মঙ্গলবার, ২১ জুলাই, ২০১৫
আয়ূ,প্রেম
বাঁশের মাচায় শুয়ে আছি
জানালাবিহীন ঘর,মাটির দেয়ালে মৃত শরীরের রেখা,ত্বক
মুছে গেছে রমণীর মুখ
আবছা ঐ মুখে উইপোকাদের বাস
পুরানো হাড়ের ঘ্রা শুঁকে শুঁকে
কখনো পাবে না জেনে কবির সংসারে
অনিশ্চিত শ্রম ও আশ্লেষ,সামুদ্রিক ঝড়স্বপ্ন,ঝড়ের বাস্তবতায়
রমণী ফিরিয়ে নিয়ে গেছো নিজেকে,স্বেচ্ছায়
শতাব্দীর যুপকাষ্ঠ হাত পেতে আছে
পূর্ণ করে দাও আয়ূ,প্রেম
শূন্য
সকলেই প্রস্তুত - যে যার মতো,_
সূর্য ডুবে গেলে পৃথিবীতে নেমে আসে গাঢ় এক অন্ধকার আর
সেই অন্ধকারের আস্বাদহীন,উপবাসে
আমাদের কৃকলাশ শরীর আপাত ভিন্নতায় জেগে ওঠে
ক্ষুধা,কাম,মৃত্যুর পূর্বের সহমর তৃষ্ণা
কখনো কখনো অন্ধকার ফুঁড়ে ভেসে ওঠে আধখান চাঁদ
মৃণালহীন কাগুজে আভা
উত্তরে দক্ষিণে পূর্ব ও পশ্চিমে কিংবা
আমাদের চারপাশের যা কিছুঃ
পোড়া ভিটেমাটি,ভাঙা চালাঘর একসাথে নড়ে ওঠে
ক্ষুধা ও রিরংসা
আমরা শূন্যের দিকে ধাবমান
শূন্য থেকে এসেছি,- শূন্যতে মিশে যাবো
মাঝখানে পড়ে থাকবে চোখের জল,ভাঙা থালা,রক্তমাখা চোলি
ঘরপোড়া ছাই
ঘর-দুয়ার-আঙিনা
সব,সব ছেড়ে এসেছি,উচ্ছন্নে গেলে যাক
নীল তেজস্ক্রিয়া,সাবান,কন্ডম,সার ও বৃষচিক রাশি....
তোমার প্রেম ও ঘৃণা মুছে ফেলতে
এতোদূরে চলে এসেছি;সভ্যতা থেকে
আরও দূরে,-তবু তোমার নিঃশ্বাস টের পাই
সে নিঃশ্বাসে তাপ ও উষ্ণতা নেই
আছে শুধু ঘরপোড়া ছাই
ঘুমের পোষাক
গরম জলের স্নান,আতর,লোবান,ধূপকাঠি - সব কিছুই প্রস্তুত
কফিনে শোয়ানো লাশ
অধিকাংশ দিন এবং রাতে
বুকের ক'খানা হাড়ে উন্মোচিত হয়ে আসে
দুঃস্থ হাহাকার,সূর্যের অসংখ্য শোক
শোয়ার সময় হয়ে এল
নিরবিচ্ছিন্ন ঘুমের অনায়াস আয়োজন
আমার ঘুমের পোষাক কোথায় লুকিয়ে রেখেছ
কবির আচ্ছন্ন বিলাপ
দু'চোখে বর্ষার মেঘ
তোমার পায়ের কাছে অগোচরে শুয়ে আছে ভাঙা জলের কলস
চিতায় ছিটোবে - জল কোথায় ;উড়ছে চিতাভস্ম
উড়ছে অক্ষর,শব্দ ও কবিতা
সে লেখা পড়েছ
কবির আচ্ছন্ন বিলাপের ধ্বনি কিভাবে দিগন্তে মিশে যায়
