Powered By Blogger

শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০১৩

নদী এবং নারী

একবার অনাঘ্রাতা ঠোঁট ছোঁব
চাপা নিঃশ্বাসের আমূল গোঙানীর সাথে
আঙুলের গাঁটে গাঁটে অসহ সুখের
পরশে প্রতিটি রক্তকণিকায় জলোচ্ছ্বাস
শরীরের শিরায় শিরায় তীব্র আবেগের শিহরণে
মিশে যাবে দু'জনের বিধ্বস্ত শরীর,অস্তিত্বের সমগ্রতা
তারপর জলের ভেতর হেঁটে যাব নদীর পূরাণে

নদী এবং নারী;
কবিতার পাশাপাশি-ই এদের বসবাস

বুধবার, ২৭ মার্চ, ২০১৩

জ্যোৎস্না গাঁথা

উন্মুল জ্যোৎস্নায় যদি ঘর ভেসে যায়
তোমার লিপিবিহ্বল চোখ
কোন দূরান্তের প্রান্তে ভেসে যায়

যখন আকাশ হতে ঝরে পড়ে অবারিত জ্যোৎস্নালোক
সে জ্যোৎস্নায় কান পেতে শোনঃ
পারিজাত প্রেমের কান্নায় অন্ধ কবির হৃদয়
বেজে ওঠে শব্দহীন শূণ্যতার হাহাকারে

জ্যোৎস্নার কাফনে যদি বিপূলা পৃথিবী ঢেকে যায়
মৃত্যুকে ফিরিয়ে দেবে কোন মন্ত্রে

রবিবার, ২৪ মার্চ, ২০১৩

সমুদ্র বিষয়ক

সমুদ্রের লোনাজলে কত নীল বেদনার ইতিহাস,বানভাসী মানুষের স্বপ্ন
মিশে যায়---ঢেউয়ে ঢেউয়ে জাহাজের মাস্তুলে মাস্তুলে লেখা থাকে ঝড়ের কবিতা
খোলে খোলে বেঁজে ওঠে কালো মানুষেদের স্পর্ধিত শেকলের ঝনঝন শব্দে খোল
করতালে অফুরান গান;পাটাতনে চিৎ হয়ে উদভ্রান্ত নাবিক তাকিয়ে দেখিঃ
আদিগন্ত আকাশের শূণ্যতায় নিঃসঙ্গ মেঘের ওড়াওড়ি,বোবা রাত্রি ফেটে গেলে
দূর-দূরান্তের নক্ষত্রেরা আলোকরশ্মি ছড়িয়ে যায় আমার স্বপ্নের বিছানার
চারপাশ জুড়ে--- একদিন প্রবাহিত ঢেউ অতিক্রম করে সাঁতরাতে সাঁতরাতে
চলে যাব জনারণ্যময় উপকূলে;জেলেরা যেখানে জাল,টোপ ও বড়শি হাতে
নিরন্তর প্রতীক্ষায়--সহজতর বিষাদ বিষয়ক অসহ যন্ত্রণা অবিরত
তাড়া করে ফেরে।

সমুদ্র অতল থেকে কবে উঠে এসেছিল সৌভাগ্যের ঢেউ

শুক্রবার, ২২ মার্চ, ২০১৩

অন্তহীন

অন্তহীন


গোধূলি সন্ধ্যায় আমি একটি রক্তজবার পাতা ছিঁড়েছিলাম  এর জটিল গ্রন্থি থেকে
আড়ম্বরহীন শাখাগুলো কোনো প্রতিবাদ করেনি কেবল কাণ্ড থেকে ফোঁটা ফোঁটা
কষ আমার পা বেয়ে অনুর্বর মাটি ভিজিয়ে দিচ্ছিল;ছিন্নবাস পাতার মর্মর ধ্বণি
আন্দোলিত করে গেল অযৌক্তিক পৃথিবীর অসঙ্গতির বিপূল দূর্বাঘাসেদের
থেমে গেল সান্ধ্য সঙ্গীতের সুর,দুঃখের নৈরাশ্যে জীবন বিস্তৃত হল মৃত্যুর প্রান্তরে
আর সময়ের পূর্বে রাত্রি সর্বত্র ছড়ালো তার ভয়াবহতার নিদর্শন
প্রগলভতায় প্রগলভতায় কীটেরা বেরিয়ে এলো মাটির তলার গর্ত থেকে
এবং তারস্বরে অভিশাপ দিতে লাগল আমার অস্তিত্বের খামখেয়ালীপনার
শব্দহীন বাতাসের মধ্য থেকে অব্যাহত আর্তনাদে ডেকে গেল ঝিঁ ঝিঁ পোকাদের দল
সমবেদনার ঝাঁঝে,সুরেলা কান্নায় দিগন্তের নিস্তব্দতা ভেঙে গড়িয়ে পড়ল

