Powered By Blogger

বৃহস্পতিবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩

রুপান্তর

ষ্ট্যানলি কুনিজ কে

প্রস্তুতি পর্বের মধ্য থেকে
সকাল,দুপুর এবং বিকেলের
সবগুলো স্নিগ্ধ রঙ ডানায় মেখে
প্রজাপতি
(মথ নয়)
তার সাবলীল নড়াচড়া
তার বন্য বিনুনি বাগানে নান্দনিক ঘেরাটোপে
সে এখন পূনরাবির্ভাবে
অন্য এক পরিবর্তনের,
রুপান্তরের মাধ্যমে পরিণত
শুধুমাত্র একটি শব্দেই সীমাবদ্ধ নয়
বরঞ্চ আশ্বাসে পূর্ণ
কবিতার শ্বাস।

মূলঃষ্ট্যানলি এইচ.বারকান।

শনিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩

নান্দনিক শৈলী

আমি কোনো অশ্বথ মুখের দিকে তাকাবো না

জল ভারানত মেঘগুলো স্থির হয়ে আছে চোখের ওপর
দুপুরের তৈলাক্ত শরীর ঘষে মেজে স্নান সেরে শুদ্ধ হয়ে এসো
মুখের প্রচ্ছদ ভেঙে বেরিয়ে আসবে
প্রসাধনহীন অন্নপূর্ণা সাজ

দীর্ঘ উপবাসী শরীর জুড়াবে নান্দনিক শৈলীতায়

রবিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩

সভ্যতা

নমঃশুদ্রচারী পৃথিবীতে যখন কিছুই ছিল না গুহাবাসের কথা মনে পড়ে
বনে ও বাদাড়ে বেঁচে ছিলাম অনেক যুগ; গোধূলি ছাড়াই রাত্রি নামলে কখনো
সহনশীলতার যাঁতায় গুড়ো হয়ে যেত অবক্ষয়ী বিশৃঙ্খলা;দেয়ালে দেয়ালে
লাভার মতোন জ্বলে উঠত প্রিয়তমাষু অন্ধকারে যদিও জেনেছিলাম
দ্যোতনাবিহীন আলো শুধু প্রহেলিকারই জন্ম দিতে পারে।

শিকারী ছিলাম আমি।গাছের বল্কলে,পশুচর্মে লজ্জা নিবারন আর পূর্নিমার স্রোতে
ধিতাং,ধিতাং ছন্দোবদ্ধ নাচের প্রহরে ঘুম ভেঙে গেলে উচ্ছিষ্ট হাঁড়ের স্তুপে
ছুঁচোর কামড়ে ক্ষত-বিক্ষত ব্যাঙের আর্তনাদে দূরে সরে যায় সাপ
তারপর জলের ধীবর হয়ে ভেসে গেছি ঝঞ্ঝা বিক্ষুদ্ধ নদীর পূরাণের পথে
শষ্যমুখী কিষাণের সাথে মেঠো আলপথ ধরে মিশরীয় সভ্যতার
মমির মিহিন নিঃশ্বাসের গন্ধ মেখে রোমান,চৈনিক,গ্রীক,মেসোপটেমিয়া
মেসোমেরিকান সভ্যতার শেষে হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারোর কুমোরের চাকশিল্পে
ক্লান্তিহীন ভালোবাসায় অঞ্জলী পেতে দিলে ঘড়া ভরে জল ঢেলে দিত
দ্রাবিড় রমণী।

অথচ এখন একজনমের তৃষ্ণার্ত বুকের 'পরে করুণার অশ্রুবিন্দুও পড়ে না।



বুধবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩

টুকরো কাব্য

শালকীর জলে আজ কোনো ঢেউ নেই,____ এর অর্থ বোঝো ?
পৃথিবী খন্ডিত হলে তোমার কী এসে যায় ?
সূর্য্যমুখী দিনগুলো মিশে যাচ্ছে পয়ারের ছন্দে
দেহ বোঝে যৈবনিক সুখ,পোড়া মন বোঝে না আত্মজ প্রেম।

যুদ্ধ এবং কবিতা

মনে রেখ কেবলমাত্র আত্মাধিকার ক্ষুন্ন হলেই যুদ্ধের সাজ নেব
যদি যুদ্ধে যেতে হয় তবে কবিতাকে ছেড়ে দেব পয়ারের মাঠে
অকর্ষিত জমি থেকে তুলে নেবে অনুপম জীবনের ছন্দ যত
আজন্ম প্রেমিক কবি আমি তাই যুদ্ধের বিপক্ষে হিরণ্ময় হাতিয়ার আমি
এবং আমার কবিতা।

তাই বলে ভেব না শত্রুর নগ্ন বুকে বুলেটের আচঁড়ে কবিতা কিংবা
পিঠে বেয়নেট খুঁচে দিনবদলের পালাগান লিখতে অক্ষম এই আমি।

একজন প্রেমিককে যুদ্ধ এবং কবিতা এ দু'টোরই দীক্ষা নিতে হয়।

মঙ্গলবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩

প্রত্যাবর্তন

এ ফেরার কোনো অর্থ নেই,অনর্থ এ ফেরা শিরোনাম,পাদটীকাহীন।

প্রতিশ্রুতি ছিল ঠিকই;কেউই কথা রাখি নি আমরা
তামসিক হৃদয়ের আদিগন্ত খুঁড়ে জল নেবার গ্রহণকালে
ফুসফুস ভরে গিয়েছিল নাক্ষত্রিক মেঘে
চন্দ্রমুখী রাতে সমৃদ্ধ ভাষার কথকতা গুহাবাসেরও
অতীত মহাকালের গর্ভে।

