্ধিজাত গাছের ঝরন্ত ফুল।

এই বেশ আছি বাঞ্জাহীন।কবিতার খাতা ছুঁড়ে ছুঁড়ে অন্তহীন ঢেউয়ে ঢেউয়ে পাড়ি...

মঙ্গলবার, ১৬ জুলাই, ২০১৩

অভিশাপ

এক ভাষা থেকে আরেক ভাষায় চাঁদ যখন ঝলমলিয়ে হেসে ওঠে
স্বরব্যঞ্জনে অশ্বথগাছ তার নবীন পাতায় লিখে যায় অভিশাপ
জন্মপরস্পর কাঠুরিয়া শান্ত অন্তরালে দেখে নেয় গাছে ছড়ানো গুড়ি
এ পথেই একদিন ভোরের আলোর মধ্যে দেখেছি গোলাপ
কিভাবে পাপড়ি মেলে বেলাশেষে ঝরে গিয়েছিল
নদীর ওপারে এক বিজন বিকেলে একা সূর্যাস্ত দেখবো বলে
বুড়ো তালগাছের মাথায় বাসা বেঁধেছিল যে শকুন
সান্ধ্য নির্জনতা ভেঙে খানখান করে ফিরে এসেছিল
আমি তাকে অভিশাপ দিয়েছিলাম গৈরিক গোধূলিতে

সোমবার, ১৫ জুলাই, ২০১৩

নূতন গন্ধসাবান

চারিদিকে মূঢ় আলোর নির্মাণ আর বেলা শেষ হয় অন্ধকারে
শান্ত নদী তার সব গোপণ খবর মেলে দেয় ঢেউয়ে ঢেউয়ে,---
প্রতীকী ব্যঞ্জনা,চিত্রকল্প,রুপক,উপমা----অলৌকিক সব দৃশ্যকল্প
মেঘের ভেতর জেগে ওঠে রৌদ্রজলহীন

জারুল বনের অন্ধকারে অশ্বথগাছের ছবি আঁকি
অন্তহীন পরিশ্রমে বিগলিত শরীর;একেক দিন নুয়ে পড়ে
হে, নপুংষক ধর্মাবতার
আমার কাপড় নেই
আমাকে কার্পাস তুলো দিন
আমার সমস্ত দক্ষতায় আপনার স্ত্রী ও প্রেমিকার জন্যে বুনে দেব
অত্যাশ্চার্য মসলিন

দুধের বোতল ঘরে রেখে গৃহিণী গেছেন কাজে
ফিরে আসবার সময়ে নিশ্চয় নিয়ে আসবে কলার থোড়,কচি লাউডগা
ততক্ষনে আমার সন্তান বস্তুব্যাপকতা থেকে তুলে নেবে
তার অমিত্রাক্ষর মার্বেল
কবরের ফলকে গুলতি ছুঁড়ে জানতে চাইবে,
'মানুষ মরার পরেও কতদিন বেঁচে থাকে'

আর আমি ভুলের ভেতর বসে থেকে
মোড়কখোলা নূতন গন্ধসাবানের ঘ্রাণ নেব

নিঃস্ব ভূ-মন্ডল

অন্ধকার যতটা জটিল
তারচেয়েও সাদা চালতার ফুল
এই কথা ভেবে ভেবে সারাদিন
সংহত মালতীফুল দোলে আমাদের ঝুল বারান্দায়
নামহীন গলি দিয়ে হেঁটে হেঁটে যে অন্ধ ভিখারী
তার ঝকঝকে এনামেলের বাটিতে আর্শীবাদ দিয়ে যায়
তাকে কখনো দেখিনি বেদনায় ম্রিয়মান হয়ে যেতে

সীমান্ত শহরে দেখা হয়েছিল
ম্যাগনোলিয়ার মৃদ্যুগন্ধ মিলিয়ে যাবার আগে
ফিরে গিয়েছিলে ধূলোওড়া পথে
যে সৌন্দর্য ঘিরে রেখেছিল ঋণপত্রে;
তা আজ তামাদী হয়ে গেছে অক্ষরের ক্রমে
সেই লেখাগুলো আজও পড়া যায় গোধূলি আলোয়