মানুষের কত অবিচ্ছিন্ন গোপণ পাপের ইতিহাস জানে ঝিঁ ঝিঁ পোকাদের দল
সমৃদ্ধ উত্তাপে অবিরল জ্বালিয়ে গিয়েছি পল্লবিত বহুরৈখিক স্বপ্নগুলোর
পিপীলিকার মৃত্যুকালীন সময়ের মতো ঝাঁকে ঝাঁকে পুড়ে মরেছে রুপালী স্বপ্ন
তবু শরীরের সাদা,রুগ্ন  কাঠামোয়  প্রলয় নাচন নেচে যায় অদম্য ইচ্ছেরা
পথহীনতার ভেতর অরণ্যে শুনিঃদ্বৈতকন্ঠে কুড়োল গাইছে বিচ্ছেদের গান
প্রতিশব্দে প্রতিশব্দে বৃক্ষদের আসহায়তার নির্মম বিদায় সঙ্গীতের মর্মজ্বালা
কাঠুরিয়ার মগজে ডানা ঝাপটিয়ে যাচ্ছিল বিলীয়মান,অপসৃত পাখির মতোন
অনাবৃত আকাশের কোণে প্রতিনিয়ত প্রশ্নবোধক চিহ্ন তুলে জেগে থাকে সাত ঋষি
আমার সমস্ত ঘরে মৃত্যুর সতেজ গন্ধ এবং ইঁদুরেরা চেটে খায় ফুলেল নির্যাস

ঝড়ের অশান্ত রাতে ভীতিকর বাতিঘরগুলো কেবল প্রহেলিকার জন্ম দিয়ে যায়
অস্বচ্ছ ভূমিকাময় পৃথিবীতে নিসর্গের সমতানে ঐকতানিক সঙ্গীতহীন
কুয়াশায় কুয়াশায় দিগন্তের কান্নায় পৃথিবী আলো আভার মিশ্রণে থমকে দাঁড়ায়
সূর্যাস্তের নিঃশব্দতার ভেতর একগুঁয়ে বাতাসের স্বাগতিক মন্ত্রোচ্চারণের মধ্যে
সুবিদিত বীণা যখন সুরের মুর্ছনায় হৃদয়ের তন্ত্রীতে তন্ত্রীতে নমনীয়তার
ঢেউয়ে ঢেউয়ে দূর প্রবাসের পথে মনোহীনতার দুঃসহ দুর্গন্ধ সরে যায়
আহা! মানুষ আজও ভালোবাসে ঐন্দ্রজালিক সঙ্গীত

আশ্বাসে আশ্বাসে বেঁচে থাকা মন্তরগতির কালে রিক্ততার যাবতীয় দুঃখ শোক
আয়নান্ত সূর্যের উত্তাপে সবিস্ময় চিহ্ন চোখের গভীরে খেলা করে,খেলা করে
বিবস্ত্র অন্ধকারের মধ্যে শুধু হিংস্র অবলীঢ় তাপে ফাটে প্রকৃতিপ্রত্যয়বোধ
আমার স্বপক্ষে শুধু কিছু সদ্য রোগমুক্ত কুষ্ঠরোগীর যন্ত্রণাহীন ভাষান্তরে
কবিতার ছন্দ,অন্ত্যঃমিলের সমালোচনা সংকুচিত এবং সম্প্রসারণে অগ্নিশিখার
মতো জ্বলজ্বলে;জমাট বৃষ্টিও আমার কাব্যিক শ্রমে মুগ্ধ

আত্মপরান্মুখ কবিতাগুলো আমার ছুঁয়ে যায় বিস্মৃত পৃথিবী;কুন্ডলিত রাত
ওড়ে নীল গন্ধের রুমালে---প্রত্যাশাহীন জীবনে জিজ্ঞাসার অনুরণনের সুর
তুলে তুলে জলে-স্থলে-অন্তরীক্ষে ক্ষমাহীন রাতগুলো সজল মেঘাবরণে আকাশের
অজস্র তারার মতো চুম্বনে চুম্বনে যোজনবিস্তার ব্যবধান মুহূর্তে মুহূর্তে শূণ্য,
রৌদ্রের চাঁদরে ঢেকে যাবে এ রাতের গল্প কথকতা

