শুক্রবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৫
ভুল সময়ের সন্তান
কোকিলভাষ্যে সমূহ প্রেম ঝরে পড়ে
আনত চোখের দৃষ্টি,অশ্রুপাত ও রক্তের স্রোতে
অনুদিত হতে থাকে হেমন্তের পাতাঝরা গান
জলপতনের ধারা থেকে রাঢ় ও গাঙ্গেয় উপদ্বীপে
শুধুই শূন্যতা - দূরদ্বীপবাসিনী রমণী ভুলে গেছ
সার্বজনীন ভাষার ব্যাকরণ ও পরাবিদ্যক কবিতা
যা লেখা হয়েছে কিংবা
যা এখনও লেখা হয় নি - অনামী মেঘ,সামুদ্রিক শৈবাল ও ঢেউ
গোধূলিবেলার শেষ বোঝাপড়া
আমাদের মাঝখানে পারস্পর্যহীন অক্ষমালা,অনুশাষিত অতীত
ছড়ানো চৈত্রের দুপুরের মতোন নূতন ভাষা
কাকের অক্ষর এবং মনোলীনা গানে আত্মরতি সময়ের হাহাকার
এখন কি তবে ভুল সময়,সবাই ভুল সময়ের সাহসী সন্তান
বিচ্ছুরণের মায়াবী রেখা
আয়না ও আত্মপরিচয় ভেঙে স্তম্ভিত প্রেমিক
বুকফাঁটা আর্তনাদে কেঁপে উঠি
ভাঙা গানের কলির মতো - সারা ঘরময় রুপান্তর
শিশিরের খোঁজে,অশ্রু ও রক্তের খোঁজ়ে ঝকমকে মৌরলা মাছের যে জীবন -
জীবনের দীর্ঘতম ফুটপাত জুড়ে বিবর্তনবাদের আলপনা
এ এক রহস্য -
বোধিবৃক্ষের তলায় ধ্যানমগ্ন বুদ্ধ গৃহে ফিরে যাবে
অধীত জীবন থেকে উড়ে আসে তারবার্তা
নির্বাণের শোক ও লিপিতে বহুদুপুরের নিঃসঙ্গতা
অন্তর্গত বৃষ্টির ভেতর ধূলো ও পরিপক্ক বেদনা
রুপান্তর,বিবর্তনবাদ - অগনন নক্ষত্রের রাত্রি
অজ্ঞাত সমুদ্রতীরে প্রণয় দ্বিধার দৃশ্যে অন্তঃস্নান,চুম্বন,জল ও
জননের সন্ধানে অসংখ্য যুবকেরা চাঁদ-ডোবা অন্ধকারে
শুদ্ধতার তীব্র অভিলাষে পথে নেমেছে - নৈশবিজ্ঞপ্তি এবং ইস্তেহারে লেখা
'ক্ষুধা।মৃত্যু।জ্বরা।শোক।দুঃসময়।রজঃস্বলা নারী।'
মন্দাক্রান্তা রাগমোচনের মাত্রাজ্ঞান ও সুরে
শূন্যতা রাতের আলো জ্বালে আর
অনাথ নদীর বুকে জেগে ওঠে
বিভ্রান্তবোধ,বুদ্বুদ - বিচ্ছুরণের মায়াবী রেখা
বৃহস্পতিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০১৫
ক্রৌঞ্চমিথুন এবং ব্যাধের তীরের প্রণয়োপ্যাখ্যান
সূর্যমুখী দিন এবং অন্ধকারের ভেতর যত শব্দ বেরিয়েছে কবির কলম থেকে-তার সবটুকুই কবিতা-পৃথিবীর শেষ কবিতাটি আজ লিখে গেছে কবি-অজস্র লেখার ফাঁকে হাঁ-করা উচ্চাশামুখ নিয়ে কবি শুয়ে আছেন বৃষ্টিগাছের নীচে-ফুল দিয়ে ঢাকা মুখ-চারিদিকে ছড়ানো শব্দের বিশৃঙ্খল জট-কবির বাঁধানো খাতা নীল রঙের অশ্রুতে ডুবে আছে-ঐ অশ্রুজল কবির বহু রাত্রি জাগরণ এবং অনেক অভিজ্ঞতার ফাল-হিম ও শিশির,রৌদ্র ও মেঘের লুকোচুরি,জ্যোৎস্না ও ঝড়জলের অসৌরমন্ডল ভূমি কর্ষণের পর কবি ফেলে গেলেন সূর্যাস্ত,জলরাশি,জন্মের পেছনে জন্ম আর একঘাত অন্তর বিরহ-একেকটি ঘাটে স্তব্ধতা-শতাব্দী ও মহাকালের ভাঙা চাঁদ