সমুদ্রের কাছে এসে কতবার বলেছি আমাকে মায়ের মতোন
ধারণ করো ধারণ করো
শোনে নি সমুদ্র
শুধু অতলজলে প্রচ্ছায়া ভেঙে ভেঙে ছড়িয়ে পড়েছ

আর নিঃস্ব ভূ-মন্ডল ছেয়ে আছে ফুলের আক্রোশে

রবিবার, ১৪ জুলাই, ২০১৩

শুদ্ধচারী নদী

শুদ্ধচারী নদীর গহীন আত্মা খুব নৈকট্যের দু'পাড়ের কাঙ্খিত বিন্যাসে
রোদ্দুরময় নিশ্চিত ঘোষণায় স্পষ্ট শোনা যায় ভাঙ্গনের ঐকতান।
প্রতিমুহূর্তে জলের আক্রমনে প্রস্তুতিহীন দু'পাড়,প্রতিয়াক্রমনে ব্যর্থ।
সেই নদীটার কথা মনে আছে।আত্মমগ্ন বালির প্রদীপ জ্বেলে
দুই পাড় প্রবাহিত তরঙ্গের বিপুল চাপড়ে আমাদের সমান্তরাল ইচ্ছের
সাদা অশ্রুপাত,অস্তিত্বের আলো,বিনত বিশ্বাস,আবর্তিত অভিশাপ,---
বালির গহ্বরে মগ্ন আসন্ন শীতের প্রস্তুতির মধ্যে।

শব্দ ও আলোয় অগুনতি ভাষার ভেতর
পৌরাণিক নদীগর্ভে শষ্যভর্তি জাহাজ,নগর,পৌরপিতার কেলেঙ্কারী,
মৃত পশু পাখিদের কঙ্কাল;আণব সূর্যঝড়ে রুঢ় অনুশাষণের জলজ কবর
এবং
সেখানেও ভাঙা কলসের মধ্য থেকে আমাদের অভিমানী অবকাশ গড়িয়ে পড়ছে

শনিবার, ১৩ জুলাই, ২০১৩

রক্তস্রোত

জলের বদলে রক্ত ঢেলে দিয়েছিলাম শেকড়ে
আমার সমৃদ্ধ বাগানের গোলাপেরা তাই এমোন আগুনরঙা
স্বরব্যাঞ্জনে হৃদয় খুলে দিয়েছি;অরুণোদয়ে
চিৎকারে চিৎকারে দশদিক বিদীর্ণ করেছি
কেউ শুনেছে সে ডাক

তুমি তো জলের মেয়ে
রোদেলা আকাশ,হৃদয়বিছানো ছায়াপথ,----
মনোঃসীমায় হারিয়ে অন্ধ দু'চোখ----প্রত্যয় ঋজুহীন
শিখেছ কি করে রক্তলিপি লেখে আকাশের গায়ে
ঝরন্ত ফসলের মাঠ,ইস্পাতফলায়

রক্তস্রোত আরম্ভের পথ ঠেলে ঠেলে
কিভাবে জলের আয়নায় নিজেকে সাজাবে
আত্মপরান্মুখ পৃথিবীতে আমাদের মুঠোর ভেতর
কেবলই কেঁপে ওঠে ফাঁপা,নিষিক্ত ও অসহিষ্ণু জীবনের গল্প-কথকতা

শুক্রবার, ১২ জুলাই, ২০১৩

সুদূরচারী ঈশ্বর

বিপরীত জল থেকে উঠে এসে
প্রসাধনহীন তোমাকে দেখেছি অন্নপূর্ণা সাজে আর
বুকের প্রপাতে ভেঙে পড়ছে বস্তুজগৎ,
নিঃসীম পরাবাস্তব
প্রবল ঘূর্ণিতে আলো ও তামসীকতা এক হয়ে
প্রার্থনার গাঢ় ভাষা,----মনে পড়ে
আমাদের ঈশ্বর সুদূরচারী

শাণিত নির্জনে মগ্ন হিংস্র প্রেত

সজল আঁধার

এই গাছগুলি আমাদের খুব চেনা
শীত এলে কেবলই পাতা ঝরে পড়ে
আর উত্তুরে বাতাস ওদের শরীর থেকে
তুলে নেয় বল্কল;এরকমই মনে হয়েছিল
যেদিন সমর্পণের ব্যর্থ হাতে তুলে নিয়েছিলে শুষ্ক ফল