কলঙ্কশীলিত সন্ধ্যায় মৃত্যুর কবিতারা পড়ে থাক
সময়ের স্তরগুলো করোটির মধ্যে ভেসে যায় অবাধ সন্ন্যাসে
এবং সারি সারি নগ্ন পাথরের এপিটাফগুলো হিম হয়ে আসে মৃতদের শ্বাসে
যখন জীবন ছিল তারা ছুঁয়েও দেখেনি

বুকের ভেতর দাবদাহ,চোখের ভেতর খরা,পূর্ণিমা উপুড় হয়ে পড়ে থাকে
রক্তজবার পাতার অভিশাপে জটিল ও দুর্বিষহ জীবন সঙ্গীত হল না কারণ
কতদিন আশাবরী মাঘের কুয়াশা ভোররাত থেকে কোথাও দেখি না

এক অক্ষৌহিনী আজানুলম্বিত বটের ঝুরির মধ্যে প্রগাঢ় অন্যায় ঘটে গেছে
পাতাদের ফাঁকে হলুদ সূর্যের আলো নিয়ে নিভৃত আশ্বাসে হরিয়াল কোন সুরে গায়

ঝলকে ঝলকে মুখে রক্ত নেমে আসে রক্তজবা ফুলের মতোন

বুধবার, ১৩ মার্চ, ২০১৩

বৃষ্টিমাখা ভালোবাসা

চৈত্রের অসহ দাবদাহে আমি পেতে চাই অফুরান  বৃষ্টিমাখা ভালোবাসা

বনের ভেতর সেতুহীন নদীর নীলচে জলে যখন তোমার সাদা হাত
আলোড়ন তুলছিল;মনে হল গোটা পৃথিবীর ধ্বংশস্তুপ অম্লান মিশিয়ে দিচ্ছ

একাকীত্বের মুহূর্তে আমি জেনে গিয়েছিলাম সমুদ্র কতটুকু গভীরতা ধরে
মৃত্যু এবং জীবনের দুর্বার ঘুর্ণির আকর্ষিত পথে সূর্য্যাস্ত বাসনাময়
ভবিষ্যতের নির্ভার উপকূলে বালির বসতি অনির্বাণ দাউ দাউ জ্বলে হুতাশনে

বিমূর্ত ভাবনাগুলো ভেঙে ফেলে প্রিয় কবিতার সৌন্দর্য্যময়তা তবু সতর্কতা
মেনে যখনই সুরক্ষিত অন্তর্বাসের বাধন খুলে ফুসফুস ভরে ঘ্রাণ নিই
অনাঘ্রাতা যোনী এবং দুর্নিরিক্ষ্য শরীরের-----প্রবল মুহূর্তে জেনে যাই,নিষ্ফলতা
আমার কবিতাগুলো অনায়াস ভঙ্গিতে পাঠক ছুঁড়ে ফেলে আস্তাকুড়ে

বসন্ত ছুঁই নি কতকাল
খোলা আকাশ দেখিনি কতকাল
গোধূলির আলোয় হাঁটি নি কতকাল
কাল পূরুষের পায়ের তলায় মাথা তুলে দাঁড়াই নি কতকাল
কখনো কখনো বিবমিষা পেলে দেখিঃ তোমার অমৃত চোখে পবিত্র পিপাসা

শেষ বসন্তের দিনে তুমি আমাকে যে সব ফুল দিয়েছিলে
তাতে একটাও গোলাপ ছিল না তবু নির্জনে একাকী
রক্তিম কাটায় ক্ষত-বিক্ষত হয়েছি;মাঝরাতে তীব্র রিরিংসার যন্ত্রণায়
সূচীভেদ্য অন্ধকারে নিভে যায় একে একে সব মোমবাতি
স্বচ্ছ পোষাকের ভারহীন তুমি কেন যে কাঁদ তা বিসর্জনের অশ্রুমোচন
না কি পারিজাত প্রেমের বেদনা