নিয়তি
সেইসব অনামী মেঘ ও তার ভেতরের বিদ্যুৎ;নিঃসীম শোনা যায়
জল দেবতার হাঁ-করা মুখের হাসি
একেকটি বন্যায় ফসলী ক্ষেত জলে ভাসে আর
এক খরায় পুড়তে থাকে শস্য
আমাদের নিয়তি প্রস্তুত
কী দূর্গম এ জীবন - রক্তবর্ণ,লোহার প্রান্তর
প্রার্থনা
কেন্দ্রভিমুখী ক্ষমতার বর্গ -
ভেঙে ফেলতে চেয়েছ
নিদ্রামোহাবিষ্ট শামুকের খোলে এলোমেলো রেখার জ্যামিতি
অপরিণাম মোহের বশে শূন্যের বিরোধী মানুষেরা সব
যে যার ইচ্ছেয় অনুকূল ও প্রতিকূলের লক্ষ্মী০উপাসনা ঠেলে
দেয় অনামী মেঘের দিকে
কোন পথে আমার গন্তব্য বলে দাও, প্রভূ
পাথরকুচি শরীরে সূর্যাস্তের ছায়া লম্বভাবে পড়ে আছে
মুখের কিনারে অগণন ঢেউ -
বিশীর্ণ আঙুলগুলো মেলে দেই উল্টামুখ আকাশের পূরাণে;প্রার্থনাস্তব এবং
তপস্যার দান-ধ্যান-নিমগ্নতা বৃষ্টির ফোয়ারা হয়ে নেমে আসে
বড় কষ্ট প্রভূ - নিদ্রাহীনতার সুখ দাও
অসামঞ্জ্যের শুচি অথবা অশ্লীল বীজানুবিস্তারে পথিক জটিল পথ
কত প্রতিহত পথ আজ মিশে আছে অস্বচ্ছ,তরল এবং লম্বাকারে
আমি দশদিকে হাত উঁচিয়েছি -
অবরুদ্ধ এই জনপদে সবুজাভ আলো দাও,প্রভূ
মানুষ ও পাখি
প্রার্থনার স্তব ফেটে পাকিয়ে উঠছে ধূলো
ভাঙা রথ,শিরস্ত্রাণ,-
ত্রেতা থেকে কলিযুগের সূর্যাস্তে সেই একই রঙ
মানুষ মরছে কুরুক্ষেত্রে আর গন্তব্যে পৌঁছার পূর্বে -
অভিশাপ তাকে আজও কাছে টানে
পালাবার পথে সুড়ঙ্গ - হাড়ের নৌকা
কে দাঁড় টানছে
দুই পায়ের কলঙ্ক মুচে জলের উপরকার চরে
ছায়া ও চন্দ্রিমা মুখোমুখি স্নান এবং কলহাস্যে
তাড়া করে মানুষ ও পাখি
ছায়া ও চন্দ্রিমা
ছায়া ও চন্দ্রিমা ঘেরা উঠোন তোমার
আমার লেখার দুই ধারে কাঁটাবন
যে আগুন জ্বালিয়েছ
পোড়া ছাইটুকু বাদ দিলে.....সারাঘর আলোকিত
বারান্দাময় অলীকস্বপ্ন তবু
সকালকে কাঁধে তুলে বসে থাকি
ঘুম থেকে জাগিয়ে তুলবো বলে
পরমাণু ঘড়ি
পরমাণু ঘড়িতে সকাল ন'টা
শাহবাগের রাস্তায় ট্রাফিক ছুটছে
থেমে আছে সমস্ত শহর
'তোমাদের গন্তব্য কোথায়?'