শরীর কাঁপিয়ে পরাভব বুকে বাসা বেঁধেছিল
অসামঞ্জস্য পরিণতির সজল আঁধার

পথের হদিস

অনুবর্তিত নদীর পাড় ভেঙে ভেঙে সাদা ফেনা ও ফেনার টানে জাগে বালিয়াড়ি।
প্রকৃতির সহজ চাতুর্যময় ভঙ্গি বলে দেয়,তোমার ফেরার কাল এল।
অবিমৃশ্য পথে উড়ে আসে হেমন্তের পাতা।
ভোরের শিশির পায়ে মেখে শীতের প্রণত মাঠ
সম্পন্ন নগর,অন্ধ ভিখারীর গান----আর কিছু বাকী ছিল।

বসন্তের পায়ে হাঁটা পথ থেকে বর্ষার জলজ পথে
সকল শূণ্যতা ঝরে পড়ে

তবুও বর্ষার শেষে কাঁদাজল পথে আবার নেমেছ
পেয়ে গেছ পথের হদিস?

শনিবার, ৬ জুলাই, ২০১৩

সমন্বিত জলপথ

এতো দুঃখ পুষে রাখা আছে এই বুকে

বিচ্ছিন্নের বিষন্নতায় দু'চোখ সমন্বিত জ্বলে ওঠে
অনুসৃত আবেগে এমন ম্লান মুখ

ব্যবধানের ভাষায় সেই সমস্ত জানালা অবরুদ্ধ অনাশ্রয়ী অন্ধকারে
দেখেছিলাম আকাশভরা সূর্যপাত
আমি দু'হাত বাড়িয়ে বলি,'দাবদাহে জ্বালাও আমাকে।'

সমুদ্র সৈকতে পড়ে আছি
আমাকে রোদ্দুর দাও
আমি আগুনের  সর্বভূকতা দেখেছি
আমাকে সর্বাঙ্গে জ্বালিয়ে বিশুদ্ধ কর

আকাশের জ্যোতিরেখা তাপের প্রবাহে কেঁপে ওঠে
'সূর্যপোড়া নীল' দুই হাতে মেখেছি শরীরে
সকালের শান্ত পটভূমিতে যে ছবি এঁকেছিলাম তা আজ
বিকেলবেলার মতো স্থির স্বার্থপর অসহায়ের নৌকায়
পরিস্রুত জলের প্রচ্ছদে বেঁকে যায়

একরোখা সমন্বিত জলপথ সমারোহে মৃত্যুকেও সমর্থন করে

শুক্রবার, ৫ জুলাই, ২০১৩

পূণর্জন্ম

অপমানিত বধির,কবি,----
দেখো,সারা গায়ে বিছুটি পাতার প্রজ্জ্বলিত উল্কি
নীল বৈকুন্ঠের পথে বন্ধ্যা নারীদের স্তন শুঁকে শুঁকে জন্মান্তরের প্রয়াস
কোনো কুমারীর গর্ভে;যেখানে চৈত্রের জ্যোৎস্না
তমসা নদীর সাথে সঙ্গমে মিলিত

বৃহস্পতিবার, ৪ জুলাই, ২০১৩

হারানো বৃষ্টির রাত

শ্রাবণের অঝোর ধারার জল কি বিষম প্রণয়ের রাত মুছে দিতে পারে
প্রগাঢ় অন্ধকারের শান্ত প্রতিবাদে যা ছিল দূরত্ব
আজ জন্ম ও মৃত্যুর মধ্যে
অব্যবহৃত স্বপ্নের বোঝা কেমন গড়িয়ে চলে অতীত ও ভবিষ্যৎ মাঝখানে রেখে
শিল্পের অন্বয়ে আঁকা বিজয়ী ও বিজিতের সহাবস্থানের পাশাপাশি ছবি,___
আমি তাদের বলব
পরস্পর তোমরা বিচ্ছিন্ন হও
পাথুরে ভাষায় পাথরের অহং নিয়ে যেদিন সমর্পণের সর্বনাশএনেছিলে
আমি বুঝে গিয়েছিলাম অবৈধ তৃপ্তি এমন সহজে আসে
কখন হারিয়েছিল পরিচিত নীল চাঁদ