পরিমাপে পরিমাপে দিন গেল,গার্হ্যস্থ জীবন আটপৌঢ়ে প্রগাঢ় স্তব্দতা
নিস্তব্দ সবুজে লেখা হয় নি অতীত তবু সমুদ্র সৈকতে খুঁজি তোমার পায়ের ছাপ
প্রুতিশ্রুতি ছিল কিন্তু চোখের সমুদ্রে নেমে দেখনি কখনো মুক্তো আছে কি না
যখন আমাকে অন্য নামে ডাক,আরেক ভাষায় বল,''কাল রাতে কবিতা লিখেছ?''
হৃৎপিন্ড চুইয়ে পড়ে অনন্ত রক্তের ধারা,জেগে উঠি----ক্লান্তিহীন হলুদ মলাটে
বুকের ভেতর কলকল শব্দে ছুটে যায় বাঁধ ভাঙা জল
সমগ্রতা চেয়ে বসে,'বৃষ্টিমাখা ভালোবাসা'




শুক্রবার, ৮ মার্চ, ২০১৩

অক্ষমতা

পাতাদের সশস্ত্র সন্ত্রাসে অবিমৃশ্য অন্ধকারের ভেতর জ্বলজ্বলে নক্ষত্রেরা
ছায়াপথে ছায়াপথে ফুল ঝরে যাবার মতোন একে একে টুপটাপ খসে পড়ে
ধ্বনিপ্রতিধ্বনিময় জোনাকীর কল্পিত গাথার মর্মবাণী সুস্থিত বৃক্ষের
শেকড়ে শেকড়ে পৌঁছে যায় পাতালের অনুবর্তিত জলের নগ্ন স্রোতে

প্রাকৃতিক দুঃখ জটাজালে আবৃত অলেখা গানগুলো গ্রামান্তর যাবে বলে
অন্য গ্রামের নদীর ভাঙা কূলে জলের উচ্ছ্বাসে ভেসে যেতে থেকে প্রবাসী নৌকায়
অপস্রিয়মান জলের ছায়ায় কত নীল নিষ্ফলতা থরে থরে শুয়ে আছে

কিশোরীর স্পষ্টতায় কি করে এ অবেলায় অসহ মৃত্যুর কথা লিখি

শেষ বিদায়সঙ্গীত

আমি নির্দ্বিধায় বলতে পারি,'আমিই বসন্ত
চূড়ান্ত তারিখের অধীন সুগন্ধময় বাতাস
এবং পতনশীল খড়ম পায়ে
আমার জীবনাবসান;
এবং একটি ফুল,বৃষ্টি,রঙ্গীন ডানার প্রজাপতির মধ্যে
আকাশ যত্ন নেয় বিরুদ্ধবাদী বাতাসের
সহজাত অজ্ঞতা চেয়ে বসে মাতামহ
ভোরের স্বাস্থ্য,যা প্রায়শঃই একজন প্রাকৃতজনের চাওয়া।

আমি তোমার হৃদয় বহন করে চিৎকার করছি
সেই মানুষের বিরুদ্ধে যে আমার শীতে কামড় বসিয়েছে
আমি হিংস্র চোখের পাতা নিয়ে ঘুমোতে পারি না
ওয়াইন রাস্তার মধ্যে তাকে আমি জাগ্রতবস্থায় প্রত্যাশা করি।

আমি মনে করি আমার রঙ আছে,সম্ভবতঃ
এবং বিস্মৃতির কোণের তুলনায় আরো বেশী উষ্ণ হব
যখন আমার কন্ঠস্বর মৃদ্যু ফেব্রুয়ারীতে বিলীন হবে
বহির্মুখী স্বতন্ত্র একটি শিখা আমাকে দেখাও।

এবং রাত্রি যখন অনুপস্থিত হবে,তখন
নীচু জায়গা থেকে একটি উর্ধ্বগত কম্পমান ধ্বনি ছড়িয়ে পড়বে
সে অনর্থক শীতকালের বিপক্ষে অবস্থান নেবে
এবং শূণ্যময় বিষাদসঙ্গীতের মধ্যে আমি বিদায় জানাব।

(মূলঃ কার্লিডা অলিভার লাব্রা)

বুধবার, ৬ মার্চ, ২০১৩

ঘটনাপঞ্জী

বাবা ,আমারঃ
ছাইয়ের স্তুপে আমার মৃতদেহ কেঁদে ওঠে
তোমার অসংলগ্ন আর্তনাদে
তোমার বিস্মৃত সময়ে
শেকড় অনুসন্ধানী দাবীতে
তোমার সুদীর্ঘ অনুপস্থিতে
তোমার স্মৃতিতে সমুজ্জ্বল আমি।
তোমার তীব্র শোকগাঁথা সশব্দে পদচারণা করে
আমার নিস্তেজ মৃতদেহের ওপর
মরীচিকাময় তোমার ভাববাণী
আমাকে আমার আত্মা থেকে মুছে ফেলে।