ভীড় করে আসে সুযোগসন্ধানী কিছু প্রশ্ন
মুখ খোলবার আগেই সবুজ বাতি
ঢাকা ক্লাবের ধারের ফুটপাত ঘেঁষে বসে থাকা
অর্ধলিঙ্গিনী ভিখারী মহিলাটি আমার মা আর
রমনার লেকে যে মেয়েটি শুধু শায়া পড়ে
পাড়ে শাড়ী শুকাচ্ছে;সমস্ত রাত
এই শহরের লাম্পট্যের তৃষ্ণা মিটিয়েছে -
সে যে আমারই বোন
গতরাতে ওর শরীরের প্রতিটি আঁচড়ে,আর্তনাদে
বাসী এক ধর্ষণের মুখোমুখি তোমাদের সভ্যতা থমকে আছে
আহ্লাদ ও পুনরুথান
যে সারল্য তোমাদের মজ্জাগত
আলোছায়াময় টানাদিন এবং আমার ভেতর যে আনন্দ,-
তা শুধু রক্তের,তা শুধু মদের
উপকারী সমাজ বিজ্ঞানে যথেষ্ট অসত্য এবং
গূঢ় লৌকিকতার আড়ালে লুকানো আগুনে পোড়া ক্ষত
সম্ভবতঃ আজ,কাল কিংবা আগামী পরশু বাতাস ও জোয়ারের টানে
স্বচ্ছলতা ভেসে যাবে
অঙ্গুলিনির্দেশকারী রাজপুরুষেরমুর্তি ও স্থাপত্যে নূতন বিহগপথ
আহ্লাদ ও পুনরুথানের
গ্রামান্তরের গান
গভীর অন্ধকারের গ্রাম
গন্ধ শুঁকে উঠে আসছে প্রেতেরা
রক্তে,অশ্রুপাতে এবং অপমরণের আগে
শ্মশান অবধি যারা যেতে পেরেছিল
হাতে সামান্য জ্বালানী
চন্দনপাতা,উল্টানো চোখ,আধপোড়া নাভী ও হৃৎপিন্ড
মারী ও মড়কে কত গ্রাম,কত শহর উচ্ছন্নে গেল
ভেদবমি,ডেঙ্গু,কালাজ্বর -
মরা লোকালয়ে চাঁদ জ্বলে
নদীর এ পারে গান থেমে আছে
পঙতিতে পঙতিতে দুঃখ
আর অইদিকে আকাশে আকাশভরা তারা
গান পৌঁছে গিয়েছে জলের স্তর পার হয়ে ঐ দিকের গ্রামান্তরে
ছাইমাখা নাচ
আগুনের সক্ষমতা আছে
নিমেষে পুড়িয়ে ছাই করবার
সাদা কিংবা কালো
আগুন বোঝে না
হাহাকার,আর্তনাদ,ঘরপোড়া অন্তর্জ্বালা
দেখেছ কি ভাবে সূর্যশরীরে কবিতা লেখা হয়েছিল
প্রার্থনার ফুল ঝরে পড়েছিল
অরুণোদয় হৃদয়ে,সান্ধ্যসঙ্গীত ও স্তবে,দাবদাহে
কেমন ঝলসে গিয়েছিল
হৃদয়ের সেই পোড়া ছাই আজও বাতাসে ভাসছে
শ্মশানের চন্ডাল নাচছে,ছাইমাখা নাচ
সোমবার, ২০ জুলাই, ২০১৫
নূতন ভাষায় গান ও কবিতা
বেদনা ও বিদ্রুপের বিরোধাভাসে আমার ছায়াটাকে অনুভব করে
যখন তোমরা ডানা মেলে দিয়েছিলে -
প্রতিযোগীদের ঈর্ষা-মাখা হাসিতে আকাশ ভরে গিয়েছিল নিন্দুকের আর
ইউক্যালিপটাসের মতো দীর্ঘ আমার ছায়াটা ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রকায় হয়ে
মিশে যাবার প্রাণান্তকর চেষ্টায় - যা হয়ে থাকে সচরাচর;উদ্বাস্তু দিন
এবং রাতের নির্ভার ঘুমের ভেতর স্বপ্ন ও অভিমানের সহাবস্থানে দ্ব্যররথদোতক হাসি -
জননেরে আলোড়নে সু-পরিকপ্লিত মিথ্যাচার
কিভাবে নিন্দুকদের মর্মমূল খুঁড়ে অবিমৃশ্য বালিতে নিশীথ জ্যোৎস্ন কিংবা
নূতন ভাষায় গান ও কবিতা লেখা যায়
এতে সদস্যতা:
পোস্টগুলি (Atom)