কবি জন্ম নিয়েছিল নীল পরিবারে(কবির জীবন কেটে গেছে নীল রঙে রঙে)-সামুদ্রিক ঢেউয়ে ঢেউয়ে কবি রেখে গেছেন স্বাক্ষর-মাটি টানে নি-ভোরের উৎস খুঁজে নিতে ফুসফুসে মাঝরাতে মশাল,পাঁজর ফুঁড়ে লক্ষ জোনাকীর আলো আর মাথাভর্তি মরুঝড়ের বাস্তবতায় নূতন বইয়ে ঠোঁট রেখে প্রেমোচ্ছল বাগদান-
কবি শুয়ে আছেন-বৃষ্টিগাছের থেকে ছাই ঝরছে-প্রণয়,ব্যররথ প্রণয়ের ছাই-কবি লিখে গেছেন ক্রৌঞ্চমিথুন এবং ব্যাধের তীরের প্রণয়োপ্যাখ্যান
গোধূলি উপ্যাখ্যান
গোধূলির পাকা রঙ মিলিয়ে গেলে
সাহসী প্রেমিকা বুক মেলে ধরে
কবির দু'চোখে তখন জোনাকপাখি,বৃষ্টিগাথা-
তার ভেতরের ছন্দ,অপরাধ এবং পাপবোধ
স্তবের মুহূর্ত ফেটে বের হয়ে আসে অতৃপ্ত রমণশব্দ
বাতাসের অদৃশ্য দেয়াল থেকে লকলকিয়ে আগুন ওঠে আর
কবির কলম নখের আঁচড়ে ভেঙে পড়ে
ঠোঁটের কোণায় স্মিত হাসি নিয়ে
কবি উঠে আসেন,নিমগ্ন-পায়ে বালি,কাদা ও কাঁকর
পায়ের তলায় শতাব্দী দাঁড়িয়ে থাকে
রবিবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০১৫
ঋণ
এত ছায়াচ্ছন্ন ভালোবাসা,দুপুরের তাপময় নির্জনতা,-
কোথায় হারিয়ে গেল
রামধনু পথে গ্রন্থ-মলাটের উন্মোচনে প্রেম-সম্মিলন
আমাদের লৌকিক বিবেক এবং বাসনায় কী গভীর তৃপ্ত জলের ফোয়ারা
আমাদের দুই চোখে স্বপ্ন,বুকের ভেতর হিম ও শিশির,-
কুয়াশার টানে মুছে গেল,দূরে
আগুনের তাপ ততটা ছিল না যতটুকু হলে উষ্ণতা ছড়ায়
হিম ততটুকু এসেছিল যতটুকু হলে পৃথিবী বরফ হয়ে যায়
আমাদের চারপাশের সমস্ত ঝাউগাছ মরে গেছে
পায়ের তলার অবিমৃশ্য বালি শুধু অনন্য প্রতিভা নিয়ে জেগে আছে
রক্তিম প্রতিভা নিয়ে আলো এসেছিল আমাদের সম্পন্ন উঠোনে
তুমি তো জলের মেয়ে নও
বোঝ নি আলো ও আঁধারের সমানুপাতিক শর্ত
ফিরিয়ে দিয়েছো - খুলে দেখনি বুকের দৃঢ়তটে লেগে থাকা
গুল্ম-লতায়,সবুজে লেখা প্রিয় নামের অক্ষর
চিরদিনের অশান্ত ঘর,সংসারের ওপর কালো মেঘ,ঝড়,স্মৃতিজল
অন্যপারে বাস্তুহীন ঠাঁই
গুরুগুরু বোধনের ধ্বনি আর বিসর্জনের বিষাদে
সমস্ত শব্দের কাছে ঋণ বাড়ছে - পশ্চিম থেকে
পায়ে পায়ে উঠে আসা গোধূলির আলো এবং
ফুলতোলা সকালের পথে প্রতীক্ষা করছি;
এই ঋণ কখন তামাদী হয়ে যাবে
নিঃশর্ত লোভ
আমাদের উত্তাল রাতের গল্পগুলো সেই একই রকম -
উৎসবের নীলে নির্ভার জীবন
যা ঘটার ছিল,অনিবার্য্য, - তাপ ও বিদ্যুৎ একাধারে
ক্রৌঞ্চমিথুন জীবনগন্ধে অসম্ভব ফিকে হয়ে আসে
মৃত্যুর লগ্নের জল অনন্ত অভ্যাসে