অনন্ত মৃত্যুর প্রতিশ্রুতি পড়ে থাকে

(মূলঃআইজাক গোল্ডেমবার্গ,পেরু)

আবাস

সমস্ত বাড়ী শহরেই বিদ্যমান
কিন্তু আমার পিতার অবশেষ অন্ততঃ;
তার জীবনের শেষ দিন পর্য্যন্ত তার বাড়ি পাহারা দেবে
অনেক,অনেক সময় পরে
তার নির্বাসিত জীবন শেষ হলে
তিনি দেখেনঃ তার পুত্র আজ গৃহহীন
বাড়িটি বিক্রি হয়ে গেছে বিস্মৃত অতীতে
আমার পিতার বিস্মৃতির অন্তরালে
এটা ছিল তার ক্রুশ,তিনি বলে উঠলেন,আমার ঊষর অতীত
অনেক,অনেক সময় পরে তিনি তার বাড়িটিতে গেলেন
এটা এখানে রাখো,তিনি বললেন,যেখানে বাড়িতে ব্যবহার করা হয়।

(মূলঃআইজাক গোল্ডেমবার্গ,পেরু)

কারিলডা

ঢেঊ খেলানো পাতলা চুলে রাত্রির নিঃসীম অন্ধকারে
জল পিপাসিত চুম্বনের সাথে কাঁপা হাতে আঁকি নীলপদ্ম
অপ্রয়োজনীয় চুলের ফিতায় বেঁধে রাখি ভাঙা পাখা
ছাইয়ের স্তুপ থেকে উঠে আসা অপবিত্র পরীদের আমি জয় করে নিই

আমার চিকন গলা বেয়ে উঠে আসে বেদনার অব্যক্ত সঙ্গীত
সামান্য ভাগ্যের সাথে আমি প্রায়শঃই বুর্জোয়া রমণীর সঙ্গ লাভ করি
প্রদীপ্ত সূর্য্যের নীচে স্থির বসে থাকা আমার গানে
স্বর্গীয় বিবেচনায় বিস্ফোরিত হয়

আমি আমার নির্মেঘ কপাল রাঙাতে সাদা দুধ ব্যবহার করি
আমি ব্যবহার করি সুবিশাল আশা ও অস্থায়ী পেন্সিলে
এবং সমুদ্রের চেয়েও দূরাগত আমার প্রেমিকা

আমার ছোট্ট বাড়িটিতে ফুল পাখি ডিম
এমনকি বিশ্বকোষ এবং দুইটি নূতন পোষাক আছে
এবং এখনো এখনো.......আমি কাঁদতে পছন্দ করি

(মূলঃ কারলিডা অলিভার লাব্রা ,কিউবা)

সৈনিকের বিশ্রাম

অর্থহীন যুদ্ধে তিতিবিরক্ত হয়ে ওঠা
সৈনিকটি তার তলোয়ার হাতে নিয়ে
তপ্ত বালিতে গেঁথে ফেলল
এবং ভাবলঃ
এই জায়গাটি সত্যিই মনোরম
মৃত্যুর জন্যে।

মোষের আলস্য নিয়ে শুয়ে থাকা দুপুরকে সরিয়ে
বিকেল এসে গেল নিতান্ত অনিচ্ছায়
কিন্তু কেউ-ই সৈনিকটির খোঁজ করল না
কেউ যত্ন নিল না সেই জায়গাটির;
যা তার বিশ্রামের জন্যে নির্বাচিত।

কিন্তু মরুভূমির বালুঝড় কিছুটা সময় নিল
তাকে সমাহিত করতে
সে জমির জন্যে সার ছিল না
কিন্তু উপবনে লতাগুল্মে ভরে দিল।

( মূলঃকার্লোস আর্নেস্তো গার্সিয়া,এল সালভাদর)

রবিবার, ৩ মার্চ, ২০১৩

আমি তোমাকে মুছে ফেলব

আমি তোমাকে মুছে ফেলব ভিনেগারের স্পঞ্জে
এবং সামান্য প্রতিকূলতা
আমি তোমাকে চোখের লবণাক্ত জলে মুছে ফেলব
কিংবা অশ্লীল অঙ্গভঙ্গিতে

অধিবিদ্যা পাঠের অভিজ্ঞানে আমি তোমাকে মুছে ফেলব
একটি টেলিফোন কল কিংবা অভিবাদনকৃত ছাইয়ের সাথে
সঙ্গে কাশি কিংবা ফুঁসকুড়ির মুহূর্তে