আমি তাকাইনি কোনদিকে
চৈত্রের চিহ্নিত পথ ধরে হেঁটে হেঁটে চেতনা নিমগ্ন অবিরল
সমুদ্র সৈকতে দেখলামঃ
নগ্ন পায়ে তরুণীরা নরোম বালিতে চিৎ হয়ে আকাশ দেখছে
তাদের অমৃত চোখ যেন একেকটা সহজাত আত্মা
আক্ষেপিত নৈকট্যে গভীর হ্রদ

তারা ভাবে আমি তাদের মেঘের ছায়া দেবো
আর আমি খুঁজি হারানো বৃষ্টির সেই রাত

তামসী হৃদয়

এমন অঢেল দিন গিয়েছে যখন জারুলগাছের শাখা থেকে
শব্দরাশি গুলো ঝরে পরত;যা ছিল
বৃষ্টি এবং তুষারপাতের মাঝামাঝি
আজ যেখানে দাঁড়িয়ে আছি বসন্ত সেখানে প্রকৃতির নিয়মে আসে নি
কিন্তু তোমার স্বপ্নেরা মানুষের স্বাভাবিক উচ্চতা ছাড়িয়ে দিগন্ত ছুঁয়েছিল
এবং শেষাবধি আমরা জেনেছিলাম ঋদ্ধ শব্দমালা দিয়ে সাজানো কবিতাগুলো
পৃথিবীকে প্রভাবিত করতে পারে নি

আমাদের ভুল ধারণাগুলো সূর্যকে ঘিরে রেখেছিল
আর ক্রমে ক্রমে সমুদ্র সৈকত থেকে দূরে সরে যাচ্ছিলাম
দীর্ঘশ্বাসে দীর্ঘশ্বাসে বিদীর্ণ আত্মজ শব্দ ও লবণ পরস্পর থেকে দূরে সরে গেল
কোন চিহ্ন না রেখেই

আমাদের দ্বিধা আর ভালোবাসার ভেতর বাস করে থুত্থুরে প্রাচীন এক ছুঁচো
সকাল দুপুর সন্ধ্যা লাঙ্গলের মতো খুঁড়ে তামসী হৃদয়

এখানেই একদিন ভালোবাসা জন্মেছিল

কাঁটাতার

সমুদ্র ও আকাশের জুয়াখেলায় সরব নক্ষত্রেরা জানে
মানুষের জন্ম কেবল নির্বেদ আকাংখাতেই শেষ হয়ে যায়
আমাদের অধিকারের কাঁটাতারের বেড়া,___
স্বরবিক্ষেপ ছাড়াই প্রশ্ন করোঃ
একদিন অন্তর্হিত ধূলোওড়া প্রাচীন শহরে
কোলাহল,অস্তিত্বশীল পাথর আর ভূ-তাত্ত্বিক জরীপে জরীপে
ক্লান্ত ভূমি কাঁটাতারের বেড়ার ভার নিতে কতটা ইচ্ছুক

দূর্বোধ ভাষা

সপ্রাণ স্বপ্নের মতো ছাতিম গাছের পাতা ঝরে পরে আর
দূর্বোধ শব্দের কোলাহলে মহানিম বট আকন্দঝোপ অনাবসান জেগে থাকে

ওদের সার্বজনীন কোন ভাষা নেই

শিশিরের সাথে বধির কুয়াশা
প্রগাঢ় অন্ধকারের সাথে সজ্জিত বিন্যাসে ম্লান মিথ্যা
বিকেলের সাথে অবোধ্য নির্জন
আহত উচ্ছ্বাসে চাঁদ নক্ষত্রের সাথে
কেবল কাঠঠোকরা কোন ভাষায় বিদীর্ণ করে ওদের হৃদয়
শিশুগাছগুলো বড়ো হলে জেনে নেব বলে
শেকড়ে শেকড়ে জল ঢেলে যাই