অতৃপ্ত দু'ঠোঁটে তবু মহাশ্বেত ঘোষণার অনিশ্চয় লিপি
আশা,প্রত্যাশা বা অস্বচ্ছ দিনের দৃঢ় থেকে দৃঢ়তর
বজ্রাহত মুহূর্তে বিনীত,স্থির কল্পনার টান -
নিঃসাড় পাহাড়ী পথে কথকতা ছিল না কখনও
সেই ঘর,ঘরের নৈরাশ্যে অতীতের জলস্রোত
প্রণয়ের নিবিড়তা এতো যে কঠিন
নিজের হৃদয় খুঁড়ে অবিমৃশ্য বালি
প্রত্যাশাহীন জীবনে পূণর্বার পথে নেমেছ;নিঃশর্ত লোভে
উন্মুক্ত ও নগ্নিকা দেবী
পেয়ে গেছি রতিসম্মতি,চুম্বন
এইবার দু'চোখের ইশারায় খুলে যাবে অন্তর্বাস
সারারাত সাপলুডু খেলে অবশেষে সকালের আলোয় শরীরজোড়া সাদা আলোরেখা
নিহিত বর্ণমালায় মিশে থাকে রতিপাথরের ছায়া
আলিঙ্গনের ঘ্রাণ ও নগ্ন-বুকের স্ফীতিতে চৈত্রদুপুরের মতো
ঘনশ্বাসে কেঁপে ওঠে কবি
অজস্র মশাল জ্বলে,জ্বলছে কবির বুক,বিদ্রোহী পাঁজর
পুড়ে ছাই ওড়ে
দুঃসহ রৌদ্রের তাপে ছুটে যায় প্রিয় সম্বোধনগুলো
'সোনা,তুমি ফিরে আসো,খাজুরাহে'
প্রাচ্যের,মায়ার মতো সৈকতের বালি থেকে উঠে আসো
উন্মুক্ত ও নগ্নিকা দেবীর বেশে
শনিবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০১৫
পদ্মপাতা থেকে দূরে
যতদিন পাশে থাকা গিয়েছিল - ছিলাম;এখনও পদ্মপাতা থেকে দূরে,সূর্য
অজানা সমুদ্রতীরে ডুবে যায়
দু'চোখে আমার গরম জলের ফোঁটা
পথের দু'দিকে খাদ রেখে ছুটতে ছুটতে দিগন্তের দিকে
গোলকধাঁধা,ঐ গোধূলির রশ্মি -
আজ,কাল কিংবা পরশু - প্রেমের এই কথাগুলো ছাড়া
আমার কিই-বা ছিল
শস্যমূল হাতে সকালের উৎস খুঁজে নিয়ে
সূর্য্যমূখী ফুলের ভেতর খাদ্য ও পানীয় ঢেলে
নদী,পাহাড় ও পাথরের স্তুপ ঠেলে সূর্যোদয়ের আলোতে
কে লিখে রেখেছে এতো অভিশাপ
এঁকে বেঁকে নেমে আসছে - শিল্পিত রুপ ও অবশ পতঙ্গের মতো শান্ত ভঙ্গিমায়
শাপ মোচনের মন্ত্র জানো
আমাদের চাপা পড়া সন্তান বাৎসল্য,পূরানো বিয়ের চোলি
বকুলগন্ধে মুহূর্তে ভেসে গেল
পরার্থপর অগ্নি ও জল,সারাৎসার খাদ্য ও পানীয়ে
প্রিয়ে,তোমার শাড়ীতে চোরকাঁটা লেগে আছে
অনায়াস ভঙ্গিতে যতটা দূরে গিয়েছিলে
অম্লজানহীন,পদ্মসম্ভব ঐ পাহাড়ের চূড়ায় - দু'চোখে মেঘ
অনন্ত বর্ষার!হাঁটুমুড়ে অন্ধকার বিছানায় রতিসম্মতি,চুম্বন,খন্ডযুদ্ধ
সৌন্দর্য্যবোধ ও অভিশাপে যা ঘটার ছিল
ঘটে গেছে
বেসরকারী আতুরালয়ে পূণর্জন্ম নেবো
তুমি,নেমে এসো
মঙ্গলবার, ১ ডিসেম্বর, ২০১৫
ক্ষিধের জগতে,ফাঁসীকাঠ এবং রণবাদ্য
আমাদের প্রতিটি রক্তের ফোঁটা শরীরের ঘামে মিশে যায়
অব্যবহৃত খামার ভরে থাকে অবিচ্ছন্ন খড়ে
এতো বেশী খড় আমরা দেখি নি ফসল কাটার উৎসবের শেষে