উন্মাদ ওয়াইনের সাথে আমি তোমাকে মুছে ফেলব
আমার দৃষ্টিসীমার বাইরে
যখন অদ্ভূত কিছু মানুষ কবরের মধ্যে আমার শরীর নেবে

নিরীহ কিছু গেমের সাথে আমি তোমাকে মুছে ফেলব
সাথে জীবন এবং মৃত্যুও
যদিওবা আমি সন্ন্যাসিনী অথবা পতিত রমণী

মূলঃ কবি কার্লিডা অলিভার লাব্রা ,কিউবা)

মশা

কদাকার উড়োজাহাজ আমার
হালকাভাবে আলোর দিকে
চুপিচুপি
রক্তের ফুয়েলে ধাবমান।

(মূলঃজুয়ান ক্যামেরুন,চিলি)

দিনান্তের বিশ্রাম

বেশ্যালয়ের কোণায়
গাঢ় বিষাদের অভিব্যক্তিতে আচ্ছন্ন
একজন লোক গণিকার মুখমন্ডলে চুম্বনরত
আবেগের সম্মিলনে;
যে আকন্ঠভাবে পিপাসার্ত
ভাঙা একটি বোতল
নিঃশব্দে গড়িয়ে নামে
যেখানে শুধুই তার বুকের পাঁজর।

( মূলঃকার্লোস আর্নেস্তো গার্সিয়া,এল সালভাদর)

শুক্রবার, ১ মার্চ, ২০১৩

পুনরানুভূতি

আমি শুধুই এক্সপ্লোরার নই
একবার আমি
হুয়াচুকা পর্বতমালায় উঠেছিলাম কারণ
তারা সেখানে একটী লাল শার্ট অনুসন্ধানে ছিল না
ভীত কোনো লঙ্ হর্ণের ষাঁড়
আমি লোগেনস,এ্যারিজোনার পথের ধারে লিফট নিয়েছিলাম
এবং সীমান্ত অতিক্রম করে
সূর্য্য-দৃষ্টিতে আচ্ছন্নময় সাদা খালের রাস্তার পার্শ্বে
লাল ইটের দালানে বসে
কমিকের বই পড়ছিল
নীল নয়না রমণী এক।
আমি তাকে বললাম,“¿Cómoestá?”
দীর্ঘ এক নিঃসীম নীরবতার পর
তার চাহনীতে ছিল প্রশ্রয়পূর্ণ সকেত
মহাজাগতিক বোধের অতীত পার হয়ে
আমি তার পার্শ্বে বসলাম
এবং সে বলল,“¿Quéquiere?”
আমি উত্তর দিলাম, “Usted.”
সে হেসে উঠল এরপর
বিশুদ্ধ এ্যামেরিকান ইংরেজীতে জিজ্ঞেস করল,
''where're you from?''
ব্রুকলিন,ফোর্ট হুয়াচুয়া আমার প্রথম কর্মস্থল,
দায়িত্বের পূর্বে নিয়োগকৃত কোম্পানী
এটা যদিও বা কর্মঘন্টা নয় কিন্তু
সে আমাকে তার কামরার ভেতর সেঁধিয়ে নিল
সৌহার্দ্যপূর্ণ চুম্বন আর গভীর আলিঙ্গনের সাথে
আমাকে জিজ্ঞেস করেছিল,''আমি কুমারী।''
এখন আমার আর কি করার আছে!
তার মুক্তোর দাঁতের সারি হেসে বলেছিল,“¡Chichito!
তুমি বড় একজন মিথ্যেবাদী
কিন্তু আমি তা না
সে ছিল প্রথম
মেরিক,লঙ্ আইল্যান্ডে মেক্সিকান শৈলীতে নির্মিত
প্লেস্তার লেপন ঘরে
সুশোভিত মিথ্যের চাঁদরে ঢাকা বিছানায়
তিয়াত্তর বছরের নিরাপদ,স্বস্তি ও ঘনিষ্টতার
জীবনে স্ত্রী,
সন্তান-সন্তনী
ও নাতি-নাতনীদের কাছাকাছি
খুব দূরে নয়
অবসর জীবন-যাপনে কেবলই হাতছানি দেয়
সেই সুদূরের পুনরানুভূতি
..........হৃদয় ক্ষত-বিক্ষত অতীতের পুনরানুভূতির

মূল: স্ট্যানলি এইচ.বারকান