উৎসব

কৃষ্ণচূড়া জ্বলেছিল---এমন অঢেল দিন গিয়েছে যখন
স্পষ্ট এক অক্ষমতা ফুটে ওঠে
ফুটন্ত ফুলের কাছে গিয়ে দ্বিধার প্রবল টানে ফিরে আসি
সকালবেলার পরিচিত পাখিগুলো সব একে একে উড়ে যায়
নিস্পৃহ ক্লান্তির মতো সারাদিন পাখিগুলোর রঙ্গীন ডানার ঝলক চোখে লেগে থাকে
কোকিলের গান মেশানো পথের বাঁকে নির্জনতা লুকোচুরি খেলে আর
আমি অটুট দাঁড়িয়ে থেকে
কিছুটা গভীর সত্য জানার আশায় শান্ত বিষাদের মধ্যে প্রশ্ন করি
শেষ যে চিঠিটা ডাকে দিয়েছিলাম;তা আদৌ পৌঁছুছে কি
আমার চোখের জলে ঘামে লোনা স্বাদ
এর অর্থ আমি উঠে এসেছি সমুদ্র থেকে
আদিপিতা, হে সমুদ্র
তুমি দেখো কেমন অবাধে সৌরবাতাসের লুঠ চলছে সৈকতে
দু'তীরের বালিতে আমার অধিকার কেড়ে নিচ্ছে সূর্য
মেঘ ও আলোর রশ্মি উৎসবে উৎসবে কেমন মিলিয়ে যাচ্ছে
আমি উপহারশূণ্য কিভাবে উৎসবে যাব
কৃষ্ণচূড়ার সতেজ ডাল
ডালে বসা পাখি
আমাকে এমন ছবি এঁকে দাও
আমি সেই উপহার নিয়ে জীবনের উৎসবে উৎসবে নেচে যাব
মৃত্যুতেও থামবে না যে উৎসব

মঙ্গলবার, ২ জুলাই, ২০১৩

পশুমাংশ ঝলসে খাবার দিন শেষ হয়ে এল

সংকীর্ণ সিঁড়ির অন্ধকার প্রীত অনুচ্ছ্বাসে ছায়া নড়ে
অনন্য স্বাধীন অন্ধকার ঘরের ভেতর জ্যোৎস্না নেই
 ছবি নেই
অনিবার্য্য সমস্ত আগামী সূর্য্যহীনতায় ডুবে যাবে
কেবল একাকী আমি নির্বেদ শূণ্যতা খুঁজে বেড়াব আকাশে

সভ্যতারও আগে আমি সূর্য্য দেখেছিলাম;বিকিরণবিহীন
তারার আলোয় পথ চিনে চলে যেতাম গভীর সমুদ্রের
প্রতিশ্রুত সম্ভাবনার দিগন্তে
আশা আকাঙ্ক্ষার ব্যগ্র প্রতিমূর্তি ডুবো নৌকাগুলো নিয়ে এসেছিল
ভূমি জরিপের যন্ত,কাঁটাতার,খনন প্রযুক্তিবিদ্যা আর
মৌল রসায়নে চাল থেকে ভাত রন্ধন প্রণালী

পশুমাংশ ঝলসে খাবার দিন শেষ হয়ে এল

সোমবার, ১ জুলাই, ২০১৩

উলঙ্গ আদম

সূর্য্যমুখী মমতায় অতীব পূর্ণতা পেয়ে জীবনের পথে চলে গেলেন কবি
দু'তীরের কাঁশবনে কবিতা,বিষাদ,চান্দ্রগীতি ছড়িয়ে-ছিটিয়ে

আমাদের অন্তর্নিহিত বোধের মধ্যে
আমাদের ঘুমের ভেতর
আমাদের স্বপ্নের ভেতর
আমাদের জীবন ও প্রেম,শুশ্রুষার সম্পূর্ণ ভেতরে
আকাশের প্রান্তসীমা ঘেঁষে পৌরাণিক বিধাতারা খেলা করে আর
দেবতারা আভাঙা পাথর ছোঁড়ে পৃথিবীর বুকে

মানুষ রক্তাক্ত হলে ঈশ্বরের সূচিকাভরণ নিঃশেষে স্বার্থক করে প্রকৃত কান্নায়
মৃত্যুর অপেক্ষা----ক্রমবিষ্ফারিত মহাধমনীতে
নর্দমার পার্শ্বে ঝাঁঝাঁলো এ্যামোনিয়ার গন্ধে
ঋতু আর শুদ্ধ রক্তের অসম সহাবস্থানের মধ্যে

মৃত্যুচিহ্নময় পথে গোলাপের কোন ছবি আঁকা নেই
নিজস্ব আলোয় ক্যানভাস জ্বলেঃ

আপেল গাছের নীচে উলঙ্গ আদম ভয়ে থরোথরো,পাশে ঈভ