স্বৈরিণী সন্ধ্যায় আমাদের শ্রম বিনোদন মিথ্যে হয়ে যায় যদি
শিউলি বনের তলায় সৌরভে মগ্ন গুপ্তচর কিংবা রাজার সিপাহী
প্রকৃত ও স্থুল বোধে মশাল না জ্বালে
শোক,তাপ,বিদেহ - কৈবল্যে আমরা এখনো পরাধীন
আমাদের গলায় গভীর ফাঁস,দু'হাতে কড়ার দাগ
আমরা কেবল জেগে উঠি ক্ষিধের জগতে,ফাঁসীকাঠ এবং রণবাদ্যে
প্লাবনসীমার মুখোমুখি
আমাদের শোণিতে আবাল্য বীভৎসতা
আমাদের রক্ত থেকে ঝরে পড়ে সবুজ শস্যের হাহাকার
আমাদের ভেতর যে সহমর তৃষ্ণা
তা কেবল রক্তের,মদের
আজ এই অন্ধকার রাতে পান করো
মহুয়ার রস আর চেখে দেখো
স্ত্রীলোকেদের নিষিক্ত রক্ত
প্রকৃত স্বপ্নের অবতংশ
ঈর্ষাকাতর গোলাপী রঙে ছুপানো হাত,ঐ হাত বসন্তকর্ণিক
বসন্তের কারিগর এসেছিল - উপহসিত স্বপ্নভঙ্গের শেষ
সবুজ ইঁটের নূতন সংসার ভেঙে
পথে নেমেছি;লুব্ধক তারা থেকে ছিটকে পড়ছে আলো ও কুয়াশা
মাধবীলতার স্রোতে একদিন প্রতিশ্রুতি ছিল
অকূল জোনাকীময় রাত,গভীর সত্যের মতো বিধুমুখী সৌন্দর্য্য ও
মাথার ওপরে নীলকান্ত সূর্য্য
প্রত্যাখ্যাত ফেরানোর বজ্রমন্ত্র বুকে
কবিতা,গান ও শব্দে যতদূর দৃষ্টি যায়
নক্ষত্রবিহীন সমস্ত আকাশ
উৎক্ষিপ্ত হৃদয়ে এতো বেশী শূন্যতা;ফুলের কোরকে কোরকে
প্রকৃত স্বপ্নের অবতংশ পড়ে আছে শুধু
অধিদেবতা,গোরখোদক এবং দীপান্তরীত কয়েদী
নদীর এ পার থেকে কারা দেশান্তরী হয়েছিল
ওপারের বাসিন্দারা জলকলহের নীচে চাপা পড়ে আছে
জল কিংবা জলান্তরে বেড়ে ওঠা লতা,গুল্ম ও জলজ দাম -
যৌনতায় দুলে উঠছে - নিঃশ্বাসে জৈবফুল
ক্ষুধা ও চুম্বনে নিশ্চয়তা খুঁজেছিলে লেলিহান সময়ের কাছে
অনিয়ন্ত্রিত জোয়ারভাটা এবং সামুদ্রিক মফস্বলের প্রাণান্তকর পাঠ প্রচেষ্টায়
শ্যাওলা ও চোখের জলের দাগে স্পষ্ট দেখা যায়
কার্তিক জ্যোৎস্নায় ছাই ওড়ে আর পরস্পরকে বাতিল করে
তৈরী করে ছন্দোবদ্ধ পয়ারের বাক্য
পাঠ কর,জলের সন্তান
যারা তোমাদের আগে আগে এগিয়ে চলেছে
অধিদেবতা,গোরখোদক এবং দীপান্তরীত কয়েদী
আদ্যিকালের সুর
স্ফুরিত দু'চোখে সূর্যাস্তের ছায়া
অন্তঃসারহীন আলো,অস্পষ্ট অতীত,- সব একসাথে
কেঁপে ওঠে পশ্চিমের চরাচর
কোন বন্ধু ছিল না,অজানা ছিল বৃত্তি তবু
উত্তর-দক্ষিণে দুই হাত মেলে পথের ওপর দাঁড়িয়েছ,নারী
তুমি একেলা কোথায় যাবে
আকাশের পটভূমিতে কাঞ্চনজঙ্ঘা
নীচে ভাসছে,পৃথিবী
এতো জল কোথা থেকে এল
নিমগ্ন জলের তোড়ে মুগ্ধ নির্বাসন
ঘন বিনুনী শূন্যতা - এপারের সর্বস্বতা ফেলে
প্রবাসের মাঝি লগি ঠেলে
নীরবতার ভেতর বেজে উঠছে আদ্যিকালের সুর
এতে সদস্যতা:
পোস্টগুলি (Atom)