জ্যোৎস্নার অনুনয়ে ঘুম ভেঙে গিয়েছিল বারংবার
তুমি রাখোনি কপালে হাত
বিহ্বল মুহূর্তে শুধু চেয়ে দেখেছিলে
সুনিবিড় স্তব্দতার ক্ষতে হুতাশন।

হৃদয় জ্বালিয়ে এই ফেরায় সাদর সম্ভাষন নেই কোনো।

শনিবার, ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩

উত্তাল শাহবাগ

শামসুর রাহমান,আপনি এসে দেখে যান,
আমরা কাঁদি না নরপশুদের ফাঁসী ছাড়া অন্য কিছুতে আমরা তৃপ্ত নই
হুমায়ূন আজাদ শাহবাগের জনতার ঢল দেখে কি এখনো
আপনার মনে হবে,'সবকিছু নষ্টদের অধিকারে?'
শহীদ জননী মাগো,তুমি দেখো,
তোমার ছেলেরা দ্রোহে কি উত্তাল?

কসাই মোল্লার কলিজার একটি টুকরো যদি হাতে আমার আসত
তবে যাবজ্জীবন,অনন্ত স্বর্গবাসে আমার আপত্তি নেই।

শুক্রবার, ৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩

পথ

সূর্য্যমুখী ঝরে যাবার বিকেল ফুরোবার আগেই দেখিয়ে দাও অন্তর্লোক
প্রতিশ্রুতি ছিল কিন্তু কেউ তাকাই নি অশ্বথ মুখের দিকে
বুকে জোছনার কিছু জল জমেছিল আর
বিরহের তীব্র দাহে গুমরে গুমরে কেঁদে উঠেছিল সন্তত হৃদয়

সময়ের নীরবতা ভেঙে সামনে এগুলে দ্বাদশীর পূর্ণ চাঁদে
ভেসে উঠবে পাথরকুচি পথ
দ্বিধাহীন ঘরপোড়া মানুষের বিহ্বল চোখের দৃষ্টি ফিরে আসে
আলো-অন্ধকারের ভেতর
পায়ের তলায় নাগরিক বাস্তবতা কুন্ডলি পাকিয়ে শুয়ে থাকে

তুমি আমাকে কিসের প্রতীক্ষায় দাঁড় করিয়েছ অখন্ড পথের মাঝখানে

বৃহস্পতিবার, ৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩

কবিতালোক

অনেকদিন বৃষ্টিতে ভিজে দেখো নি বুকের মধ্যে তাই এত কান্না জমে আছে
এসো,শিয়রে জ্বালিয়ে রাখো কষ্টের নীলাভ মোম তাতে যদি একজীবনের স্বপ্ন
ফের জেগে ওঠে অঙ্কুরিত চারাগাছের মতোন প্রাণধারনের গ্লানি?
কবন্ধ মাঠের সোনারঙা শস্যে যদি জীবন সমুজ্জ্বলিত হয়ে ওঠে মুহূর্ত প্রয়াণে
তবে বাসর না হলেও ক্ষতি নেই

হিরণ্ময় স্বপ্নের ভেতর যদি ব্যঞ্জনাময় ভালোবাসারা রক্তে উন্মাদনা তোলে
তবে প্রগাঢ় অন্ধকারের সুখে অনাঘ্রাতা হৃদয় কবিতালোকে উদ্ভাসিত কোরো

ঠাঁইহীন

কোথায় দাঁড়াব

ফিরে আসবো? সে পথ মিশে আছে দিকচিহ্নহীন নিঃসীম প্রান্তরে
সামনের পথ চেঁপে ধরেছে বুক ও গলা
কন্ঠনালী বেয়ে নেমে আসে রক্তের প্লাবন
ঘুরে যে দাঁড়াব নিরন্তর কাল ফণা তুলে কেবলি শাষায়।

সেই ভালো
না মাটিতে, না আকাশে থেমে আছি
ছায়াপথের অজস্র শূণ্যতার মাঝামাঝি।

সোমবার, ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩

জীবাশ্ম

মেঘ ভারানত আকাশে আদিম অগ্নিগোলকের আভা থেকে বিচ্ছুরিত
অগ্নিকুন্ডের জ্বলন্ত অঙ্গারের দীর্ঘায়িত অতীতের আলোতে জীবাশ্ম খুঁজে দেখ
মানুষের ইতিহাস পূণর্গঠনের প্রচেষ্টায় আফ্রিকার পশ্চাদভূমি অথবা
ভূ-তলের অতলে পরিপূরক তথ্য ডাইনোসরের ফসিলে সঞ্চিত

আমাকে মধ্য দুপুরের রৌদ্রনভস্তলে দাঁড় করিয়ে রেখেছ
সকালের জীবাশ্ম পেছনে ফেলে
'পথ নেই,পথ নেই' বলে সুবর্ণমুখী বিকেল
বুকের বাতাস আটকিয়ে দেয়

সময়,সময় করে আমার সময় মিশে গেল নাক্ষত্রিক শূণ্যতায়